তৃণমূলের সুরেই মুকুল-দিলীপকে বিঁধলেন বিজেপি নেতা! হঠাৎ কেন মোহভঙ্গের সুর
রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে যে ভাষায় আক্রমণ শানান তৃণমূল নেতারা, সেই একই ভাষায় দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়দের বিদ্ধ করছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
তৃণমূল বলে- বিজেপির সংগঠন নেই, রাজ্যে কোনও চান্সও নেই। বিজেপি নেতৃত্বও বলছে, সংগঠন বাড়ানোর কোনও লক্ষ্যই নেই তাদের। বঙ্গ বিজেপি নিষ্ক্রিয়। তৃণমূল বলে- ক্ষমতায় আসতে গেলে পিছনে আন্দোলনের ইতিহাস থাকা দরকার। কেন্দ্রীয় বিজেপিও দিলীপ-মুকুলদের বিঁধছে- কোথায় আন্দোলন? কোনও আন্দোলনই গড়ে তুলতে পারছে না বিজেপি।
রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে যে ভাষায় আক্রমণ শানান তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, অনুব্রত মণ্ডল-রা, সেই একই ভাষায় দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়দের বিদ্ধ করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিজেপি তাদের পরবর্তী টার্গেট স্থির করেছিল বাংলায়। ২০১৯ লোকসভায় বাংলা থেকে অর্ধেক আসন জিতে ২০২১-এ বাংলা দখলের টার্গেট রেখেছিল বিজেপি। কিন্তু বঙ্গ নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা দেখে চরম ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতারা।
রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় চরম ক্ষুব্ধ বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্বের প্রতি। তিনি দলীয় সভায় তোপ দেগেছেন- হাতে ইস্যু পেয়েও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছেন না বাংলার নেতারা। ফলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ মাঠে মারা যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে আন্দোলন করে বাম সরকারকে নাজেহাল করে দিয়েছিলেন, বিজেপি তাদের আন্দোলনকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেত পারছে না।
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা থেকে শুরু করে ভোট পরবর্তী হিংসায় পুরুলিয়া পর পর তিনজন বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যু ঘটেছে। বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতো, দুলালকুমারদের মৃত্যুকে বিজেপি ইস্যু করে তুলতে পারেনি। আন্দোলন হারিয়ে গিয়েছে মাঝপথে। এলাকায় একটা অবস্থান বিক্ষোভ হয়েছে। কিন্তু এই ইস্যুকে খাঁড়া করে কলকাতা অচল করে দেওয়া যেত, তা পারেনি রাজ্য বিজেপি।
কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, রাজ্য বিজেপি ঘুমিয়ে আছে। দৃঢ় প্রত্যয় দেখা যায়নি কোন নেতার মধ্যেই। দায়সারা আন্দোলন করেই তাঁরা ক্ষান্ত। শুধু আন্দোলন করতে হবে বলে আন্দোলন করে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীকে নাড়ানো যাবে! প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, বিজেপি কেন রাজ্যে আন্দোলনকে তীব্র রূপ দিতে পারছে না, এর দায় কার?
কেন্দ্রীয় তোপের মুখে পড়ে রাজ্যের নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাঁরা জবাব দিতে চাইছেন কাজে। সেই কারণেই ৬ সেপ্টেম্বর মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করিয়ে দিয়েছে, এই একটা মহামিছিল করে কিছু হবে না। আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতে হবে। তবেই লক্ষ্যপূরণের দিকে তাঁরা এগোতে পারবেন। তা না হলে হতাশাই হবে একমাত্র সঙ্গী। বাংলায় বিজেপির এই ব্যর্থতা স্বীকারও করে নিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা।