দাঁড়িপাল্লায় বাজেট, কতটা লাভবান মধ্যবিত্ত, কী বলছেন ইনভেস্টমেন্ট জার্নালিস্ট অমিতাভ গুহ সরকার
ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা মুখোমুখি হয়েছিল ইনভেস্ট জার্নালিস্ট অমিতাভ গুহ সরকারের। অমিতাভ-র মতে, সাধারণ মানুষ বাজেটে সবচেয়ে বেশি যাতে চোখ রাখে সেটি হল আয়কর।
এমন বাজেট দেশবাসী কবে দেখেছেন? বলা খুবই শক্ত। বাজেটে সাধারণ মানুষেরই কথা বলা হচ্ছে এবং তাঁদের কল্য়াণের কথাই ভাবা হয়েছে কিন্তু মধ্যবিত্তরা বলছেন তাঁদের প্রাপ্তির ঘর শূন্য! কেন এমন অবস্থা? যেখানে বাজেটে সাধারণ মানুষের নিত্য সমস্যাকেই বড় করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শুধু নয় শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সুরক্ষায় একাধিক যুগান্তকারি পদক্ষেপ। তবু কেন অখুশি চাকুরিজীবীরা।
এমনই কিছু প্রশ্ন নিয়ে ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা মুখোমুখি হয়েছিল ইনভেস্ট জার্নালিস্ট অমিতাভ গুহ সরাকারের। অমিতাভ-র মতে, সাধারণ মানুষ বাজেটে সবচেয়ে বেশি যাতে চোখ রাখে সেটি হল আয়কর। কিন্তু, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবার বাজেট পেশের সময় সাফ জানিয়েই দিয়েছেন, আয়কর স্ল্যাব-এ কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের নাম দিয়ে কিছু প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কিন্তু এতে লাভের অঙ্ক খুব একটা বাড়বে না বলেই মনে করছেন অমিতাভ। কারণ, শিক্ষা সেস-এ এই স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন-এ পাওয়া অর্থ অনেকটাই কেটে বাদ যাবে। সুতরাং, আয়কর স্ল্যাবে চাকুরিজীবীদের স্বার্থবাহী কোনও পরিবর্তন না আসায় সেভাবে সাধারণ মানুষের লাভ নেই। তবে, এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন সিনিয়র সিটিজেনরা। আর সেটা কী ভাবে তাও বুঝিয়ে দিলেন এই ইনভেস্টমেন্ট জার্নালিস্ট।
বাজেট ঘোষণার সময় স্টক মার্কেটে পতন হয়েছে। কিন্তু, বাজেট বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই স্টক মার্কেট ফের ঘুরে দাঁড়ায়। অমিতাভ গুহ সরকারের মতে, শিল্পমহল বাজেটে কোনও আশার আলো না দেখলে এমনভাবে বাজার ঘুরে দাঁড়াত না। তাঁর মতে, যে ভাবে ২৫০ কোটি টাকার টার্নওভার সংস্থাগুলিকে ২৫ শতাংশ কর আওতায় আনা হয়েছে তাতে বাজেট নিয়ে একটি পজিটিভ বার্তাই গিয়েছে শিল্পমহলে। আগে ৫০ কোটি টাকার টার্নওভারের সংস্থাগুলি২৫ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্স দেওয়ার সুযোগ পেত। ৫০ কোটি টাকার বেশি টার্নওভার হলেই দিতে হত নূন্যতম ৩০ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্স। এখন ৫০ কোটি টাকার এই টার্নওভার-কে বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এর ফলে দেশের নব্বই শতাংশ সংস্থাই ২৫ শতাংশ কর্পোরেট ট্যাক্সের আওতায় চলে আসবে। এতে ৫০ কোটি টাকার বেশি টার্নওভার সংস্থাটগুলিকে ৫ শতাংশ কম কর্পোরেট ট্য়াক্স দিতে হবে। এটা শিল্পমহলের পক্ষে সদর্থক বার্তা বলেই মনে করছেন অমিতাভ গুহ সরকার।
অনেকেই বলছেন বাজেট এবার এতটাই জনমোহিনী এবং 'পপুলিস্ট' যে চারিদিকে 'ওয়াও-ওয়াও' আওয়াজ উঠেছে। সেই সঙ্গে এমন শঙ্কাও তৈরি হয়েছে এমন জনমোহিনী বাজেট নিয়ে। বাজেটে জনমুখী প্রস্তাবগুলি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর আগেও বহুবার বাজেটে বহু জনমুখী কথা ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু, তারমধ্যে কতটা ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক আছেই। এই সত্যতা মেনে নিয়েছেন ইনভেস্টমেন্ট জার্নালিস্ট অমিতাভ গুহ সরকারও। কিন্তু, তাঁর মতে, মোদী সরকার এবার যে সব জনমুখী প্রস্তাব বাজেটে ঘোষণা করেছেন তা বিশাল। এর আগে কোনও বাজেটে এত বিশাল রকমের কোনও জনমুখী প্রস্তাবের কথা বলা হয়নি। সুতরাং, এই বাজেটে প্রস্তাবিত জনমুখী উদ্য়োগের ৭০ শতাংশও যদি বাস্তবায়িত করা যায় তাহলেও সেটা বড় মাপের কাজ হবে।