বাড়তি কোনও সাহায্য নয়, প্রাপ্য বকেয়া মেটান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি মমতার
বাড়তি কোনও সাহায্য নয়, প্রাপ্য বকেয়া মেটান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বাসভবনে একান্ত বৈঠকে দাবি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা ও নয়াদিল্লি, ১০ এপ্রিল : বাড়তি কোনও সাহায্য নয়, প্রাপ্য বকেয়া মেটান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বাসভবনে একান্ত বৈঠকে দাবি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া রাজ্যের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বিভিন্ন দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী দিলেন বিবেচনার আশ্বাস।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক থেকে বেরিয়ে সংসদ ভবনে ঢোকার মুখে জানান, রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজ্যের সমস্যার কথা জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে। বিশেষভাবে জানিয়েছি, বাড়তি কোনও সাহায্য চাই না। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের যে পাওনা, সেই টাকা মেটান। প্রধানমন্ত্রী মমতার দাবি মনোযোগ দিয়ে শোনার পর বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের কাছ থেকে ১০ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা রাজ্যের পাওনা রয়েছে বলে মমতার দাবি। তিনি বলেন, মোটা ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ থকায় সমস্যায় রাজ্য। তার উপর বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি পাওনা দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কেন্দ্র যদি ওই টাকা মিটিয়ে দেয়, রাজ্যের বহু প্রকল্পের কাজ ফের চালু হতে পারে। এই সংক্রান্ত একটি তালিকা মুখ্যমন্ত্রী এরপরই তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তবে এই বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানান।
গত ৭ এপ্রিল থেকে মমতার দিল্লি সফরে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও রাজ্যের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কোনও কথার বলার ফুরসৎ পাননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মমতা-মোদী বৈঠক নির্ধারিত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী সেই সুযোগ পেয়ে গেলেন। সেইমতো আধঘণ্টার বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। রাজ্যের একধিক প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানালেন মমতা। একশো দিনের প্রকল্প থেকে শুরু করে, জঙ্গলমহলে উন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা জানান তিনি। বকেয়া নিয়েও কথা হয় দু'জনের।
কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক একেবারেই তলানিতে পৌঁছেছিল। বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইকে কেন্দ্র করে দুই নেতা-নেত্রীর সম্পর্কও তলানিতে ঠেকে। কিন্তু রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক যথেষ্ট হওয়া জরুরি ছিল। সেদিক দিয়ে এদিনের বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও এদিন দিল্লিতে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে বৈঠক সেরেই সংসদে যাবেন। সেখানে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা। এছাড়া লালকৃষ্ণ আদবানি, রাজনাথ সিং, পীযুষ গোয়েল-সহ একাধিক বিজেপি নেতার সঙ্গেও তিনি বৈঠক করতে পারেন। এদিনই বিকেলে অন্যান্য দলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে। তিনি দেখা করবেন দলের সাংসদদের সঙ্গেও।
এদিন সকাল সাড়ে ন'টায় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে উপস্থিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি একটি তালিকা তৈরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি কোন খাতে কেন্দ্র সরকার বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে বা বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে, তা তুলে দেন। সেইসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাম আমলের ঋণের দায়ে রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এই বিষয়ে তিনি ফের ঋণ মকুবের দাবি তোলেন।