ঠিকানা বদলাচ্ছে শতাব্দি প্রাচীন আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের!
কলকাতা, ১১ অগাস্ট : ঠিকানা বদলাতে চলেছে শতাব্দিপ্রাচীন আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের। ঐতিহ্যশালী এই কারাগারটি স্থানান্তরিত হতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনারই বারুইপুরের একটি ক্যাম্পাসে। সরকারি সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সদর শহর হল বারুইপুর। সেখানেই সংশোধনাগার তৈরি করে আলিপুরের বর্তমান সংশোধনাগারটিকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হবে। জানা গিয়েছে, এই সংশোধনাগারটি স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়ার পরে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার ও মহিলাদের জন্য থাকা একমাত্র সংশোধনাগারটিকেও বাইপাসের ধারে কোনও এক জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
যদিও পরের দুটি সংশোধনাগার কবে সরবে সেবিষয়ে এখনও স্থির সিদ্ধান্ত নেয়নি রাজ্য সরকার। আলিপুর জেলের স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন কিছুটা এগিয়ে গেলে তবে সেদিকে নজর দেওয়া হবে। সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপরেই সবকিছু নির্ভর করবে।
গত বিধানসভা অধিবেশনেই আলিপুর জেল বারুইপুরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পাশ হয়েছে। আলিপুর জেলটিতে সবমিলিয়ে জায়গা রয়েছে ২৬ একর। তবে বারুইপুরের যে জমিটিতে সংশোধনাগার গড়ে উঠবে তা মাত্র ১৮ একর জায়গা। যদিও তাতে খুব একটা অসুবিধা হবে বলেই জানানো হয়েছে। বাকী আরও ২ একর জায়গা চাওয়া হয়েছে। সেখানে জেল আধিকারিক কর্মীদের থাকার জায়গা গড়ে উঠবে।
আপাতত কারা দফতরের মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব সামলানো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পাঁচ বছরের মধ্যেই বারুইপুরের সংশোধনাগার তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে। এবছরের মধ্যেই বিল্ডিং তৈরির কাজ শুরু হবে।
আলিপুরের জেলে ১৫০০টি ঘর রয়েছে। এছাড়াও আরও নানা জায়গা রয়েছে। স্থানান্তরিত হওয়ার পরই এই জেলটিকে মিউজিয়াম হিসাবে গড়ে তোলা হবে। একইসঙ্গে এই জায়গাটিকে হেরিটেজ সাইটের মর্যাদাও দেবে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, ১৯১০ সালে শুরু হয় আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের যাত্রা। ইতিহাসের পাতায় এর স্থান চিরকাল অক্ষয় হয়ে থাকবে। বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনেককেই এই জেলে থাকতে হয়েছে ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচারে বন্দি হয়ে। এর মধ্যে রয়েছেন অরবিন্দ ঘোষ, সুভাষচন্দ্র বসু, বিধানচন্দ্র রায়, চারু মজুমদার, প্রমোদরঞ্জন চৌধুরীর মতো খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব। সেই জেলই এখন ঠিকানা বদলাতে চলেছে।