ভেঙে ফেলা হবে বিপজ্জনক দুই বাড়ি! স্মৃতি রোমন্থন করে কান্নায় বাসিন্দারা
বিপদজনক অবস্থায় থাকা বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু বউ বাজারে। গত কয়েকদিন আগেই হঠাত করেই ফাটল দেখা যায় দুর্গাপিটুরি লেনের একাধিক বাড়িতে। যা নিয়ে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পরেই সেখানে একাধিক বাসিন্দাকে রাতারাতি সরানোর কাজ শুরু হয়ে যায়। যদিও সবাই নিরাপদে থাকলেও দুটি বাড়ি বিপদজ্জনক অবস্থায় থাকায় তা ভাঙার কাজ শুরু করা হল KMRCL-এর তরফে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার খাতায় বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সকাল থেকেই কাজ শুরু
নির্ধারিত সময়েই বউবাজারে পৌঁছে যান KMRCL- এর আধিকারিকরা। শুরু হয়ে যায় বাড়িগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখার কাজ। ইঞ্জিনিয়ারদের তরফে বাড়িগুলির অবস্থা ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়। এই ক্ষেত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই বাড়ির একাংশ হেলে পড়েছে ১৪ নম্বর বাড়ির দিকে। ফলে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার আগে বিশেষ গুরুত্ব নেওয়া হচ্ছে।

অন্য অংশ ভেঙে পড়বে না তো?
KMRCL- এর আধিকারিকদের আরও একটি বিষয় যথেষ্ট ভাবাচ্ছে। আর তা হল, বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হলে অন্য বাড়িগুলি ভেঙে যাবে না তো। ইতিমধ্যে মেট্রোর টানেলে জল ঢোকার কারণে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ভিতরে তো বটেই, মাটির উপরেও এর প্রভাব দেখা গিয়েছে। বাড়ি তো বটেই, মাটিও ফেটে গিয়েছে একেবারে। তবে ইঞ্জিনিয়ারা বলছেন, ১৬ নম্বর এবং ১৬/১ নম্বর দুর্গা পিটুরি লেন- এই বাড়ি দুটির একাংশ ভাঙা হবে। একটি অংশ যদি ঠিক থাকে তাহলে আর ভাঙা হবে না।

কিছুক্ষণের জন্যে খুলে দেওয়া হয় দরজা
আজ সকালে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার আগে কিছুক্ষণের জন্যে খুলে দেওয়া হয় বাড়ির দরজা। বাড়ির মালিকদের গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বের করে নিয়ে আসার কথা জানানো হয়। ঘটনার পর থেকেই হোটেলে রয়েছেন একাধিক পরিবার। আজ তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ডেকে বাড়ির মধ্যে থেকে জিনিস বার করে নিয়ে আসার কথা জানানো হয়। আর এরপরেই যে যেমনটা বাড়ছেন জিনিস পত্র নিয়ে বেরিয়ে আসছেন।

কান্নায় ভেঙে পড়ছেন
অনেক স্মৃতি আগলে থাকা বাড়িটি ভেঙে ফেলা হবে! ইঁট-কাঠ-সিমেন্টের মধ্যেই রয়েছে একাধিক স্মৃতি। আর তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ওই পরিবারগুলি। আর তাই বাড়ি আগলেই কেউ কাঁদছেন তো কেউ আবার স্মৃতি আগলাচ্ছেন। তবে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বাড়ি থেকে সব জিনিস বার করা যাচ্ছে না। অল্প নোটিসে সব বাঁধন কীভাবে শেষ করা যাবে? প্রশ্ন বাসিন্দাদের। বলে রাখা প্রয়োজন, ২০০৯ সালে মেট্রোর কাজের সময় ত্রিশ টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। এরপর আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। আবার সেই ঘটনার পুনঃরাবৃত্তি। তা এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না দুর্গাপিটুরি লেনের বাসিন্দারা।
জলের তলায় ১৩৮টি গ্রাম, শুধু মাত্র কাছাড় জেলােতই ৪১ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত