পোশাকে লিখতে হবে 'প্রেস',তবেই রেহাই দেবে পুলিশের লাঠি, যা বললেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার
বামেদের নবান্ন অভিযানের দিন,কলকাতার রাস্তায় সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনায় এখনও কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারলনা কলকাতা পুলিশ।
বামেদের নবান্ন অভিযানের দিন, কলকাতার রাস্তায় আচমকা সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনায়, এখনও কোনও সুস্পষ্ট জবাব দিতে পারলনা কলকাতা পুলিশ। এবিষয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনর রাজীব কুমারের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হলে ,তিনি কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি সাংবাদিকদের। তবে তিনি জানিয়েছেন , সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনাকে তিনি সমর্থন করেননা।
মূলত সোমবার কলকাতার রাস্তায় সাংবাদিকদের নিগ্রহের পর , অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতীম সরকার দাবি করেন, যে মাত্র ৩ জন সাংবাদিক ঘটনায় আহত হয়েছেন। অথচ বাস্তবে পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত চিত্র সাংবাদিক ও সাংবাদিকদের সংখ্যা ৩০ জন। একের পর এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কীভাবে পুলিশ কর্তাদের সামনে নির্দিধায়, নির্দয়ভাবে মেরে চলেছে পুলিশ। রেয়াত করা হয়নি মহিলা সাংবাদিকদেরও।
পাশপাশি কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার জানান, এরপর থেকে ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত সংবাদকর্মীদের একটি করে জ্যাকেট দেওয়া হবে। যাতে লেখা থাকবে 'প্রেস' কথাটি। যাতে কেউ বলতে না পারেন যে 'চিনতে পারিনি'। তবে পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের পরও , বেশ কয়েকটি দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। প্রথমত ঘটনার দিন প্রতিটি জায়গাতেই উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কর্তারা। তাঁরা সাংবাদিকদের চেনেনা এমনটা কী হতে পারে? তাছাড়া ক্যামেরা, চ্যানেলের 'বুম' হাতে কর্তব্যরত সংবাদকর্মীদের দেখে কী চেনা যায়নি যে তাঁরা সংবাদকর্মী? তাহলে কেন এই লাঠিচার্জ পুলিশের?
সোমবারের ঘটনার বিষয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন,'ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে শনাক্তকরণের কাজ সুরু করা হয়েছে। তারপর ডেকে পাঠানোর কাজ শুরু হবে।' উল্লেখ্য়, এর আগে সোমবারের সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয় কলকাতা পুলিশের তরফে। সেই মত রাজীব কুমারের নির্দেশ তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার।
ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার দেখা করে রাজীব কুমারের সঙ্গে। প্রশ্ন ওঠে কীভাবে এগোবে প্রাথমিক তদন্তের কাজ? উত্তরে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ফুটেও খতিয়ে দেখা হবে। আলোচনা করা হবে সংবাদমাধ্যমের আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গেও । বয়ান রেকর্ড হবে অভিযু্ত পুলিশ অফিসারদেরও।
সূত্রের খবর, ঘটনার দিন পুলিশের দুই উর্দ্ধতন কর্তা ADCP অপরাজিতা রাই ও স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ডেপুটি কমিশনার মূরলীধর শর্মার সঙ্গে সাংবাদিকদের কথাকাটাকাটির জেরে শুরু হয় সাংবাদিকদের ওপর অকথ্য মার। ফাইবারের রুলারের ঘায়ে রক্ত ঝড়ে বহু সাংবাদিকের।তবে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত পুলিশ কর্মীকে তদন্তের জেরে ডাকা হবে, তাদের কাছ থেকে গোটা বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। রেকর্ড করা হবে তাদের বয়ানও।