বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে কলকাতায় এসে শাশুড়িকে খুন করে আত্মঘাতী অমিত
ফুলবাগানে শাশুড়িকে খুন করে জামাইয়ের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেঙ্গালুরুতে থাকা স্ত্রীকে খুন করে কলকাতায় ফিরে শাশুড়িকে গুলি করে মারেন ফুলবাগানের এক ব্যক্তি। এরপর নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, অমিত আগরওয়াল (৪২) নামে ওই ব্যক্তি আগে বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে নিজের স্ত্রীকে খুন করেন। দেহ ফেলে রেখে দেন ফ্ল্যাটেই। এরপর স্পাইস জেটের বিমানে চড়ে আজই কলকাতায় ফেরেন তিনি।
শহরে ফিরেই কলকাতার ফুলবাগানে শ্বশুরবাড়িতে যান অমিত। সেখানে শাশুড়িকে গুলি করে মারেন। শ্বশুর পাশের ফ্ল্যাটে পালিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান। এরপর পুলিশ এসে দরজা খুললে দেখতে পায় নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন অমিত নামে ওই ব্যক্তি।
পুলিশ জানিয়েছে, অমিতের শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়া পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ফুলবাগানের রামকৃষ্ণ সমাধি রোডের অভিজাত রামেশ্বরম আবাসনে থাকেন।
তিনতলায় তাঁর ফ্ল্যাট। এদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ অমিত হঠাৎ করে হাজির হন শ্বশুরের ফ্ল্যাটে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে অমিতের সঙ্গে বচসা বাঁধে। সেই বচসা থামানোর চেষ্টা করেন সুভাষের স্ত্রী ললিতা।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, সেই বচসার মধ্যেই হঠাৎ ললিতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন অমিত। খুব কাছ থেকে গুলি করা হয় ললিতাকে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মেঝেতে পড়ে যান ললিতা। সেই সময় ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান সুভাষবাবু। তিনি বাইরে থেকে ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ করে দিয়ে এক প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটে আশ্রয় নেন।
ফ্ল্যাটের ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া তাঁর সুইসাইড নোট থেকে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, স্ত্রী শিল্পীর সঙ্গে অমিতের বিবাহবিচ্ছেদ মামলা চলছিল। বেঙ্গালুরু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা বিষয়টি নিশ্চিত করে। সেখানে একটি ফ্ল্যাটে শিল্পীর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বেঙ্গালুরু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানায়, তদন্তকারীদের অনুমান গলা টিপে খুন করা হয়েছে শিল্পী আগরওয়ালকে। সোমবার সন্ধ্যায় যখন শিল্পীর ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয় তখন পচন ধরতে শুরু করে দিয়েছিল। দেহের পচনের ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ২৪ ঘন্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুন করা হয়েছে শিল্পীকে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শিল্পী এবং অমিত দু'জনেই পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তাঁরা বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। ফুলবাগানে শ্বশুরবাড়িতে অমিত ছ'ঘড়ার একটি রিভলভার ব্যবহার করেছেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, অন্তত চার রাউন্ড গুলি চলেছে ফুলবাগানের ওই ফ্ল্যাটে।
ওই প্রতিবেশীর ফ্ল্যাট থেকেই ফুলবাগান থানায় ফোন করেন সুভাষ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দেখে, ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ললিতা এবং কিছুটা দূরে অমিত।