আদিবাসীদের ভিটে-মাটি রক্ষায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ মমতার, দৃষ্টান্ত গোটা দেশের কাছে
আদিবাসী উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর রোধে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিলেন।
আদিবাসী উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর রোধে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিলেন। জানালেন আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করা যাবে না। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা গোটা দেশের কাছে দৃষ্টান্ত হবে। এবং গোটা দেশকেই পথ দেখাবে।
শুধু বাংলায় নয়, বিভিন্ন রাজ্যেই আদিবাসীরা ভিটেমাটি ছাড়া হচ্ছেন। তাঁদের ছেড়ে যাওয়া জমিতে শিল্পায়ন হচ্ছে। বহুক্ষেত্রেই শিল্পায়নের নামে আদিবাসীদের উৎখাত করা হচ্ছে। ফলে আদিবাসীরা যাযাবর জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছেন। সেই প্রবণতা রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিলেন।
তিনি বিধানসভায় ঘোষণা করলেন, কোনও অজুহাতেই আদিবাসীদের ভিটেমাটি ছাড়া করা যাবে না। তাঁদের বাস্তু-জমি হস্তান্তর যোগ্য নয়। আদিবাসীদের জমি নিয়ে শিল্পায়নের চিন্তা ভুলে যান। আর কোনওভাবেই তাঁদের জমি হস্তান্তর করা যাবে না বলে আইন আনছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আদিবাসীদের একটা বড় অংশ নিত্য ভিটে ছাড়া হওয়ার অভিশাপ থেকে রক্ষা পেলেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধানসভায় বলেন, বাংলা ছাড়া আদিবাসীদের জন্য দেশের আর কোনও সরকার সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেয়নি। কেউই নজর দেয়নি আদিবাসীদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে। তিনিই আদিবাসীদের জন্য ভেবেছেন, তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখনও সেই চেষ্টাই করে চলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, তাঁর সরকারের আমলেই পশ্চিমবঙ্গে আদিবাসী শিক্ষার হার ঊর্ধমুখী হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে সাঁওতালি ভাষায় প্রশ্নপত্র হচ্ছে। এমনকী অলচিকি ভাষায় রাজ্য সরকারের মুখপত্রও ছাপা হচ্ছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের জমি হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি ১৯৭৯ সালে সুন্দরবন অঞ্চলের মরিচঝাঁপি দ্বীপে গণহত্যায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধ গড়ার কথাও ঘোষণা করেন।
[আরও পড়ুন: দিলীপের ইলিশ-কটাক্ষের জবাবে গরু উপহারের খোঁচা, মজার ছলে বিধানসভা মাত মমতার ]
আদিবাসীদের জন্য উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা নিয়েও জঙ্গলমহলের কিয়দংশ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এদিন তা সত্ত্বেও আদিবাসীদের জন্য ঐতিহাসিক ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, তিনি উন্নয়নের দিশারি, উন্নয়নের জন্য, মানুষের জন্য তিনি সুচিন্তিত পরিকল্পনার দ্বারা উন্নয়ন করে যাবেন।