সিঙ্গুর ইস্যু : ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ঢাল করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার সিপিএমের
নয়াদিল্লি, ২ সেপ্টেম্বর : সিঙ্গুর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার পরে প্রেস বিবৃতি দিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করল সিপিএম। বলা যায় ফের একবার ভুল স্বীকার করল সিপিএম। [সিঙ্গুরের রায়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বললেন]
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো কারখানা করার জন্য অধিগৃহীত ৯৯৭ একর জমি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে করা হয়নি বলে সেই জমি ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত দিতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। [সিঙ্গুর ইস্যুর টাইমলাইন একনজরে]
ইতিমধ্যে এই নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক সেরে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শুক্রবার থেকে সেই জমি ফেরত দিতে জরিপের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। [সিঙ্গুর নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের, আবেগে ভাসল টুইটার]
তার মাঝেই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ঢাল করে সিঙ্গুর নিয়ে নিজেদের ব্যর্থতার দায় ফের একবার স্বীকার করে নিল সিপিএম। এমন ঘটনা কিছুটা নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে। ঠিক কি বলা হয়েছে সিপিএমের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একনজরে জেনে নেওয়া যাক। [সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ অবৈধ, ১২ সপ্তাহে ফেরত দিতে হবে জমি, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের]
এই প্রকল্পের মাধ্যমে তদানীন্তম বাম সরকার শিল্প ও কর্মসংস্থানের সুযোগ রাজ্যে তৈরি করতে চেয়েছিল। তবে তা করতে গেলে ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের আওতায় থেকেই কতে হতো। কারণ সেটাই আইনি উপায় ছিল। তবে সেই আইনে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষিত হয়নি।
এর আগে সিপিএমের তরফে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির পর্যবেক্ষণের বিষয়টি সামনে এসেছিল। ২০১১ সালে হারের পরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল, কীভাবে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভুলের মাসুল গুনতে হয়েছে দলকে তা স্পষ্ট উল্লেখ ছিল রিপোর্টে।
সিপিএমের এই নয়া প্রেস বিবৃতিতে তৎকালীন বঙ্গ সিপিএম নেতাদেরকে খানিকটা খোঁচাই দেওয়া হয়েছে বলে মনে কার হচ্ছে। কারণ তদানীন্তন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জোর করে টাটাকে জমি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যে পট-পরিবর্তনের পরে তা নিয়ে বহুবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে পর্যালোচনাও হয়েছে।
এবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে জমি ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গ আসায় সিপিএমের পক্ষ্য়ে ভুল স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া আর কোনও গতিই নেই বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। শিল্পায়নের বিষয়ে আর একটু সতর্ক হয়ে পথ এগোলে বাম সরকারের এভাবে জামানত জব্দ হতো না বলেই মনে করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আপাতত তাই ভুল স্বীকার করেই দায় সারল সিপিএম।