অ্যাসিড আক্রান্তদের ডিসাবিলিটি কার্ড নিয়ে লড়াই ওঁদের
অ্যাসিড আক্রান্তদের ডিসাবিলিটি কার্ড নিয়ে লড়াই ওঁদের
অ্যাসিড আক্রমণ হবার পরে সারভাইভাররা ডিসাবিলিটি কার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে নাজেহাল হচ্ছে। এ নিয়েই সোচ্চার হল চিৎকার নামক সংগঠন। তারা বহুদিন ধরেই রাজ্যের অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন মনীষা পৈলান, যিনি এই আসিড হামলার শিকার হয়েছিলেন। তিনি রাজ্যের আরও অনেক এমন আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করছেন। এবারা তাঁরা একত্রে নেমেছেন অ্যাসিড আক্রমণ হবার পরে সারভাইভারদের ডিসাবিলিটি কার্ড সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে।
চিৎকার নামক সংগঠনের পক্ষে মনীষা পৈলান বলেছেন , "বারংবার বলেছি আবারও বলছি রাজ্যে অ্যাসিড হামলা এখন এগিয়ে। বর্তমানে এই হামলায় এই রাজ্য প্রথমে। অ্যাসিড আক্রান্ত হয়ে যেসব মানুষগুলো লড়াই করছে তাদের বিভিন্ন দিক দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। আসলে যা তাদের অধিকার সময়মত পায় না। সরকারি আইনে তিন মাসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু তা এখনও সময় মতো মেলে না। ক্ষতিপূরণের জন্য তাকে তার পরিবারকে কোর্ট অবধি ছুটে বেড়াতে হয়। অন্যদিকে মুখের অংশ পুড়ে গিয়ে মুহুর্তের মধ্যে কেউ দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে আবার কেউ কথা বলার ক্ষমতা হারাচ্ছে বা কেউ শ্রবণ শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।"
সংগঠন বলছে , "এরইমধ্যে কিছু সার্ভাইভার তাদের ডিসাবিলিটি সার্টিফিকেট থাকার সত্বেও পাচ্ছে না তাদের মানবির কোটায় টাকা কিংবা দিনের-পর-দিন কাগজ জমা দেওয়ার পরেও মেলে না কোন সঠিক উত্তর বা সহযোগিতা। যার ফলে তারা যে তিমিরে থাকার সেই তিমিরেই থেকে যায়। আমাদের এটাই বলার উদ্দেশ্য সারভাইবভাররা যেন সঠিকভাবে অধিকার পায় সে '' মানবি '' ফর্মের বা তার ক্ষতিপূরণ এবং প্রতিটি পঞ্চায়েত মিউনিসিপ্যালিটি কিংবা সাব ডিভিশন অফিস এই বিষয়টা কি একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখুন কারণ এই অতি সামান্য পয়সা মনে হলেও অনেকটাই উপকার হয় বহু সারভাইভারদের । অনেক ঘটনা রয়েছে যা কাছে আসছে সুতরাং উপরিক্ত কথা অনুযায়ী প্রত্যেকটা সারভাইভার কোন অসুবিধা ছাড়াই যেন তাদের নায্য অধিকার পায়"
চলুন ২০১৪ সাল থেকে দেখে নেওয়া যাক অ্যাসিড আক্রান্তের সংখ্যা । দেশে মোট ঘটনা ২০৫। উত্তরপ্রদেশ ৪৩, বাংলা ৪১। ২০১৫ সালে দেশে মোট হানা ২২৮। উত্তরপ্রদেশ ৬১, বাংলা ৪১। পরের বছর শীর্ষে বাংলা (৮৩), দুয়ে উত্তরপ্রদেশ (৬১)। দেশে মোট হামলা ২৮১। ২০১৭ সালে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৩৫-এ। উত্তরপ্রদেশে ৬০, বাংলা ৫৪। এক বছরের তফাতে ফের শীর্ষে উঠে আসে বাংলা। দেশে ২২৯, বাংলায় ৫৩, উত্তরপ্রদেশে ৪৩। ২০১৯ সালে দেশে সংখ্যাটা পৌঁছয় ২৪৯-এ। উত্তরপ্রদেশ ৫২, বাংলা ৩৬। ২০২০ সালে কোভিড আর লকডাউনের বছরে দেশে লিপিবদ্ধ হওয়া হামলার ঘটনা কমেছে। কিন্তু দেশে যেখানে সংখ্যাটা ১৮৩, বাংলা-উত্তরপ্রদেশ মিলিয়েই তা ৮৩।
বাংলা একাধিক ক্ষেত্রে সেরার সেরা, শিল্পে আরও বিনিয়োগের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
লক ডাউনে যখন সারা দেশ থমকে তখন ও কিন্তু থেমে থাকেনি এই হামলা। চিৎকার নামক সংগঠন বলছে , "না বেআইনি অ্যাসিড বিক্রেতা রা সাজা পায় , না সাজা পায় হামলাকারীরা। এসব দেখেই সাহস পাচ্ছে অপরাধীরা৷ অপরদিকে এই ছবিও দেখা যায়, হামলাকারীরা জামিনে ঘরে ফিরে এলে সহজেই তাকে আপন করে গলায় গলা মেলাচ্ছে সমাজের বেশিরভাগ মানুষ। অর্থাৎ যে ব্যক্তিটি অন্যের শরীরকে পুড়িয়ে তার গোটা জীবনটাকে ছাড়খার করে দিল তাকে আবার সমাজ মুক্ত হস্তে গ্রহণ করে নিল।"
তাঁরা আরও বলছে "প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে কি তারা এই সব ক্রিমিনাল দের সাথে আপোস করে ? হামলা আটকানো আমি বা আপনি কারো একার দ্বারা সম্ভব নয় তবে আমরা সবাই মিলে নিশ্চই এর বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি । কারণ দিল্লি , উত্তরাখণ্ড পাঞ্জাব সহ বহু রাজ্যে এই বিষয়ে বেশ ভালো কাজ হয়েছে , আক্রান্তের সংখ্যা ও অনেক কম , সেভাবে আমাদের কে নানান ভাবে এই হামলার বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে যেতে হবে ।"