হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের সঙ্গে বামপন্থী ছাত্রদের মারপিট, রণক্ষেত্র যাদবপুর এইট বি
মূর্তিভাঙা নিয়ে অব্য়াহত রাজনীতি। আর তার এবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল যাদবপুরের এইট বি এলাকা।
মূর্তিভাঙা নিয়ে অব্য়াহত রাজনীতি। আর তার এবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল যাদবপুরের এইট বি এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এইট বি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া অটো স্ট্যান্ডে মারপিট বাঁধে হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা কমিটি এবং বাম মনোভাবাপন্ন ছাত্রদের মধ্যে। এই ঘটনায় হিংসায় উস্কানি এবং মারদাঙ্গা করার অভিযোগে হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা কমিটির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানা।
জানা গিয়েছে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্য়ায় যাদবপুরের এইট বি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন অটো স্ট্যান্ডে সভার কর্মসূচি নিয়েছিল বাঙালি হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চ। এই সভাকে ঘিরে বিকেল থেকেই যাদবপুর এইট বি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশে-পুলিশে ছয়লাপ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ এই সভামঞ্চ থেকে শ্য়ামাপ্রসাদের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদের নামে নানা উস্কানিমূলক কথা-বার্তা বলা হয়। এর প্রতিবাদে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রী যাদবপুর এইট বি বাসস্ট্যান্ডে বিকেল থেকেই জমায়েত শুরু করে। এদের হাতে ছিল আরএসএস এবং বিজেপি বিরোধী বেশকিছু প্ল্যাকার্ড এবং নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল।
অভিযোগ, হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের সভা থেকে লেনিনের মূর্তি ভাঙার হুমকি দেওয়া হয়। যাদবপুর অটো স্ট্যান্ডেই লেনিনের একটি মূর্তি রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এরপরই জমায়েত হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা পুলিশের সামনেই হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের সভায় হামলা চালায়। তাদের সদস্যদের ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকী, তছনছ করা হয় সভামঞ্চ। বাঙালি হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের সদস্যদের মাথায় এবং শরীরে লাঠি দিয়ে আঘাতও করা হয় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনার সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করেনি। এমনকী, তাঁরা ক্ষিপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে যান। কিন্তু পুলিশের এই প্রতিরোধ ক্ষিপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে খড়কুঠোর মতো উড়ে যায়।
পরে পুলিশ হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে। মারপিটে জড়ানো সব ছাত্র-ছাত্রীই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বলে জানা গিয়েছে। এঁদের অভিযোগ, যাদবপুর অটো স্ট্যান্ডে লেনিনের মূর্তি ভাঙা হবে- এই মর্মে তাঁদের কাছে তথ্য ছিল। সেই কারণে তাঁরা এদিন বিকেল থেকেই যাদবপুর অটোস্ট্য়ান্ডে শান্তিপূর্ণ জমায়েত করেছিলেন। কিন্তু, সন্ধ্য়ার সময় বাংলা হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের সদস্যরা এসে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে হিংসায় ইন্ধন জোগান বলে অভিযোগ এইসব ছাত্র-ছাত্রীদের।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, হিন্দু অস্তিত্ব রক্ষা মঞ্চের নাম তিনি কখনও শোনেননি। তবে, হিন্দু নাম থাকলেই হামলা করতে হবে এটা যদি লাল-পার্টি ভেবে থাকে তাহলে যেটুকু অস্তিত্ব দেশে রয়েছে সেটাও থাকবে না বলে হুমকি দেন তিনি। লাল-পার্টি কি দেশ জুড়ে ১০০ কোটি হিন্দুর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করছে? এমন প্রশ্নও করেছেন বিজেপি-র রাজ্যসভাপতি। মূর্তি ভাঙার ঘটনার জন্য সিপিএম-এর অপশাসনকেই দায়ী করেছেন দিলীপ।
এদিকে, ঘটনার পরই যাদবপুরে যান সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ। তিনি বলেন যে ভাবে হিংসায় উস্কানি দেওয়া হয়েছে এবং লেনিনের মূর্তি ভাঙার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিবাদ হবে। আর সামনে দাঁড়িয়ে কেউ লেনিনের মূর্তি ভাঙার হুমকি দেবে, আর সেটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা হবে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। তবে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কোনও কাজ না করাই ভাল বলে মন্তব্য করেন তিনি।