বিজেপির মুসলিম-প্রীতি লোকসভা নির্বাচনের আগে, ‘নয়া হিন্দুত্বে’র বার্তা দিচ্ছেন দিলীপ
আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে আর মানুষের ভোট পাওয়া যাবে না। আর শুধু হিন্দুত্ব দিয়েও বাংলা দখল অসম্ভব। এই অবস্থায় সংখ্যালঘু ভোটকে পাখির চোখ করতে অভিনব উদ্যোগ নিল বিজেপি।
আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে আর মানুষের ভোট পাওয়া যাবে না। আর শুধু হিন্দুত্ব দিয়েও বাংলা দখল অসম্ভব। এই অবস্থায় সংখ্যালঘু ভোটকে পাখির চোখ করতে অভিনব উদ্যোগ নিল বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুঝেছেন রাজ্যে প্রভাব বিস্তার করতে দরকার মুসলিম ভোট। তাই সংখ্যালঘু মন জয়ে নেমে পড়লেন তিনি।
ফারাক গড়তে পারে সংখ্যালঘুরা
বিজেপি দেরিতে হলেও বুঝেছে, হিন্দুত্ব নিয়ে পড়ে থাকলে বাংলা দখলের স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে, তা বাস্তবায়িত হবে না কোনওদিনই। এ জন্য বিজেপি এখন মুসলিমপ্রীতি দেখাতে শুরু করে দিল। সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীর উদ্যোগ নিল বিজেপি। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে দিলীপ ঘোষ বার্তা দিল, বিজেপি সবাইকে নিয়ে চলতে জানে।
বিজেপি সম্মান করে মুসলিমদের
মুসলিমদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীয় মঞ্চে দিলীপ ঘোষ বলেন, মুসলুমদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে সিপিএম, এখন ব্যবহার করছে তৃণমূল। একমাত্র বিজেপি মুসলিমদের স্বার্থের কথা ভাবে। তিনি বলেন, বিজেপি পরিচালিত রাজ্যগুলির দিকে তাকান, দেখবেন, সেখানকার মুসলিমরা কত সুখে আছে।
গুজরাটে নয়, বাংলায় ফ্যাক্টর
গুজরাটে সংখ্যালঘু ভোট ফ্যাক্টর নয়। শুধু হিন্দু ভোটেই ক্ষমতায় আসা যায়। কিন্তু বাংলায় তা সম্ভব নয়। সম্ভব নয়, পুরো হিন্দু ভোটের মেরুকরণ। তাই সংখ্যালঘু ভোটও সমান দরকার ভোটে জিততে গেলে। তাই লোকসভার কয়েক মাস আগে থেকেই ভাবমূর্তি ফেরানোর কাজ শুরু করে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
মোদী-কৌশল নিলেন দিলীপ
প্রধানমন্ত্রী মোদীও ভেবেছেন ক্ষমতা ধরে রাখতে, আর শুধু সবকা সাথ সবকা বিকাশ, আচ্ছে দিনের বার্তায় চিঁড়ে ভিজবে না। সেই কারণেই সংখ্যালঘু মন জয়ের কৌশল আগে থেকেই নিয়েছে মোদী সরকার। রামমন্দির নিয়ে হিন্দুত্বের পুরনো খেলার মধ্যেই তিন তালাক মতো হাতিয়ারও বের করেছে। দিলীপ অবশেষে সেই পথে অগ্রসর হলেন।
পাল্টাচ্ছে বিজেপি
মোদী-কৌশল নিয়েই দিলীপ ঘোষ সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিয়ে বিজয়া সারলেন। বিজেপি সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের নিয়ে কর্মশালা করেছে। তারপর সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান। বিজেপি পাল্টাতে চাইছে। বাংলা দখলের স্বপ্ন সত্যি করতে দিলীপ ঘোষরা চাইছেন হিন্দুত্ব থেকে সরে এসে নরম অবস্থান নিতে।
সংখ্যালঘু প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষাই চ্যালেঞ্জ
বিজেপি ভোটের আগে সংখ্যালঘু প্রীতিভাজন হয়ে উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু সেই ভাবমূর্তি ধরে রাখা কতটা সম্ভব হবে, তার উপরই নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ। তার উপরই নির্ভর করবে সাফল্য। সংখ্যালঘু প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করাই তাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে ঘিরে ধুন্ধুমার, গুলিবিদ্ধ ১, থমথমে নানুর ]
মোহন ভাগবতের বাণীই পাথেয়
‘আরএসএসের চোখে ভবিষ্যৎ ভারত' শীর্ষক এক সম্মেলনে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বলেছিলেন, হিন্দুত্ব মানে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলা। হিন্দুত্বের মধ্যেই রয়েছে মুসলিমদের গ্রহণ করার বিষয়টি। তাই মুসলিমদের গ্রহণ করতে না পারলে, সেটা হিন্দুত্ব নয়। ভারতের বহুত্বকে একাত্নকরণই হিন্দুত্বের পরিচায়ক।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলকে ফাঁকা জমি দিল না বিজেপি, তবু স্বজনহারাদের মমতার বার্তা দিলেন ডেরেকরা]