পঞ্চায়েত নির্বাচন ফের অনিশ্চিত, চূড়ান্ত দিন স্থির করবেন প্রধান বিচারপতি
আইনি জট কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না পঞ্চায়েত নির্বাচনকে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলে দিল নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে।
পঞ্চায়েত ভোট ফের অনিশ্চিত হয়ে গেল। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের চূড়ান্ত দিন স্থির করবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। কমিশনের ঘোষিত ১৪ মে দিনটিকে চূড়ান্ত দিন বলে মনে করছে না আদালত। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ১৪ মে ভোটের দিনকে কার্যত স্থগিত করে দেন।
[আরও পড়ুন:আইনি জট কাটছেই না পঞ্চায়েত নির্বাচনে, কমিশনের বিজ্ঞপ্তি-প্রশ্নে নজর আদালতের]
পিডিএসের করা মামলায় হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় ১৪ মে প্রস্তাবিত দিন হতে পারে। চূড়ান্ত দিন নয়। বাহিনী-বিতর্ক নিয়ে ৪ মে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পর চূড়ান্ত দিন স্থির হবে। তা সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট। পিডিএস এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে ব্যাখ্যা করেন। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পিডিএস-সহ বিরোধীরা চেয়েছিল নির্বাচন বন্ধ করতে। তা পারেনি। কোর্টও ১৪ মে ভোট স্থগিত করেনি। প্রস্তাবিত দিন হিসেবেই রেখেছে হাইকোর্ট।
এদিন হাইকোর্টের রায়ের পর আইনি জট কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না পঞ্চায়েত নির্বাচনকে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলে দিল নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় সেই পরিপ্রেক্ষিতেই বলেন, আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারেন না। আদালতকে নজরে রাখতেই হবে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠেছে, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী কি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে? হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে না জানিয়ে কী করে দিন ঘোষণা করা হল? তারপর কমিশন পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি জারি করল না। মনোনয়নের দিন বৃদ্ধি করা হল প্রথমে, তারপর ভোটের নির্ঘণ্ট জারি করা হল। এটা পঞ্চায়েত আইন লঙ্ঘণ করছে বলে অভিযোগ।
এদিন আদালত পরিষ্কার জানায়, সবপক্ষ সন্তুষ্ট হলেও নির্বাচন কমিশন বিধি অনুযায়ী কাজ করছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতেই পারে। কমিশন যদি বিধি অনুযায়ী কাজ না করে, তা দেখে চোখ বুজে থাকতে পারে না আদালত। এদিন কংগ্রেসের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই কথা জানান বিচারপতি।
তারপর কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায় পঞ্চায়েত ভোটের চূড়ান্ত দিন ১৪ মে নয়। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেই চূড়ান্ত দিনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১৪ মে দিনটিকে প্রস্তাবিত দিন করে ভোট প্রক্রিয়া চলবে। ডিভিশন বেঞ্চের বাহিনী-সংক্রান্ত রায়ের পর এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
এখন প্রশ্ন আগে তিন দফায় যে বাহিনী নিয়ে ভোট করতে চলেছিল রাজ্য, এবার এক দফায় সেই একইসংখ্যক বাহিনী নিয়ে ভোট করতে চাইছে। এই অবস্থায় ভোটের নিরাপত্তাই প্রশ্নের মুখে। সেই প্রশ্নেই পঞ্চায়েত ভোট কার্যত অনিশ্চিতের পথে।