দিলীপকে সরিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হচ্ছেন কে! বহু লবির লড়াইয়ে ভাসছে নতুন নাম
রাজ্যে বিজেপির অন্দরে তৈরি হওয়া বহু লবির জেরে তৈরি হওয়া কালো মেঘ কাটাতে রাজ্য বিজেপি পদে ফের ভেসে উঠল নতুন এক নাম।
রাজ্য বিজেপির একাংশ ভেবেছিল, দিলীপ ঘোষের মেয়াদ শেষে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন মুকুল রায়। মুকুল রায়কে রাজ্য বিজেপি সভাপতি করতে উঠে পড়ে লাগে তাঁর লবিও। আবার একটা বড় অংশ দিলীপ ঘোষকে পুনরায় এই পদে রেখে দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করছে। রাজ্যে বিজেপির অন্দরে তৈরি হওয়া এই মেঘ কাটাতে ফের ভেসে উঠল নতুন এক নাম।
সেই নাম হল আশিস সরকার। মোদী-অমিত শাহরা নাকি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন, রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে এই প্রবাসী বাঙালিকে বসাতে। বাংলায় তৈরি হওয়া একাধিক লবিকে ভেঙে মোদী-শাহ চাইছেন এমন একজনকে যিনি রাজ্য বিজেপির সমস্ত লবিকে এক বিন্দুতে আনতে পারেন।
শুধু মুকুল-দিলীর অন্তর্দ্বন্দ্বই নয়, বিজেপির একটি অংশ রাহুল সিনহার পক্ষে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। আবার কেউ কেউ চাইছে শমীক ভট্টাচার্যের মতো কাউকে রাজ্য বিজেপির মাথায় বসাতে। এই অবস্থায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপ, মুকুল, রাহুল বা শমীক ভট্টাচার্যের মতো কাউকে না এনে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ কোনও নেতাকে আনাই শ্রেয়।
এমন একজন নেতা, যিনি বাঙালিও হবেন, আবার সঙ্ঘঘনিষ্ঠও হবেন অথচ বাংলা নেতৃত্বের সঙ্গে সে অর্থে যোগ থাকবে না অর্থাৎ কোনও লবি থাকবে না, এমন একজনকে মাথায় বসালে সমন্বয় সাধন সহজ হবে বলেই মনে করছে নেতৃত্ব। সেই কারণেই ফের আশিস সরকারকে রাজ্য বিজেপির দায়িত্বে আনার ভাবনা। আর এবারই তো প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার আশিস সরকারের নাম উঠেছিল বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে। দিলীপ ঘোষ ২০১৫ সালে যখন সভাপতি হন রাহুল সিনহাকে সরিয়ে, তখনও আশিস সরকারের নাম উঠেছিল। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আশিস সরকারের অবশ্য সেবার সভাপতি হওয়া হয়নি।
ফের যখন নতুন করে রাজ্য বিজেপিতে সভাপতি বদলের আবহ তৈরি হয়েছে, তখন নতুন করে শুরু হয়েছে আশিস সরকারকে নিয়ে জল্পনা। যদিও আশিস সরকারের ঘনিষ্ঠরা এই সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। এমন কোনও খবর তাদের কাছে নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তবু রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে রাজ্য বিজেপির মাথায় এবার যিনি বসবেন, তাঁদের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন আশিস সরকার।
তাহলে সেক্ষেত্র মুকুল রায়কে কী পদ দেবে বিজেপি? তাও স্থির করে ফেলেছে নেতৃত্ব। মুকুল রায়কে বিশেষ সাম্মানিক পদ দিতে চাইছেন মোদী-শাহরা। এমন একটা পদ তাঁর জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে, যে পদে থেকে তিনি সম্মানও পাবেন, আবার তাঁর মত ব্যক্ত করার মতো জায়গাতেও থাকতে পারেন। পারেন তাঁর সাংগঠনিক প্রজ্ঞা স্বাধীনভাবে কাজে লাগাতে।
সেইমতে এবার কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদকের পদ পেয়ে মুকুল রায় পদের খরা কাটতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে, মুকুল রায়কে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদও দেওয়া হয়। দুটি বিষয়ই খুব তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে চাইছে বিজেপি। কেননা সামনে লোকসভা নির্বাচন, সেক্ষেত্রে নেতৃত্ব বদল হলে, তাঁকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। সেই সময়ে কম বিজেপিত হাতে।