‘বামমুক্ত ভারত’-এর লক্ষ্যে এবার অমিতের নিশানায় ত্রিপুরা
উত্তর প্রদেশে বিপুল জয়ের পর বাংলায় রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে বিজেপি। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে ত্রিপুরাকেও তাঁদের লক্ষ্যে আনতে চলেছেন মোদী-অমিত শাহ জুটি।
আগরতলা, ৬ মে : শনিবার থেকে ২ দিনের ত্রিপুরা সফরে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এই সফরে অমিত শাহ জনসভা করবেন। পালন করবেন জনসংযোগ কর্মসূচি। সেইসঙ্গে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কৌশল বৈঠকও করবেন তিনি। ত্রিপুরা বিজেপি সূত্রে খবর বামশক্তিকে গ্রাস করে রাজ্যে দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতেই অমিতের এই সফর।
মোদী জমানায় বারংবার কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন বিজেপি নেতারা। এবার মোদী-অমিত শাহ জুটির লক্ষ্য 'বাম মুক্ত ভারত'। সেই লক্ষ্যেই বিজেপি-র নিশানায় বাংলা-কেরলের পর এবার ত্রিপুরা।
ত্রিপুরায় গত ২৪ বছর ধরে শাসনতন্ত্র কায়েম রেখেছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। তাই বাম শাসনের অন্যতম দূর্গ ত্রিপুরায় দলের শক্তিবৃদ্ধি করতে বেশকিছু কর্মসূচি নিয়েছেন। যার জন্য তৈরি করেছেন ৯৫ দিনের পরিকল্পনা।
আর কী কী হতে পারে বিজেপি-র নিশানার 'কি-ফ্যাক্টর'?
শাসক বিরোধী হাওয়া : ত্রিপুরা প্রায় আড়াই দশক সিপিএমের নেতৃত্বে বাম-শাসনাধীন রয়েছে। এই দীর্ঘ শাসনকালে বাম শাসন নিয়ে নিশ্চিতভাবে জনমানসে কিছু ক্ষোভ জন্মেছে। বিজেপি এই ক্ষোভকে শাসক-বিরোধী হাওয়ায় পরিণত করতে চাইছে। এইভাবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসম এবং মণিপুরে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি।
অনুন্নয়ন : বাম শাসনকালে এই ২৪ বছরে ত্রিপুরায় সেভাবে উন্নয়ন হয়নি বলে মনে করছে বিজেপি। তাই অনুন্নয়নের এক তালিকা বানিয়ে তা জনসমক্ষে তুলে ধরতে পারে তারা। সেইসঙ্গে দেখানো হবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কীভাবে উন্নয়নের ছবিটাও।
নরেন্দ্র মোদী : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তাকে এই রাজ্যেও তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। মোদী গোটা দেশেই একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি। যে কোনও রাজ্যেই তাঁকে মুখ করে লড়তেই বিজেপি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাই প্রধানমন্ত্রীকেই মুখ্য করে এ রাজ্যে এগোতে চাইবে বিজেপি। এটাই স্বাভাবিক।
সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি : ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় বিজেপির সদস্যসংখ্যা ছিল ১৫ হাজার। কিন্তু, এই মুহূর্তে এই রাজ্যে বিজেপি-র সদস্য সংখ্যা ২লক্ষেরও বেশি। সদস্য সংখ্যার এই বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই আশার আলো ফুটিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপি-র মনে।
নির্বাচনে জয় : সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে ত্রিপুরায় সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। সিপিএমের চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে রাজ্যে একটি আসনে জয় পেয়েছে তারা। এই জয়কেই পাথেয় করে এগোতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। একই পথে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবলতর প্রতিপক্ষ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। কোচবিহার ও দক্ষিণ কাঁথি উপনির্বাচনের ফলেও দেখা গিয়েছে বাংলায় দ্বিতীয় শক্তি হয়ে উঠছে বিজেপি। কিন্তু, এই ফল যতই আশার আলো জোগাক বাস্তব আর স্বপ্নের মাটিটা যে এক নয় তা বুঝতে হবে বিজেপি নেতৃত্বকে। তবে, সন্দেহ নেই বাংলা ও ত্রিপুরাকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে রাজনীতির মঞ্চে এক জমজমাট লড়াই দানা বাঁধছে।