পশ্চিমবঙ্গকে ‘বাংলা’ করার উদ্যোগ! হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির মধ্যে বিরোধ প্রকট
পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল নিয়ে মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে লোক দেখানো বিরোধিতা করে নাটক করছে রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব। এমনটাই অভিযোগ করতে শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি।
পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল নিয়ে মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে লোক দেখানো বিরোধিতা করে নাটক করছে রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব। এমনটাই অভিযোগ করতে শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির একাংশ। তাদের দাবি, আদর্শগতভাবে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ নাম বদলের বিরুদ্ধে। যা ২০১৬-র ২৯ অগাস্টই প্রকাশ পেয়েছিল।
প্রাক্তন বিজেপি নেতা কৃশানু মিত্রের অভিযোগ, পশ্চিমবাংলা'-র নাম পাল্টে 'বাংলা' করার সর্বসম্মত প্রস্তাবে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিজেপি-র বিধায়কদের অবস্থান ছিল নক্কারজনক। স্পিকারের কাছে লিখিত বিরোধিতা না করে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রসকে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাশ করাতে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন দিলীপ ঘোষ ও তার দুই বিধায়ক। আবার বাইরে মিডিয়ার কাছে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় লোক দেখানো বিরোধিতার নাটক করে সুবিধাবাদী রাজনীতির নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গ নাম বদলের বিপক্ষে যুক্তিও দেওয়া হয়েছে। আদর্শগতভাবে হিন্দুত্ববাদীরা 'পশ্চিমবাংলা' নাম বদলের বিরুদ্ধে। কেননা পশ্চিমবাংলা বা পশ্চিমবঙ্গ নাম মনে করিয়ে দেয় পূর্ব বাংলাও আছে। পশ্চিমবাংলা বা পশ্চিমবঙ্গ নাম মনে করায় ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ, বাংলা ভাগ। পশ্চিমবাংলা বা পশ্চিমবঙ্গ নাম মনে করায় অখন্ড ভারত এখনও স্বপ্ন। নাম বদলের এই সিদ্ধান্ত বাঙালিকে তার ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত বলেও অভিযোগ। বাকি সকল দলগুলোর সঙ্গে বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় অভিযুক্ত দিলীপ ঘোষরাও। কেননা তিনি ও তাঁর বিধায়করা বিধানসভার ভিতরে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ লিপিবদ্ধ করেননি।
২০১৬-র ২৯ অগাস্ট বিধানসভায় নাম বদলের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন বিজেপি বিধায়করা। সেই সময় প্রস্তাবের ওপর বক্তৃতা দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিতর্কেও জড়িয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বিধানসভা থেকেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই সময় বিজেপির তরফে নাম বদলের বিরুদ্ধে সই সংগ্রহেও নামা হয়েছিল। এক বিজেপি বিধায়ক বলেছিলেন, তারা কেন্দ্রকে বলবেন, যাতে রাজ্যের নাম বদল করা না হয়। আরএসএস-এর তরফেও এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরির চেষ্টা হয়েছিল সেই সময়।
তবে ২০১৬-র ২৯ অগাস্ট আর ২০১৮-র ২৬ জুলাই। প্রায় দুবছর সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। গতবারের মতো এবার বিধানসভায় সেরকম প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষদের। এমনটাই অভিযোগ করেছেন হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ।