কে বড় হিন্দু? পঞ্চায়েতের আগে যুযুধান ‘শিবভক্ত’ অনুব্রত বনাম ‘রামভক্ত’ দিলীপ
পুরোহিত সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নাম না করেই হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী বিজেপিকে একহাত নিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
কে বড় হিন্দু? লড়াই জমে উঠল রাজ্যে। এবার সম্মুখ সমরে অনুব্রত মণ্ডল বনাম দিলীপ ঘোষ। একজন রামভক্ত বলে আগেই পরিচিত। আর একজন নিজেকে শিবভক্ত বলে প্রচার করছেন। অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হল ধর্মের অনুশাসন। সেই লড়াইয়ে যুযুধান দুই শিবিরের দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা- একজন রামভক্ত দিলীপ, অন্যজন শিবভক্ত কেষ্ট।
পুরোহিত সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নাম না করেই হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী বিজেপিকে একহাত নিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার তিনি বীরভূমের পুরোহিত সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপি পার্টিকে জল্লাদবাহিনী বলে কটাক্ষ করেন। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি বলেন, 'যদি হিন্দুত্ব শিখতে হয় শিখব আপনাদের মতো পুরোহিতদের কাছে, জল্লাদবাহিনীর কাছে হিন্দুত্ব শিখব না।''
এদিনের
মঞ্চে
মাইক্রোফোন
হাতে
সারাক্ষণই
অনুব্রতর
আনুগত্য
ছিল
দেখার
মতো।
তিনি
প্রণম্য
চিত্তে
পুরোহিতদের
প্রতি
আনুগত্য
দেখান।
তিনি
পুরোহিতদের
উদ্দেশ্যে
বলেন,
'আপনাদের
থেকে
বড়
হিন্দু
কেউ
নন।
হিন্দুত্ব
শিখতে
হলে
তাই
আপনাদের
কাছেই
শিখব।'
এদিন
সারাক্ষণ
অনুব্রতর
নিশানায়
ছিল
বিজেপি।
বিজেপির
নাম
না
করেই
চরম
বার্তা
দেন
মমতার
প্রিয়
কেষ্ট।
সেইসঙ্গে
বীরভূমে
পঞ্চায়েতে
এবার
হিন্দুত্ব
বড়
ইস্যু
হতে
চলেছে,
সেই
আভাসও
মিলে
গেল
এদিন।
এদিন বীরভূমের ডাক বাংলো ময়দানে বিরাট পুরোহিত সম্মেলনের আয়োজন হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের সৌজন্যে। তবে তিনি এই মঞ্চে উপস্থিত হয়ে কী বার্তা দেবেন, তা নিয়ে অনেকের মনে সংশয় ছিল। প্রায় আট হাজার পুরোহিতের সামনে বিনম্র ভঙ্গিমায় তিনি যেমন যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করলেন পুরোহিতদের, তেমনই নিশানা করলেন বিজেপির নকল হিন্দুত্বকে। নিজেকে আদর্শ হিন্দু বলে পরিচয় দিয়ে তিনি বিজেপিকে বার্তা দিয়ে রাখলেন।
এই প্রথম রাজ্যে পুরোহিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও অনেকের মনে সংশয় ছিল। সেই সংশয় কাটিয়েই এদিন পুরোহিতদের ভিড় ছিল দেখার মতো। এদিন উপস্থিত সকল পুরোহিতদের হাতে তুলে দেওয়া হল, একটি করে গীতা ও নামাবলি। ছিল অন্যান্য উপঢৌকনও।
তৃণমূলের তরফে দাবি, জনসংযোগ বাড়াতেই এই অভিনব উদ্যোগ নেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিন স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আক্রমণ না করলেও, এদিনও যে অনুব্রতর নিশানায় যে বিজেপিই ছিল, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন পরতে পরতে। বিজেপির কাছে হিন্দুত্ব শিখবেন না বলে যুক্তি খাড়া করে জানিয়েছেন, 'আমার বাড়িতে ৪০০ বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো হয়, চারটে শিব মন্দির রয়েছে আমাদের।'
তারপরই বলেন, 'হিন্দুত্ব শিখতে হলে পুরোহিতদের কাছে শিখবেন তিনি। আনুগত্যের ভঙ্গিতে পুরোহিতদের উদ্দেশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, আমি ভুল বললে ক্ষমা করে দেবেন।' এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অনুব্রত মণ্ডলের কথার প্রত্যুত্তরে বলেন, 'কে জল্লাদবাহিনী তা জানে ব্ংলার মানুষ। পুরোহিত সম্মেলন করে পাপক্ষয় হবে না।'