পার্থদা বলতেন- ‘আমি নম্বর টু’! অহংবোধেই পতন, মত একদা ঘনিষ্ঠ-বৃত্তে থাকা বৈশাখীর
পার্থদা বলতেন- ‘আমি নম্বর টু’! অহংবোধেই পতন, মত একদা ঘনিষ্ঠ-বৃত্তে থাকা বৈশাখীর
একটা সময় শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে দেখা যেত। বৈশাখীও পরিচিত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরেই শিক্ষা দফতরে উত্থানও হয়েছিল বৈশাখীর। কিন্তু সেখানে বেশিদিন স্থায়ী হননি বৈশাখী। তার জন্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দফতরের দুর্নীতিকেই দায়ী করেছেন বৈশাখী। আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পতনের জন্য তিনি দায়ী করেছেন অহংবোধকে।
দু্র্নীতি দমনের কথা মুখে বলতেন, কিন্তু...
বৈশাখীর মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে শিক্ষা দফতরে এনেছিলেন দুর্নীতি দমনের উদ্দেশ্যে। ঘুঘুর বাসা তিনি ভাঙতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুখে যা বলেছিলেন কাজ হচ্ছিল তার উল্টো। যাঁরা দুর্নীতিতে মদত দিতেন, তাঁরা দেখি পুরস্কার পাচ্ছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কোনও দুর্নীতি বা কারও দুর্নীতির বিষয়ে বললে তিনি তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু আদতে দেখা গিয়েছে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি, উল্টে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিই গুরুত্বশালী হয়ে উঠেছেন।
সবসময় বলতেন আমি নম্বর টু, অহংবোধেই শেষ
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেকায়দায় পড়তেই শোভন-ঘনিষ্ঠ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিয়ে নানা বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। বৈশাখী সাফ জানিয়েছেন, পার্থদার এই পতনের পিছনে রয়েছে ওঁর অহংবোধ। উনি বলতেন শিক্ষা দফতরটা হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটের বদলে নাকতলা থেকে চলবে। তিনিই সব, তিনি যেটা ভাবেন সেটাই করেন। মমতা বন্যোর পাধ্যায়ও তাঁর কাজে নাক গলান না। সবসময় বলতেন আমি নম্বর টু। সেই অহংবোধেই তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছিলেন। তাতেই পতন হল পার্থদার।
এই পার্থদাকে আমরা অচেনা লাগছে, বললেন বৈশাখী
এরপর আবার বৈশাখী বলেন, এই পার্থদাকে আমরা অচেনা লাগছে। উনি নিজে আমাকে অর্থের জন্য রাজনীতি করতে মানা করেছিলেন। দুর্নীতির বন্ধ করার জন্য তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু বৈশাখী প্রস্তাব করলেও তা শোনননি পার্থ, এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে বারবার। একটা সময় ওয়েবকুপায় ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে একসময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসসিতে আনার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু দফতরের কিছু আধিকারিকের আপত্তিতে তা হয়নি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন
অর্থাৎ একটা সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে ভালো যোগাযোগ ছিল, তা প্রমাণিত তাঁর কথাতেই। কিন্তু আল আমিন কলেজ থেকে বৈশাখীর অপসারণের পর থেকেই দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। তবে তারপরও একাধিকবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে বৈশাখীর। শোভনকে ফেরাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বৈশাখীর বাড়িতে এসেছিলেন। বৈশাখীও ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে গোপনে গোপনে নিজের একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, তা বুঝতে পারেননি। এই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সত্যিই অচেনা লাগছে।
শিক্ষা দফতরে বেআইনি নিয়োগের ঘুঘুর বাসা পার্থর ইন্ধনে!
বৈশাখী মনে করেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত ইন্ধনে শিক্ষা দফতরে বেআইনি নিয়োগের ঘুঘুর বাসা গড়ে উঠেছে। বেশ কিছু আধিকারিকও রয়েছেন এই চক্রে। বৈশাখী তাঁর কথায় বারবার তুলে এনেছেন সেই প্রসঙ্গ। আর এই দফতর যে দুর্নীতির আখড়া, তা কতটা নির্মূল করতে পেরেছেন ব্রাত্য বসু, তা জানি না।
মঙ্গলবার থেকেই অর্পিতাকে সামনে বসিয়ে ইডির জেরা! কলকাতায় ফিরেই মমতার মন্তব্যে সায় পার্থর