‘ওঁর কাঁধ চওড়া, রাবণের কাঁধও চওড়া’, নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে দুরাচারী বললেন মমতা
‘উনি বলেন ওঁর কাঁধ চওড়া। রাবণের কাঁধও চওড়া।’ এহেন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে যুক্তিহীন অবাস্তব সন্ত্রাস চলছে।
কলকাতা, ১১ জানুয়ারি : নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রাবণ আখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কলকাতা শাখার সামনে নোট বাতিলের প্রতিবাদে সভামঞ্চ থেকে ফের নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, 'উনি বলেন ওঁর কাঁধ চওড়া। রাবণের কাঁধও চওড়া।' এহেন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে যুক্তিহীন অবাস্তব সন্ত্রাস চলছে।
মমতা বলেন, দেশের সরকারই এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই ভয় দেখানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে ভয় দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর অধীন। এটা স্বাধীন সংস্থা নয়। সিবিআইকে চিঠি দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি এ কথা।
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, দেশকে বিক্রি করে দিয়েছে একটা দল। সব মিথ্যে কথা বলছে। সর্বনাশা রাজনৈতিক দল দেশের সর্বনাশ করে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। হঠাৎ করে ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। চালু করলেন ২০০০ টাকা। এখন শুনছি তাও বাতিল করে দেওয়া হবে। মমতা বলেন, আগে তো মোদী বাতিল হন, তারপর দু'হাজার টাকার নোট না হয় বাতিল হবে।
মমতা প্রশ্ন তোলেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরত আনবেন বলেছিলেন। কিন্তু কোথায় গেল সেই টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি? কত টাকা ফেরত এসেছে? এক টাকাও ফেরত আসেনি। এক টাকাও ফেরত আনতে পারবেন না। বুকের পাটা আছে বলেই প্রতিবাদ করছি। তৃণমূলই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
তিনি সভা শুরুর প্রারম্ভ বলেন, আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানকে সম্মান করি। কিন্তু আজকে কেন আমাদের এখানে আসতে হল। ৫০ দিনের মধ্যে নোট দুর্ভোগের সমাধান করবেন বলেছিলেন। এখনও কি ৫০ দিন হয়নি? আসলে পেটিএমের ফেরিওয়ালা হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাই এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত। দেশকে বিকিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত।
এদিন চিটফান্ড নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ রাজ্যে সমস্ত চিটফান্ড সিপিএমের আমলে হয়েছিল। তখন কি চোখে ন্যাবা হয়েছিল। তৃণমূলের আমলে কোনও চিটফান্ড তৈরি হয়নি। ওঁদের কত নেতা আতিথেয়তা গ্রহণ করেছে। সিপিএমের কাছে অত টাকা এল কীভাবে? তা একবার ভেবে দেখবেন না?
এ প্রসঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবিকেও এক হাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি এই সব চিটফান্ডগুলিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। কেন রোজভ্যালি, সারদা, সাহারা এমপিএস প্রভৃতি সংস্থাকে ব্যবসা করতে দেওয়া হল? আর এখন মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। মনে রাখবেন, আমাদের আমলে কোনও চিটফান্ড তৈরি হয়নি। কী করেছে, সুদীপ, শুভেন্দু, মুকুল, ববি, শোভন-রা?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের সরকার এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে। এই সরকার সব পারে। এমনকী আমাকে বিমান দুর্ঘটনার মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।