উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফলের কেউ দিল না দাম, আত্মহননের পথ বেছে নিলেন এই ছাত্র
মেধার তালিকায় নাম থাকার পরও কলেজে ভর্তি না হতে পেরে আত্মহত্যা করলেন এক ছাত্র।
স্কুলের পড়া শেষ করে তাঁর বন্ধুরা যখন সবাই বিভিন্ন কলেজে যাবে, তাঁকে বসে থাকতে হবে বাড়িতে। অপেক্ষা করতে হবে গোটা একটা বছর, যদি পরের বছর কোনও কলেজে ভর্তি হওয়া যায়। সোনারপুরের অম্লান সরকার। তাই বেছে নিল আত্মহননের পথ। অঙকুরোদগমের আগেই শেষ হয়ে গেল এক সম্ভাবনা।
অথচ সে যে খারাপ ছাত্র ছিল তা তো নয়। বরং সোনারপুরের বড়াল এলাকায় ভাল ছাত্র হিসেবেই তাঁর নাম ছিল। ৭৯ শতাংশ নম্বর নিয়ে বড়াল হাইস্কুল থেকে এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিল সে। বেশ কয়েকটি কলেজের মেধা তালিকায় তাঁর নামও ছিল। তবু ভর্তি হতে পারেনি কোনওটিতেই।
রাজ্যে কলেজে ভর্তি নিয়ে যে পালা চলছে তাতেই সযোজিত হল এই মর্মান্তিক অঙ্ক। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে শোনা যাচ্ছে অনেকেই মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও ভর্তি হতে পারছেন না। কারণ, এক শ্রেণীর দাদারা বিশাল অঙ্কের অর্থ দাবি করছেন ঙর্তি হওয়ার জন্য। অম্লানের ক্ষেত্রে অবশ্য প্রত্যক্ষ এরকম বাধা আসেনি, তবে পরোক্ষ বাধা ছিল।
দিন কয়েক আগে তিনি গিয়েচিলেন গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে। মেধা তালিকায় নাম থাকায় ভেবেছিলেন সহজেই ভর্তি হয়ে ফিরে আসবেন বড়ালের বাড়িতে। কিন্তু কলেজে উপস্থিত হয়ে দেখেন সেখানে প্রায় রণক্ষেত্রের দশা। ভর্তিকে কেন্দ্র করে চলছে ছাত্র সংঘর্ষ। কাজেই অম্লানের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এরপর সে যায় পাটুলির কে কে দাস কলেজে। সেখানেও নম্বরের ভিত্তিতে সহজেই ভর্তি হতে পারতেন এই ছাত্র। কিন্তু সেখানে যতক্ষণে গিয়ে তিনি পৌঁছান ততক্ষণে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
জেনারেল লাইনে পড়া হবে না ভেবে এরপর অম্লান চেষ্টা করেন তাঁর শখকে নিয়ে এগোতে। ছবি আঁকতে ভালবাসতেন তিনি। আঁকার হাত বেশ ভাল ছিল তাঁর। চে,্টা করেন যদি আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়া যায়। সেই সঙ্গে চেষ্টা চালান সোনারপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও। কিন্তু সব ঝায়গাতেই ব্যর্থতাই তাঁর সঙ্গী হয়।
এরপরই মনের জোর হারায় অম্লান। গোটা এক বছর নষ্ট হওয়ায় জীবনের সব আশাব্যঞ্জক দিকই তাঁর সামনে ঝাপসা হয়ে যায়। শুক্রবার বাড়িতে কেউ ছিলেন না। একাকি থাকতে থাকতেই এই তরুণ নিয়ে ফেলেন চরম সিদ্ধান্ত।