মুকুল একাই নাচিয়ে ছাড়লেন বিজেপিকে! তড়িঘড়ি রিপোর্ট তলব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
মুকল-ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় তখন গোটা বিজেপি আনন্দে আত্মহারা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তাঁদের দলের প্রার্থী হচ্ছেন! তখনই এল জবরদস্ত ধাক্কা।
তৃণমূল ভাঙতে নেমে প্রাথমিক নিয়মটাই ভুলে (!) গিয়েছিল বিজেপি। মুকল-ম্যাজিক দেখার অপেক্ষায় তখন গোটা বিজেপি আনন্দে আত্মহারা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তাঁদের দলের প্রার্থী হচ্ছেন! মুতোর জবাব দেওয়া যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে! এই আনন্দে মেতে উঠে নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ককে দলের প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়া হল যোগদান না করিয়েই! তারপরই ওস্তাদের মারটা দিল তৃণমূল। ব্যস, এক চালেই কিস্তিমাত বিজেপি।
[আরও পড়ুন:রাম রাজনৈতিক চরিত্র নয়, বিজেপির ধর্মীয় উসকানিমূলক রাজনীতিকে একহাত মমতার]
কী করে এই ভুলটা করল বিজেপির মতো সর্বভারতীয় একটা দল! সম্বিত ফিরে পেয়েই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থাকা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র কাছে রিপোর্ট তলব করল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের অন্দরে শুরু হল চর্চা। মুকুল রায় তো গুরুত্ব হারালেনই, দলের অন্যান্যরাও দায় এড়াতে পারেন না এই 'ভুল'-এর জন্য। কয়েকদিন ধরে ইশরাত জাহান, নাজিয়া ইলাহি খানদের যোগদান নিয়ে এত খেলা হল। অথচ মঞ্জু বসুকে যোগদান করাতেই ভুলে গেল বিজেপি!
যাঁকে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়-রা রাজি করে ফেলেছেন দলের প্রার্থী করার ব্যাপারে, তাঁকে কেন আগে দলে যোগদান করানো হবে না? কেন যোগদান না করিয়েই তাঁকে একেবারে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হবে? আর এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল তৃণমূল, মঞ্জুদেবীকে প্রার্থী ঘোষণা করতেই ওস্তাদের মার দিয়ে দিল। আর সেই এক মারেই উঠে বসার ক্ষমতা হারাল বিজেপি।
এরপর আর মুকুল রায়ের কথার গুরুত্ব দেয়নি দল। তবে মুকুল রায় এই বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের ভাঙিয়ে দলে আনার যে খেলা শুরু করেছেন, সেই খেলায় নাচিয়ে ছাড়লেন বিজেপিকে। আর বিজেপির সেই খেলা দেখতে গিয়েই বাংলায় দলের বিপদ ডেকে আনলেন। একেবারে শেষপর্যায়ে এসে দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি।
চোর পালাতে সম্বিত ফিরে পেয়ে বিজেপি ভাবল, সত্যিই তো! আর তিনদিন কাটলেই তো আমের সঙ্গে ছালাও যেত। মঞ্জু বসু তিনদিন পর যদি পাল্টি খেতেন, তাহলে বিজেপি প্রার্থীই দিতে পারত না। আর নোয়াপাড়ায় দলের প্রতীকও থাকত না! কেননা বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শুধু মুকুল রায় বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ই নন, এই ঘটনার জন্য দায় এড়াতে পারে না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেননা যে কমিটি প্রার্থী অনুমোদন করেছিল, সেই কমিটিতে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরাও ছিলেন। তা সত্ত্বেও এই 'ভুল' হল! এখন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়েদের ঘাড়েই বন্দুক রেখে এই ভুল শুধরাতে চাইছে বিজেপি।
[আরও পড়ুন:হেরেই চলেছে তৃণমূল, জঙ্গলমহলের পর শুভেন্দুর খাস তালুকেও নাস্তানাবুদ শাসকদল]