তৃণমূলকে পদ ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব, বিজেপিকে ‘শিক্ষা’ দিতে স্বার্থত্যাগে পিছপা নয় কংগ্রেস
মোদী-শিবিরকে ধাক্কা দিতে রণকৌশল তৈরি করে ফেলেছে কংগ্রেস। সামনে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে বিজেপি শিবিরকে আরও একটা মোক্ষম আঘাত দিতে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
মোদী-শিবিরকে ধাক্কা দিতে রণকৌশল তৈরি করে ফেলেছে কংগ্রেস। সামনে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন। সেই নির্বাচনের আগে বিজেপি শিবিরকে আরও একটা মোক্ষম আঘাত দিতে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। সেই কারণে তিনি রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদটি তৃণমূল কংগ্রেসকে ছেড়ে দিতেও রাজি।
বর্তমানে কংগ্রেসের ৫১ জন সাংসদ রয়েছে রাজ্যসভায়। সেই আঙ্গিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে এই নির্বাচনে কংগ্রেসই বিজেপির মনোনীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াইের মূল দাবিদার। কিন্তু সেই দাবি থেকে সরে এসে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জোটের স্বার্থে এই পদে লড়ুক তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন থেকেই বিজেপি বিরোধী জোটের পাকাপাকি পথ চলা শুরু হোক, এমনটাই চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি।
আগামী ১ জুলাই অসবর নিচ্ছেন রাজ্যসভার বর্তমান ডেপুটি চেয়ারম্যান তথা কেরলের কংগ্রেস সাংসদ পি জে ক্যুরিয়ন। এরপর ১৬ বা ২৩ জুলাই থেকে সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হবে। নিয়ম অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে ১৬ বা ২৩ জুনের মধ্যে ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে নিতে হবে।
সেই লক্ষ্যেই বিজেপি ও বিরোধীদলগুলি অঙ্ক কষতে শুরু করেছে। বিজেপির হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যা নেই। বিজেপির সদস্য সংখ্যা ৬৯ জন। শরিকদের অবস্থান অনেকেরেই টলমল। এমতাবস্থায় বিরোধীরা যদি এক করতে পারে সমস্ত দলকে, তাহলে ডেপুটি চেয়ারম্যান হবেন বিরোধীদেরই কেউ। কংগ্রেস চাইছে এই নির্বাচনে প্রার্থী দিক তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী পক্ষের হয়ে তৃণমূল লড়াই করুক। তাহলে বিজেপির হার নিশ্চিত। কেননা, এখনও যারা কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রেখে চলছে, তারা তৃণমূলকে ভোট দিতে পিছপা হবে না। তৃণমূলের সঙ্গে ওড়িশার বিজেডি, তেলেঙ্গানার টিআরএস, অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি-র সম্পর্ক ভালো। তাদের সমর্থনও পাবে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৫১। তৃণমূলের ১৩। তবু তাঁরা তৃণমূলকে সমর্থন দিতে চাইছে বৃহত্তর স্বার্থে। সামনে লোকসভা নির্বাচন, তার আগে বিরোধী জোটকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তার জন্য কংগ্রেস কর্ণাটকে যে অবস্থান নিয়েছে, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচনে তেমনই অবস্থান নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ আহমেদ প্যাটেল মারফত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন রাহুল গান্ধী।
[আরও পড়ুন: মমতাকে গুরুদায়িত্ব! মোদী-বিরোধী ভোট এক বাক্সে আনতে পরিকল্পনা তৈরি রাহুলের]
এই নির্বাচনে বিজেডির নবীন পট্টনায়ক, টিআরএসের কে চন্দ্রশেখর রাও কিংবা টিডিপি-র চন্দ্রবাবু নাইডুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলকে সমর্থন করলে তাদের জয় কেউ আটকাতে পারবে না। কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি তো সমর্থন করবেই। শুধু সিপিএম তৃণমূল প্রার্থী হলে না-ও ভোট দিতে পারে। কিন্তু তা বড় ফ্যাক্টর হবে না। আর এই নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে পারলে লোকসভার আগে আরও একটা মোক্ষম ধাক্কা দেওয়া যাবে।