হাতের মুঠোয় এখন ঘাসফুল, সূর্য-বিমান-সুজনরা এবার কী করবেন
এতদিন বাম-কংগ্রেসের একযোগে বিধানসভা বয়কটের ছবিই দেখা গিয়েছে। এবার অন্যচিত্র দেখল বিধানসভা। বামেরা একা হয়ে গেল। মিলে গেল কংগ্রেস-তৃণমূল।
বদলে গেল সমীকরণ। এবার বিধানসভাতেও ভেঙে গেল বাম-কংগ্রেস ঐক্য। বামসঙ্গ ছেড়ে কংগ্রেস সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। পাহাড় ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকেই সমর্থন করলেন কংগ্রেস বিধায়করা। শুধু তাই নয়, বামফ্রন্ট বিধায়করা বিধানসভা অধিবেশন ওয়াকআউট করলেও, কংগ্রেস কিন্তু এদিন তাঁদের সঙ্গী হল না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকেই কেমন বদলে গেছে রাজ্য-রাজনীতির চালচিত্রটা!
মঙ্গলবার বিধানসভায় পাহাড় ইস্যুতে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'পাহাড়ে বাংলার অবিচ্ছেদ্দ অংশ। পাহাড়কে কিছুতেই আলাদা করতে দেব না। এ ব্যাপারে তাঁর সরকার দৃঢ় অবস্থান নেবে। তা বলে পাহাড় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা থেমে থাকবে না। গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছেড়ে এলেই আলোচনায় প্রস্তুত রাজ্য। রাজ্য সরকার চায় পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত দলের কাছেই আহ্বান জানান, কোনও রাজনীতি নয়, পাহাড়ের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই এগিয়ে আসুন। আলোচনার মাধ্যমেই পাহাড় সমস্যার সমাধান হবে। আলোচনার দরজা সবার জন্যই খোলা। শুধু একটাই শর্ত গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে আসতে হবে। এছাড়া যা চাইবেন তাই পাবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিকে সমর্থন করে। কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব সমর্থনযোগ্য। সবার আগে দরকার পাহাড়ে শান্তি ফেরানো। সেখানে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। পাহাড় বাংলার, বাংলাতেই পাহাড় থাকবে। সেই পাহাড়কে কোনওভাবেই বাংলা ছাড়া করা যাবে না। আমরা কখনও বঙ্গভঙ্গের পক্ষে নয়। পাহাড়ে অশান্তির পিছনে কার দোষ, কার অন্যায় সে বিচার পরে। আগে শান্তি ফিরুক পাহাড়ে। আর পাহাড়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে সমাধানের একমাত্র পথ হল আলোচনা। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে তাই কোনও রাজনীতি না করেই সবার ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত।
কংগ্রেসের অন্যান্য বিধয়করাও সহমত পোষণ করেন শঙ্করবাবুর কথায়। প্রয়োজনে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেও পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক বলে দাবি জানায় কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের এই দাবির সঙ্গে এদিন ঐক্যমত্য হননি সিপিএম তথা বাম বিধায়করা। অশোক ভট্টাচার্য পাহাড় সমস্যার জন্য অভিযোগের আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই।
তিনি বলেন, পাহাড় সমস্যা তৈরি হয়েছে পাহাড়ে বাংলা ভাষা নিয়ে তদ্বির করেই। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে বাংলাভাষা বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়ে পাহাড়ের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। তাই পাহাড় জ্বলছে। পাহাড়ে থেকে তিনি সেই যে চলে এলেন আর যেতে পারছেন না। পাহাড় অচল হয়ে রয়েছে। তারপর প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়ে পাহাড়কে আরও অশান্ত করে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীই। পাহাড়ে পুলিশ পাঠিয়ে ঠান্ডা করতে চেয়েছিলেন, এখন না পেরেই তিনি আলোচনার রাস্তায় যেতে চাইছেন।
সিপিএম বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার ইঙ্গিত দেন তাঁর বক্তব্যে। বাম বিধায়করাও তাঁকে অনুসরণ করেন। এরপরই একযোগে বিধানসভা ওয়াকআউট করেন বাম বিধায়করা।
বামফ্রন্ট
ভেবেছিল
কংগ্রেসও
তাঁদের
দিকে
সমর্থনের
হাত
বাড়াবে।
কিন্তু
কংগ্রেস
অবস্থান
বদল
করে
শাসকদলের
পাশে
দাঁড়ায়।
রাজনৈতিক
মহলের
একাংশ
মনে
করছে,
শুধু
পাহাড়
ইস্যুতেই
নয়,
রাজনৈতিকভাবেই
অবস্থান
বদলে
তৃণমূলের
পাশে
দাঁড়াতে
শুরু
করেছে
কংগ্রেস।
কেন্দ্রে
দুই
দলের
সখ্যতা
তৈরি
হয়েছে
আগেই।
সোনিয়া
গান্ধী
ও
রাহুল
গান্ধীর
সঙ্গে
মমতা্
বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অন্য
সমীকরণ
ছিলই,
তারপর
রাষ্ট্রপতি