বইমেলায় দাদাঠাকুর তিনি, সত্তরোর্ধ বই বিক্রি করেন হেঁকে ডেকে
বইমেলায় দাদাঠাকুর তিনি, সত্তরোর্ধ বই বিক্রি করেন হেঁকে ডেকে
বাংলার যে প্রান্তেই বইমেলা হোক, ব্যানার , বইয়ের ঝোলা নিয়ে তিনি ঠিক পৌঁছে যাবেনই। তিনি অলোক দত্ত। তাঁকে সবাই বইমেলার ফেরিওয়ালা বলে। অনেকে তাকে দাদাঠাকুর বলে ডাকতেও শোনা গেল। বললেন, 'আমার কোনও স্টল নেই। আমাকে স্টলে তাঁকে বেঁধে রাখাও যাবে না। আমি এই ফেরিওয়ালা ঘুরে ঘুরে বই বিক্রি করতেই বেশি পছন্দ করি। সারা বইমেলাই আমি চড়ে বেড়াই।'
অলোক দত্ত বলেন, 'আমি খুব ভালো লিখি কি না জানি না কিন্তু আমি যা লিখি মানুষ পছন্দ করে। গত চল্লিশ বছরের বেশি ধরে এই কাজ করি। এটা আমার ভালো লাগা। এই জন্যই আমাকে সবাই মনে হয় দাদাঠাকুর বলে। আমি মূলত হাসির বই লিখি। হেঁকে হেঁকে বিক্রি করি। দশ থেকে চল্লিশ সব দামের মধ্যে বই আছে।' তাঁর গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ড। লেখা 'ধর্মদূষণ'। এই নাম প্রতিবাদের প্রতীক। টুকরো টুকরো এমন কত ছবি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বইমেলার পুরো মাঠ জুড়ে।
বইমেলায় পুচকির সঙ্গে দেখা পিরলো, দান্তের
কোথাও মাথায় এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে ফেট্টি বেঁধে বই বিক্রি। আবার গিটার হাতে আপন মনেই কেউ গেয়ে চলেছেন সম্প্রীতির গান। কোনও কোনও স্টলের সামনে বাউল গান তো আছেই। ঝাঁ-চকচকে স্টল থাকবে। কোথাও কোথাও মণ্ডপে পুজোর থিমও এসে গেছে। কর্পোরেট হাওয়াও ঢুকছে সময়ের নিয়মে। কিন্তু লিটল ম্যাগ ছাড়া কলকাতা বইমেলা হয়!
ডেঞ্জারাস আমেরিকা, ডেঞ্জারাস চীন/সবার চেয়ে ডেঞ্জারাস লিটল ম্যাগাজিন। কতকাল আগে লেখা ছড়াটা যেন প্রবাদের চেহারা নিয়েছে। পাশাপাশি টেবিলে একসঙ্গে ঠাঁই নিয়েছে কত নাম না জানা ম্যাগাজিন। কিন্তু।সত্তরোর্ধ্ব প্রবীণ আছেন সেখানেই। উনি সারা বছর বইকে আঁকড়ে বেঁচে থাকেন সঙ্গে আবেগ।
বললেন, 'এই আবেগটা সবাই বুঝবেন না। যাঁরা বোঝার, সেই সংখ্যাটাও মন্দ নয়। যেমন লালমোহন বিশ্বাস। তাঁর সম্পাদিত বাল্মীকি পড়ল পঞ্চাশ বছরে। এবারের সংখ্যায় আল মামুদকে নিয়ে বিশেষ আলোচনা। সিউ পত্রিকার বিষয়, সম্পত্তিতে মুসলিম মহিলাদের সমানাধিকার। সৌম্যেন অধিকারী সম্পাদিত 'সবাই মিলেমিশে' বের করল হেমন্ত মুখোপাধ্যায় শতবর্ষ স্মারক সংখ্যা। 'বারণরেখা'র 'যুদ্ধ ও জীবন' বেশ আকর্ষণীয়। জাহিরুল হাসানের 'খাস মান্টো' নজরকাড়ার মতোই। আর বাংলা সাহিত্যের গুগল 'সাহিত্যের ইয়ারবুক'কে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ তো আছেই। '