ভেঙেই গেল শোভন-রত্নার সম্পর্ক! কোন শর্তে মিলল রফা, দেখুন একনজরে
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের খোরপোশ মামলায় স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে খোরপোষ বাবদ মাসে ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত।
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের খোরপোশ মামলায় স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে খোরপোষ বাবদ মাসে ৪০ হাজার টাকা এবং মেয়ের খরচ বাবদ ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। এছাড়াও মামলা লড়ার খরচ বাবদ এককালীন ৭০ হাজার টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে তারা উচ্চতর আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, খোরপোষ মামলায় প্রতিমাসে দেড়লক্ষ টাকা করে দাবি করেছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও এককালীন ৩০লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। যার মধ্যে ১৫ লক্ষ টাকা মামলা চালানোর খরচ এবং বাকি ১৫ লক্ষ টাকা মেয়ের খরচের জন্য চাওয়া হয়েছিল। এদিনের আদেশে অবশ্য বিচারক সেই দাবি কাছাকাছিই যাননি। তিনি খোরপোষ বাবদ মাসে ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। মেয়ের খরচ বাবদ মাসে ৪০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার খরচের জন্য এককালীন ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানা গিয়েছে। প্রতিমাসের খোরপোষের টাকা মাসের প্রথম সাতদিনের মধ্যে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন আদালতে হাজির ছিলেন মেয়রের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
খোরপোষের মামলা নিয়ে এর আগে অগাস্ট মাসে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তখন হাইকোর্টের তরফে জানানো হয় খোরপোষের মামলার আগে নিষ্পত্তি করতে হবে। পরে ডিভোর্সের মামলার শুনানি হবে। অগাস্টের তৃতীয় সপ্তাহে হাইকোর্টে শুনানির দিন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাজির ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় রাজি না থাকলেও, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বিবাহ বিচ্ছেদে অনড় ছিলেন। দু-দুবার আপসে মামলা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছিলেন বিচারক। সেই সময় দুজনকে আদালতে হাজিরার জন্য বিচারক বললেও হাজির হননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে, রত্না চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আইন তাঁর কাছে বড়।
এপ্রিলেই একাধিকবার শোভন চট্টোপাধ্যায় ও রত্না চট্টোপাধ্যায় একে অপরের বিরুদ্ধে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়া, কিংবা নজরদারি চালানোয় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। মেয়র পত্নী বাড়িতে বাউন্সার নিয়োগ নিয়ে পর্ণশ্রী থানায় অভিযোগ করেছিলেন।
এর আগে পর্ণশ্রী থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পর্ণশ্রীর মহারানি ইন্দিরা দত্ত রোডের বাড়ির নিরাপত্তায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছিলেন মেয়র। বাড়িতে ঢোকার সময় যে কাউকে খাতায় নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছেন স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন মেয়র।
মেয়রের অভিযোগ ছিল, পৈতৃক বাড়িতে তার বহু সম্পত্তি রয়েছে। এমন কী মামলার নথিও রয়েছে। সেসব নথি ও সম্পত্তি হাতানোর আশঙ্কাও করেছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সব কিছুর পিছনেই তাঁর স্ত্রী। এমনটাই অভিযোগ ছিল মেয়রের।
মে মাসের শেষের দিকে গোলপার্কের ফোর্ট লিজেন্ডের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। দাবি, ছিল মেয়ের ভিসার কাগজে সই। যদিও মেয়রের দাবি করেন তিনি অসুস্থ। আর তাকে দিয়ে ভুয়ো কাগজে সই করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পাল্টা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। পরে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সেখান থেকে সরানো হয়।