অমর্ত্য সেনকে নিয়ে কদর্য মন্তব্য করে সমালোচনা বিদ্ধ দিলীপ ঘোষ, চাপের পড়ে সুর বদল
ফের কদর্য মন্তব্য করে বাংলাকে লজ্জিত করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবার আক্রমণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে।
কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : ফের কদর্য মন্তব্য করে বাংলাকে লজ্জিত করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবার আক্রমণ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। ভারতরত্ন অমর্ত সেনের বিরুদ্ধে কু-মন্তব্য করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়লেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপিকে বাদ দিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দলই দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের ঘোর সমালোচনা করে।
খড়গপুরের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করে বলেন, আমাদের একজন বাঙালি নোবেল পেয়েছেন, তিনি কী করেছেন, বাংলার কেউ বোঝে না, সম্ভবত তিন নিজেও বোঝেননি। দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, অমর্ত্য সেন কী দিয়েছেন দেশকে, কী করেছেন উনি?
বিজেপি রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্যের জেরে সমালোচনা ঝড় বয়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক মহল নন্দায় মুখর হয়ে ওঠে। তৃণমূলর মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, লজ্জাজনক, বাঙালির মথা হেঁট করে দিল ওই একটা কথায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, এটাই হল আরএসএস ও বিজেপির সংস্কৃতি। ওঁদের মুখ থেকে এর থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিয়েছে সিপিএমও। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, পাড়ার কে কী বললে, তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই। আমাদের কাছে অমর্ত্য সন মানেই গর্ব। সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, শুধু হম্বিতম্বি করে রাজনীতি হয় না। রাজনীতিটা সমাজের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, সংস্কৃতির জন্য। রাজনীতির সহজ পাঠটাই এখনও শেখেননি দিলীপ ঘোষ। কার বিরুদ্ধে কথা বলছে, যিনি বাংলাকে গর্বের আসনে বসিয়েছেন। শুধু সমালোচনা করেই ক্ষান্ত থাকেনি বামেরা, খড়গপুরে বিক্ষোভ মিছিলও বের করে তারা।
বুদ্ধিজীবী মহল নিন্দায় সরব হলেও, অমর্ত্য সেন কিন্তু দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কিছু না বলেও তিনি বলেছেন, দিলীপ ঘোষ যা বলেছেন তাতে আমরা কোনও আপত্তি নেই। ওঁর বলার নিশ্চয়ই অধিকার আছে। উনি ওনার মত বলেছেন। আমি আমার মত বলেছি।
তবে প্রবল সমালোচনা মুখে পড়ে সুর বদলান দিলীপ। বলেন, আমি ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাইনি, আমি বুদ্ধিজীবীদের বলেছি। অর্থাৎ ভাঙলেও মচকালেন না দিলীপ ঘোষ। শুধু অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে কটূ মন্তব্য করেই ক্ষান্ত থাকেননি দিলীপ। তিনি ভারতরত্ন অমর্ত্য সেনের দেশপ্রেম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, 'বাঙালি যাঁকে নিয়ে গর্ব করে তাঁদের কেনা যায়, বিক্রি করাও যায়, চমকানো যায়, তারপর পায়ে পড়ে যায়।'
রাজনৈতিক মহলে এই সমালোচনার তীব্র প্রতিক্রিয়া, আসলে অমর্ত্য সেন নিজেকে বিজেপি সরকারের কঠোর সমালোচক হিসেবে পর্তিপন্ন করেছেন। সম্প্রতি নোট বাতিলের কড়া সমালোচনা করেছেন। সেই কারণেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে সমালোচনা বিদ্ধ করলেন। সম্পরতি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকে তিনি সরে যান।