দলিতের পর টার্গেট কৃষক-শ্রমিক-মৎস্যজীবী! নয়া পঞ্চায়েত-কৌশল বিজেপির ‘চাণক্যে’র
দলিত পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করে অমিত শাহ বঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিয়েছিলেন। এবার বিজেপির চাণক্যের টার্গেট সমাজের একেবারে তৃণমূল স্তরে।
প্রথম টার্গেট ছিল বুদ্ধিজীবী মহল। তাই তাঁদের দলে টানতে পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। অমিত শাহ রাজ্যে এসে বুদ্ধিজীবী সম্মেলন করে তাঁদের দলে টানতে বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্বকে। তারপর দলিত পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করে তিনি বঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিয়েছিলেন। এবার বিজেপির চাণক্যের টার্গেট সমাজের একেবারে তৃণমূল স্তরে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি চাইছেন কৃষিজীবী, মৎস্যজীবী, শ্রমিক সম্প্রদায়কে পঞ্চায়েতের আগে দলে সামিল করাতে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে সমাজের একেবারে তৃণমূল স্তরে জাল বিস্তার করার লক্ষ্যে নিশানা স্থির করেছে বিজেপি। সেই কারণেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে রাজ্যে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই বিশেষ লক্ষ্য স্থির করে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও চাইছেন পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসতে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এনেও পঞ্চায়েতের আগে জনসভা করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়রা। অমিত শাহকে নিয়ে আসার লক্ষ্য সাংগঠনিক বিস্তারকে মৎস্যজীবী থেকে শ্রমিক-কৃষক সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া। আর মোদীর জনসভার মাধ্যমে মানুষকে বিজেপি মুখী করাই রাজ্য বিজেপির উদ্দেশ্য।
অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীরা রাজ্যে আসার মানে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে। সাংগঠনিক প্রস্তুতিতে শীর্ষ নেতৃত্বকে সন্তুষ্ট করার জন্য একটা তাগিদ থাকবে সবার মধ্যেই। তাতে আখেরে পঞ্চায়েত ভোটে লাভবান হবে বিজেপি। সেই পরিকল্পনা থেকেও অমিত-মোদীকে রাজ্যে আনতে তৎপর বিজেপি নেতৃত্ব।
সেইমতো প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছে, দু-দফায় রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ। প্রথম দফায় ৮ ও ৯ এপ্রিল আর দ্বিতীয় দফায় ১৯ ও ২০ এপ্রিল- এই চারদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজ্যে থাকতে পারেন। প্রথম দফায় এসে ৮ এপ্রিল তিনি দার্জিলিংয়ে ও জলপাইগুড়িতে চা বাগান শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। পরদিন বর্ধমানে কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
তারপর ওইদিনই কলকাতায় ফিরে ছাত্র-যুব সম্মেলনে অংশ নেবেন সর্বভারতীয় সভাপতি। তারপর তিনি ফিরে যাবেন দিল্লিতে। আর দ্বিতীয় দফায় এসে ১৯ এপ্রিল দক্ষিণবঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করবেন তিনি। তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন ওইদিন। পরদিন ২০ এপ্রিল তিনি একটি আলোচনা সভায় অংশ নেবেন। রাজ্যে শিল্পের সংকট, বেতন পরিকাঠামোয় ফারাক নিয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি দ্বিতীয় দফায় তিনি মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। এই বৈঠক প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা বিভিন্ন পেশার মানুষের পাশে থাকতে চাই। তাই এই উদ্যোগ। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি যদি সমাজের তৃণমূলস্তরের মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বার্তা দেন, তাতে উদ্দেশ্য ফলপ্রসূ হবে সহজেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, চা-শ্রমিক থেকে শুরু করে মৎস্যজীবী, কৃষকদের একটা বড় অংশ পঞ্চায়েত ভোটার। তাঁদের প্রভাবিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।