লকডাউনের সুযোগে চলছে কালোবাজারি! আগুন ছড়ানো দামে নাজেহাল মধ্যবিত্ত
লকডাউনের সুযোগে চলছে কালোবাজারি! আগুন ছড়ানো দামে নাজেহাল মধ্যবিত্ত
একদিকে গত পাঁচ মাস ধরে করোনার প্রকোপে জেরবার মানুষ, পরে আমফানের তান্ডব এবং তাদেরই দোসর অতিবৃষ্টি। ফলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ ফসলের ক্ষেত। মাঠের ফসল মাঠেই পচেছে। যা মজুদ আনাচ ও নিত্য ব্যবহার করা পণ্য ও খাদ্য সামগ্রী ছিল তাও প্রায় শেষের মুখে। যার জেরেই বাজার আগুন। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ-সর্বত্রই এক ছবি।
বাঙালির হেঁসেলে বেহাল দশা
এমনিতেই একদিকে তো করোনার চিন্তা আর অন্য দিকে সিইএসসির কল্যাণে মহানগরীর মানুষের মাথায় চেপেছে ইলেকট্রিক বিলের বিশাল অঙ্কের বোঝা। লকডাউনের জেরে আমজনতার আয়ে টান পড়েছে ব্যাপকভাবে। তাই এই সকল কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তায় মানুষের যখন নাজেহাল অবস্থা সেই সময় কার্যত মানুষের চিন্তা আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বাজারে সবজির দাম। ঊর্ধ্বমুখী কাঁচালঙ্কা থেকে টমেটো , ক্যাপসিকাম, বিনস এর মত আমদানি নির্ভর সবজি। সেই সঙ্গে আলুর দাম বাড়তে থাকায় বাঙালির হেঁসেলে বেহাল দশা।
ছ্যাঁকা লাগার জোগাড়
বাজারে গিয়ে সবজিতে হাত দিলেই যে হাতে ছ্যাঁকা লাগার জোগাড়, সেকথা স্বীকারও করে নিচ্ছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, কদিন আগেও সকালে বাজারে এতটাই ভিড় থাকত যে দম নেওয়ার সময় থাকত না। কিন্তু এখন অগ্নিমূল্য দামের জন্য অনেক ক্রেতা কমে গিয়েছে। আগের মতো ক্রেতা নেই বললেই চলে। করোনা-লকডাউন সবমিলিয়ে মানুষের পকেটের অবস্থা এখন খারাপ তার ওপর যেভাবে জিনিসের দাম বেড়ে চলেছে, তাতে ক্রেতাদের বাজারে না আসাটাই স্বাভাবিক।
ক্রেতাদের অভিযোগ
কিন্তু বাজার ফেরত ক্রেতাদের আবার অভিযোগ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। তারা দাবি করেছেন, লকডাউনের সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি মজুত রেখে কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাজার এমনিতেই আগুন। তার উপর একই সবজি এক-একজন বিক্রেতা আবার এক-একরকম দামে বিক্রি করছে। কেউ কেউ কাঁচা লঙ্কা ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে, কেউ কেউ আবার ২০০ টাকা কেজিতেই বিক্রি করছে! সবমিলিয়ে তাই লকডাউনের বাজারে করোনা এবং অগ্নিমূল্য বাজার দরের সাঁড়াশির চাপে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার।
কোন সবজির কত দাম?
কলকাতায় এদিন কোলে মার্কেট থেকে যাদবপুর-প্রায় সব বাজারেই আগুন দাম কাঁচা আনাজের। চন্দ্রমুখী আলুর কেজি ৩৫-৩৮টাকা। কোথাও আবার ৪০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে চন্দ্রমুখী আলু। জ্যোতি আলুর দাম ৩০-৩২ টাকা করে চলছে। টমেটো ১৮০-২০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০-৫০ টাকা, বর্বটি ৫০ টাকা, পটল - ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙে ৭০-৮০ টাকা, গাজর - ২৫০-৩০০, উচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, আদা-রসুন ২৫০-৩৫০ টাকা প্রতি কেজি, ক্যাপসিকাম ২৫০ - ৩০০ টাকা। মাত্র ৭ দিনে ১০০ টাকা কেজি বেড়েছে লঙ্কার। গত সপ্তাহেও যা ১০০ /১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি কাঁচা লঙ্কার দর। সোমবার কলকাতার বাজারে সেই লঙ্কায় বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। সব মিলিয়ে অগ্নিমূল্য বাজার দর। হাত দিলেই লাগছে ছ্যাঁকা। এবস্থায় মানুষ অধীর আগ্রহে যখন অপেক্ষা করে আছে কবে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়ে এই মূর্তিমান বিপদের হাত থেকে নিষ্কৃতি মিলবে।
দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে পর পর ৩ টি গাড়ির ধাক্কা, আহত ৩