কলকাতার উপর দিয়েও বয়ে যেতে পারে ‘তিতলি’! সাগরে হঠাৎ গতিমুখ পরিবর্তনের সম্ভাবনা
সাগরে ফুঁসছে 'তিতলি'। তা ক্রমশ শক্তিও বাড়িয়ে সমুদ্র বক্ষ দিয়ে হু-হু করে ধেয়ে আসছে। এতদিন 'তিতলি'র স্পষ্ট অভিমুখ ছিল ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে। কিন্তু উত্তর-পশ্চিম অভিমুখ থেকে তা ক্রমশ উত্তরমুখী হওয়ায় কলকাতার আকাশেও ঘোর অশনি সংকেত। পুজোর মুখে প্রমাদ গুণছে বাংলা। তবে কি এবার পণ্ড হবে উৎসব? আশঙ্কা কাটছে না কিছুতেই।

‘তিতলি’র অভমুখ বদলের সম্ভাবনা
পুজোর বাংলায় নতুন বিপদ বয়ে আনছে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি'। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে দুর্যোগের ঘনঘটা। কারণ পূর্বভাস বলছে, ‘তিতলি' ক্রমশই অভিমুখ বদল করতে শুরু করেছে। এতদিনের সংকেতে জানা যাচ্ছিল ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশের দিকেই অভিমুখ ‘তিতলি'র। কিন্তু বুধবার থেকে তা ক্রমশ অভমুখ বদল করে উত্তর দিকে ধেয়ে আসছে।

‘তিতলি’র হানায় বাংলায় দুর্যোগ-আতঙ্ক
‘তিতলি' ওড়িশার দিকে গেলে বাংলার বিপদ খানিক কাটবে এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এদিন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল আর নিরাপদ নয়। ‘তিতলি'র আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলেও। সেরকম হলে কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি'। ফলে এ রাজ্যের সতর্ক থাকা দরকার।

‘তিতলি’ আছড়ে পড়বে পারে বৃহস্পতিবার
বর্তমান অভিমুখ বজায় থাকলে ‘তিতলি' ওড়িশার গোপালপুর উপকূলে আছড়ে পড়বে। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই ওড়িশা প্রশাসন প্রস্তুত তিতলির মোকাবিলায়। উপকূল এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সাধারণ বাসিন্দাদের। মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফ। উপকূলরক্ষী বাহিনীকে যে কোনও বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

উত্তর দিকে সরলে বিপদ পশ্চিমবঙ্গের
‘তিতলি' আছড়ে পড়ার কথা ছিল ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। এখন খানিক উত্তরদিকে ঘরে যাওয়ায় অন্ধ্রপ্রদেশের বিপদ অনেকাংশে কমেছে। এখন যদি আরও উত্তর দিকে ঘুরে যায় ‘তিতলি', তবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলই হবে প্রধান টার্গেট। সেক্ষেত্রে পুজোর বাংলায় আয়লার আতঙ্ক গ্রাস করেছে বঙ্গবাসীর মনে।

তিতলি’র গতি ভাবাচ্ছে
বর্ষাবিদায়ে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ রেখা দেখা দেওয়ার পরই আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল ২০০ কিমি বেগে ধেয়ে আসবে ‘তিতলি'। তবে ‘তিতলি' ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে ঘূর্ণঝড়ের গতিবেগ হবে সর্বোচ্চ ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। ‘তিতলি'র ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়লে বাংলায় ৬০-৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে।

‘ফাইলিন’-‘হুদহুদ’ থেকে ‘আয়লা’ আতঙ্ক
২০১৩ সালে বর্ষা বিদায় নেওয়ার পর ঘূর্ণিঝড় ‘ফাইলিন' অসুর রূপে ধেয়ে এসেছিল পুজোর বাংলায়। তারপর ২০১৪ সালে পুজোর আগে হানা দিয়েছিল ‘হুদহুদ'। ‘ফাইলিন' ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ে। আর ‘হুদহুদ' হানা দেয় বিশাখাপত্তনমে। দুই ঝড়েরই আতাস পড়েছিল পুজোর বাংলায়। আর মাটি করে দিয়েছিল পুজোর আনন্দ। এখন ‘তিতলি' পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে হানা দিলে ফের আয়লার বীভৎসা ফিরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা কলকাতাবাসীর।

'তিতলি’-র বৃষ্টির বঙ্গের আকাশে
বঙ্গোপসাগরের ঘনীভূত ‘তিতলি' জেরে ১০ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বাংলায় দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম ও দুই মেদিনীপুরে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্রে ৬০-৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে। ফুলে উঠবে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।