নবান্ন অভিযান রুখতে কলকাতা যেন দূর্গ, সফল হবে কি বামেদের কর্মসূর্চি
২২টি বাম দলের ডাকে সোমবার নবান্ন অভিযান। রাজ্যজুড়ে চলা রাজনৈতিক সন্ত্রাস সহ একাধিক ইস্যুতে বামেরা বহুদিন আগেই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও বামেদের মিছিল রুখতে পুরো পুলিশ বাহিনীকেই ময়দানে নামিয়েছেন এমন উদাহরণ সহজে খেয়াল পড়ে না। কিন্তু, সোমবার বামেদের নবান্ন অভিযানকে যেভাবে পুলিশি নিরাপত্তার বূহ্যে কলকাতা এবং হাওড়ার একাংশকে মুড়ে ফেলা হয়েছে তাকে নজিরবিহীন বলাই চলে।
বামেরা যেমন নবান্ন অভিযানের প্রস্তুতি নিতে তলে তলে সভা-সমিতি, গ্রামে-গঞ্জে ছোটখাটো পথসভার আয়োজন করতে কসুর করেনি, তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার নিয়ন্ত্রণে থাকা পুলিশ বাহিনীকে ২১ মে থেকেই ময়দানে নামিয়ে দিয়েছেন। অবশ্য এর আগেই কলকাতা এবং হাওড়া পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনার মাধ্যমে বামেদের নবান্ন অভিযানের মোকাবিলার ব্লু-প্রিন্টটা সেরে ফেলা হয়েছিল। যার জন্য রবিবার বিকেলের মধ্যেই প্রায় হাজার চারেক পুলিশকর্মীকে মোতায়েনের কাজ শুরু হয়।
হাওড়ার দিকেই থাকছে ৯০০ জন পুলিশকর্মী। এরসঙ্গে বাইরের জেলা থেকে আরও ১২০০ পুলিশকর্মী তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আর প্রায় ২,০০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন হয়েছে কলকাতার বিভিন্ন অংশে এবং বিদ্যাসাগর সেতুর মুখে।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে গঙ্গার দুই পারে চল্লিশটি স্থানে ব্যারিকেড করা হয়েছে। কলকাতার দিক থেকে মিছিল যাতে নবান্নের ধারেকাছে পৌঁছতে না পারে তারজন্য ১০টি জায়গায় বসানো হয়েছে ইস্পাতের অস্থায়ী দেওয়াল। কলকাতা থেকে যে মিছিলগুলি নবান্নের দিকে যাবে তার আগে এবং পিছনে থাকবে পুলিশবাহিনী। স্থলপথের সঙ্গে সঙ্গে জলপথেও নজরদারি রাখা হচ্ছে। এরজন্য গঙ্গায় বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিছিলে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা যে বরদাস্ত করা হবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতীম সরকার।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে কলকাতা থেকে নবান্ন যাওয়ার ১২টি রাস্তা আছে। ওই রাস্তাগুলি সহ মোট ২৮টি জায়গায় পদস্থ অফিসারদের নেতৃত্বে পিকেট থাকছে। তিনটি জায়গাকে জমায়েত স্থল হিসাবে ধরা হয়েছে। এছাড়াও কলকাতায় দশটি জায়গাকে অতি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত করে অস্থায়ী ইস্পাতের দেওয়াল, ব্যারিকেড, লাঠি এবং ঢালধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একাধিক জায়গায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।