দুর্নীতিবাজ তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করে নতুন সোনার বাংলা গড়ার ডাক অমিতের
দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হতে পারছে না। সেই কারণে বাম শাসনের অবসানের পরও রাজ্যে সে অর্থে উন্নয়ন হয়নি। রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারের কঠোর সমালোচনা অমিতের।
কলকাতা, ২৬ এপ্রিল : দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হতে পারছে না। সেই কারণে বাম শাসনের অবসানের পরও রাজ্যে সে অর্থে উন্নয়ন হয়নি। রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বুধবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানালেন, এ রাজ্যে বোমা তৈরির কারখানা ছাড়া সমস্ত কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই দুর্নীতিবাজ সরকার বাম আমলের থেকে অনেক যোজন পিছিয়ে দিয়েছে বাংলাকে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের ব্যর্থতার খতিয়ান তুলে ধরেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, সারদা ও নারদের ঘটনায় বোঝা যায় রাজ্যে কীহারে দুর্নীতি বেড়েছে। বাম আমলে বাংলার উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূলের আমলেই সেই একই ছবি। বাংলার মানুষ আগে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতেন, এখন শোনেন বোমার আওয়াজ। সমস্ত ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে বাংলা। কোনও পরিষেবাই তৃণমূল নিয়ে যেতে পারেনি তৃণমূল সরকার। এখন ভয় দেখিয়ে বিজেপিকে ম্নান করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বাংলার বিজেপি কে সরকার গড়ার সুযোগ করে দিন। নতুন করে সোনার বাংলা গড়তে বিজেপির সঙ্গে আসুন।
অমিত শাহের কথায়, বাংলায় বিকাশয়ের চাকা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। যেদিকে তাকাবেন, সেদিকেই সরকারের ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট। তিনি বলেন, নোট বাতিল ইস্যুতে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিরোধিতা করেছিলেন। অথচ জালনোটের রমরমা রুখতে কোনও ব্যবস্থা নেননি। ব্যর্থ হয়েছে অনুপ্রবেশকারীদের রুখতেও। নৈতিকতার প্রশ্নে তৃণমূলকে জবাবদিহি করতে হবে।
তাঁর অভিযোগ, শুধু তোষণের রাজনীতি চালাচ্ছে তৃণমূল। হিংসার রাজনীতি চালাচ্ছে। আর বিজেপির বিরুদ্ধে হিংসা-ভেদাভেদের রাজনীতি চালানোর মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি ভেদাভেদ, হিংসার রাজনীতি করে না, এ ধরনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন তাঁরা। তৃণমূলের আমলে সাম্প্রদায়িকীকরণ হয়েছে। সেই কারণে হিংসা ছড়াচ্ছে রাজ্যে।
অমিত শাহ বলেন, কৃষি ও উৎপাদন শিল্পে পিছিয়ে গিয়েছে বাংলা। গ্রামীণ রোজগার যোজনায় বিশেষভাবে সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তা সত্ত্বেও কোনও উন্নয়ন ঘটেনি। এই রাজ্যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন দারিদ্র সীমার নীচে বাস করে। এছাড়া রাজ্যে বিদ্যুতায়নের জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু আদতে উন্নয়ন হয়নি কিছুই।
এদিন দিল্লির তিনটি পুরসভার জয় নিয়েও উচ্ছ্বসিত অমিত শাহ। বলেন, এই জয় সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। এ জন্য দিল্লির মানুষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মোদীর বিজয়রথকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেচেন দিল্লির মানুষ। অজুহাতের রাজনীতিকে বরখাস্ত করেছেন তাঁরা। প্রমাণ করে দিয়েছেন, অজুহাতে রাজনীতি আর চলবে না। বাংলার মানুষও একই পথে অগ্রণী হবেন। এ বিশ্বাস তাঁদের রয়েছে। বাংলার মাটি থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করবেন তাঁরাই।
এদিন ফের তিনি বলেন, ২০১৯-এ রাজ্যে সবথেকে বেশি আসন পাবে বিজেপি। এবার যে বাংলাই তাঁর নিশানা, তা ফের বোঝালেন অমিত শাহ। এদিন ফের বাংলার মানুষের কাছে মোদীর হাত শক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। এদিন ইভিএম বিতর্ক নিয়েও তাঁর জবাবে অমিত শাহ বলেন. ২০১৫ সালেরও একই ইভিএমে ভোট হয়েছিল। তখন কেজরিওয়াল কীভাবে জিতলেন? উল্লেখ্য দিল্লি পুরভোটে বিজেপির বিপুল জয়ের পর আপের পক্ষ থেকে ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ করা হয়।
এদিন নারদকাণ্ডেও তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলেন অমিত শাহ। বলেন, ক্যামেরার সামনে ঘুষ নিয়ে এখন অস্বীকার করছেন। সেইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, আমার তো দেশের সর্বত্রই যাওয়ার অধিকার রয়েছে, তাহলে তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত চিন্তিত কেন?