দুই ছাত্রকে অপহরণ-খুনে ক্ষোভে ফুঁসছে বাগুইআটি, থানায় একযোগে বিক্ষোভ বিজেপি-সিপিএমের
দুই ছাত্রকে অপহরণ-খুনে ক্ষোভে ফুঁসছে বাগুইআটি, থানায় একযোগে বিক্ষোভ বিজেপি-সিপিএমের
ক্ষোভে ফুঁসছে বাগুইআটি। দুই মাধ্যমিক ছাত্রকে অপহরণ করে নৃশংস খুনের ঘটনায় থানা ঘেরাও করে এদিন একযোগে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি ও সিপিএম। সিপিএম বিক্ষোভের পরই বিজেপির মহিলা মোর্চার নেতৃত্বে থানায় ঢুকে অবস্থানে বসে পড়েন নেতা-কর্মীরা। থানার প্রবেশপথে বসে পড়ে স্লোগান তোলেন তাঁরা।
বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তী এই বিক্ষোভ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন রাজ্যের পুলিশের ব্যর্থতায় দুটি তরতাজা প্রাণ চলে গেল। খুন হয়ে গেল জানতেই পারল না পুলিশ। খুনের পরেও শুধু আশ্বাস দিয়েই কালক্ষেপ করেছে পুলিশ। এই অযোগ্য পুলিশি ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ। অবিলম্বে পুলিশমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।
একদিকে বিজেপি, অন্যদিকে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট, জোড়া সাঁড়াশি চাপে বাগুইআটি থানার পুলিশ। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে এখনও কেন গ্রেফতার করা হল না, তার জবাব চাইছেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের তদন্তে চরম গাফিলতি রয়েছে। তাই প্রায় দু-সপ্তাহ দুই কিশোরের দেহ মর্গে পড়েছিল, তারপরও খুন করা হয়েছে বলে জানতে পারেনি পুলিশ। ময়বাতদন্ত হয়ে গেলেও সেই রিপোর্ট হাতে পায়নি পুলিশ।
বাগুইআটি জোড়া খুনের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ প্রথম থেকেই উঠছিল, এবার এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করলেন ডিজি মনোজ মালব্য। গাফলতির অভিযোগ ওঠায় এই মামলার সমস্ত দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে বাগুইআটি থানার আইসিকে। এদিকে বাম-বিজেপির বিক্ষোব চলছে বাগুইআটি থানায়। এদিন বাগুইআটি আসার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এর আগে বাগুইআটিতে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু তাঁকে দেখেই গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। ফিরে যান সুকান্ত। এর পরে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে যান বিধায়ক অদিতি মুন্সি।
মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ চলছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেন ১৪ দিন পুলিশ মর্গে পড়ে থাকার পরও পুলিশ জানতে পারল না দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এতদিন সময় পেয়েও দুই ছাত্রকে উদ্ধার করতে পারল না কেন পুলিশ? কোথায় গাফিলতি পুলিশের। বারবার পুলিশের কাছে গিয়েছে পরিবার, কিন্তু কিছুই করা হয়নি। ফলে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ প্রবল থেকে প্রবলতর হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ অগাস্ট নিখোঁজ হয় দুই কিশোর। তারপর দুই সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তারপর পুলিশ মর্গে তাদের দেহ রয়েছে বলে জানা যায়। অথচ পুলিশ বলে এসেছে আমরা উদ্ধারের কাজে ৮০ শতাংশ এগিয়ে গিয়েছি, খুব শীঘ্রই তাঁদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পারব। কিন্তু বাসন্তী হাইওয়ের ধারে নয়ানজুলি থেকে আগেই যে তাদের দেহ উদ্ধার করেছে প্রতিবেশী থানা, তা জানেই না বাগুইআটি থানা। বাগুইআটি থানার পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরও রিপোর্ট তলব করেছে। এর মধ্যে বাগুইআটি-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে অন্যতম অভিযুক্ত অভিজিৎ বোসকে। মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী এখনও বেপাত্তা।