তপন দত্ত খুনের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জারি সিবিআই তদন্ত, কোর্টের নির্দেশে খুশি টিম আমরা আক্রান্ত
তপন দত্ত খুনের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জারি সিবিআই তদন্ত, কোর্টের নির্দেশে খুশি টিম আমরা আক্রান্ত
তপন দত্ত খুনের মামলায় অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস হয়েও পায়নি স্বস্তি। বহাল থেকেছচে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ। অভিযুক্তরা বেকসুর খালাস হলেও এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তপন দত্তের পরিবার। সেই মামলায় হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, সিবিআই তদন্ত হবে এই রায় বহাল রাখল। আর এ নিয়েই খুশি তপন দত্তের স্ত্রী ও তাঁর পরিবার সঙ্গে খুশি অম্বিকেশ মহাপাত্র ও তাঁর 'আমরা আক্রান্ত সংগঠন'
আমরা আক্রান্তের পক্ষে অম্বিকেশ মহাপাত্র বলেন, "দীর্ঘ ১১ বছর প্রতিক্ষার পর ৯ই জুন ২০২২ কলকাতা হাইকোর্ট তপন দত্ত খুনের কিনারা করতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের অন্যতম ষষ্ঠী গায়েন এবং রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে। ডিভিশন বেঞ্চ ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২২, সিবিআই বহাল রাখেন। এতেই আমরা খুশি"
ঘটনা কী ছিল?
বালি থানার জগাছা এলাকার তৃণমূল কর্মী তপন দত্ত এলাকার পরিবেশ রক্ষায় এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে জলাভূমি বোজানোর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন, বাম সরকারের আমলে। সেই সময়ে তপন দত্তের স্ত্রী ছিলেন তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যা। ২০১১ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সময়কালে তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশ যায়; আর আন্দোলন করা যাবে না। কারণ আমরা এবার সরকারে আসছি। তপন দত্ত মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। এই অবস্থায় ৬ই মে সন্ধ্যাবেলা বালি থানায় গিয়ে নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে ফেরার পথে রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে খুন হন।
তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় এফ আই আর
স্ত্রী প্রতিমা দত্ত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় এফ আই আর করেন। রাজ্যজুড়ে সকল অংশের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হন। দৃষ্টি ঘোরাতে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের তদন্তভার সরিয়ে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন। হাওড়া কোর্টে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সিআইডি'র প্রাথমিক চার্জশিটে মন্ত্রী তথা জেলার তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায়ের নাম উঠে আসে। সিআইডি তাড়াতাড়ি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়ে মন্ত্রীর নাম সরিয়ে দেয়। তখনই বোঝা গেছিল বিচার-ব্যবস্থা কোন দিকে যেতে চলেছে। প্রতিমা দত্ত সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
আশঙ্কা
আশঙ্কাই সত্যি হল। চার বছর হাওড়া কোর্টে বিচারের নামে প্রহসন শেষে চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হল। সকল অভিযুক্ত বেকসুর খালাশ! রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি হতাশার সঙ্গে বলেন- জলজ্যান্ত তপন দত্ত খুন হয়েছেন। কেউ না কেউ খুন করেছে। কিন্তু একজনকেও শাস্তি দেওয়া গেল না! কারণ তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা সহযোগিতা করেনি!
এবার খুনিরা রাজ্য সরকারের সহায়তায় সুপ্রিম কোর্টে যাবে। বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা কাজে লাগিয়ে যতদিন সম্ভব খুনি, সমাজবিরোধীদের ব্যবহার করে, ভোটলুট করে, প্রশাসনে থেকে সম্পদের পাহাড় তৈরি করা যায়, সে চেষ্টা চলছে চলবে। সিবিআই তদন্ত শুরু করে কবে শেষ করবে? খুনের কিনারা করতে পারবে কীনা? খুনিরা সাজা পাবে কীনা? না সিআইডি তদন্তের অবস্থাই হবে? তা ভবিষ্যতই বলবে। অপেক্ষা করে দেখা ছাড়া উপায় কি?
লড়াই চলবে
তবে আইনি লড়াইয়ে আর একটি ধাপে জয় এল। এরফলে প্রতিমা দত্ত, তাঁর পরিবারের সদস্য সহ 'আক্রান্ত আমরা' মঞ্চের সকলেই স্বস্তিবোধ করছি, খুশি। কিন্তু মার্টিন লুথার কিংয়ের সেই কালজয়ী প্রবচন ভুলি কি করে? "JUSTICE DELAYED JUSTICE DENIED"
পার্থদের নামে সিবিআইয়ের চার্জশিটে আইনি জটিলতার শঙ্কা! মিলল না রাজ্যের অনুমতি