‘কেয়ারটেকার’কে মাথা থেঁতলে খুন, সোনাগাছি থেকে বেপাত্তা দুই কিশোরী, তদন্তে হোমিসাইড শাখা
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসের ‘কেয়ারটেকার'কে মাথা থেঁতলে খুনের ঘটনায় ক্রমশই রহস্য ঘণীভূত হচ্ছে। অভিযুক্ত দুই কিশোরীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বড়তলা থানা।
কলকাতা, ২ নভেম্বর : স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসের 'কেয়ারটেকার'কে মাথা থেঁতলে খুনের ঘটনায় ক্রমশই রহস্য ঘণীভূত হচ্ছে। ওই কেয়ারটেকারের তত্ত্বাবধানে থাকা দুই কিশোরীই ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা হয়ে যায়৷ এই খুনের ঘটনায় অভিযোগ, ওই কিশোরীদের ঘরে আটকে রেখে পাহারায় ছিলেন নিহত প্রৌঢ়া৷ পালাতে বাধা পেয়েই তারা কবিতা রাই নামে ওই প্রৌঢ়াকে খুন করে বলে প্রাথমিক তদন্ত মনে করছে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই কিশোরীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বড়তলা থানা।
বুধবার দুপুরে সোনাগাছির নীলমণি মিত্র লেনের তিনতলার একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয় কবিতা রাই নামে ওই কেয়ারটেকারের দেহ৷ বিছানার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল তাঁর দেহ৷ প্রথমে গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে খুন করা হয়। পরে মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে ভারী কোনও বস্তু দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্বারের দাবি, সোমবার দুই কিশোরীকে উদ্ধার করে কবিতা রাইয়ের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল৷ তাদের বাড়ি পাঠানোর উদ্দেশেই আটকে রাখা হয়। আজই আদালতে তোলার কথা ছিল দুই কিশোরীকে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই কিশোরীকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল৷ তারপর তাদের উদ্ধার করে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে রাখা হয়েছিল।
দুই কিশোরীর পালিয়ে যাওয়া ও কবিতা রাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন সামনে এসেছে৷ পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, দুই কিশোরীই পালিয়ে যাওয়ার জন্যই কবিতা রাইকে খুন করেছে কি না৷ এমনও হতে পারে দুই কিশোরী গোপন আস্তানায় আছে, এটা জানতে পেরে অন্য কেউ তাদের সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনতলার যে ঘরে তারা দুই কিশোরীকে আটকে রাখা হয়েছিল বা যে ঘরটি থেকে কবিতা রাইয়ের মৃতদের উদ্ধার হয়, ওই ঘর পর্যন্ত সব তালাই খোলা ছিল।
কোনও তালাই ভাঙা হয়নি। হয় দরজাগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে, কিংবা উপর থেকে চাবি ফেলে দেওয়ার পরই তালা খুলে কেউ ঘরে ঢুকেছে। সেক্ষেত্রে পরিচিত কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলেই সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে। খুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই যৌনকর্মীদের মধ্যে নানা ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী৷
কী কারণে এই খুন, সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ খোঁজ চলছে ওই দুই কিশোরীর৷ তদন্তকারীরা মনে করছেন একমাত্র ওই দুই কিশোরীকে পাওয়া গেলেই অনেক রহস্য ঘুচে যাবে। ওই দুই কিশোরাই চাবি কেড়ে নিয়ে কবিতা রাইকে খুন করেছে, না কি অন্য কাউকে খুন করতে মদত দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্ত শুরু করেছে হোমিসাইড শাখার পুলিশ।