বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ে দেশকে ‘পথ’ দেখাচ্ছেন মমতা! কঠোর সমালোচনা অধীরের
পঞ্চায়েত ভোটকে কার্যত প্রহসনে রূপান্তর করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
পঞ্চায়েত ভোটকে কার্যত প্রহসনে রূপান্তর করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে পঞ্চায়েত মামলার শুনানিতে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের কঠোর সমালোচনা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর কটাক্ষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশকে 'পথ' দেখাচ্ছেন কীভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট জেতা যায়। এ ঘটনা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।
[আরও পড়ুন:কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নাতীত নয়! একদফায় ভোট আটকানো যেত, বার্তা হাইকোর্টের ]
অধীর চৌধুরী বলেন, রাজ্যে ৫ কোটি ৮ লক্ষ ভোটার। এরই মধ্যে ভোটের আগে রাজ্যে ৩৪ শতাংশ আসনে জিতে গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। কী করে জিতেছেন? ভোটে না লড়ে গায়ের জোরে, বল্গাহীন সন্ত্রাস করে। ১ কোটি ৮৫ লক্ষ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে নিয়ে এই বিপুল সংখ্যক আসনে জিতেছে তৃণমূল। আজ পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটেনি গণতন্ত্রে। যে ঘটনা ঘটাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
তিনি এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে স্বৈরাচারী সরকার বলেও কটাক্ষ করেন। বলেন, এখানে ভোটের আগেই শাসক দলের প্রার্থীরা জয় পেয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের হাতে সার্টিফিকেট পর্যন্ত তুলে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ তা না দিয়েই মুরগির ডিম থেকে ছানা হয়ে যাচ্ছে। একটা দল বল্গাহীন সন্ত্রাস করে মনোনয়ন পেশ পর্বেই ২৫ শতাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে গেল। তারপর মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্বে তা বে়ড়ে দাঁড়াল ৩৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বলে দেবে রাজ্যে কী চলছে!
এ বিষয়ে তিনি কমিশনের সমালোচনাও করেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ভারতীয় সংবি্ধাননে নির্বাচন কমিশনকে স্বশাসিত সংস্থার মর্যাদা দিয়েছে। সেই কমিশন এ রাজ্যে কতটা নখদন্তহীন, তা বুঝিয়ে দিয়েছে। শুধু বখদন্তহীনই নয়, এই নির্বাচন কমিশন অবয়বহীন, কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কমিশন একতরফাভাবে শাসক দলকে সুবিধা দিয়ে গিয়েছে। তারই জেরে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে পড়ে রয়েছে। সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত আদৌ ভোট হবে কি না, হলে কবে হবে।
[আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ অন্ধকার! বাহিনী-যুদ্ধ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে গিয়েও নিস্ফলা ]
উল্লখ্য, হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বুধবার জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ না করেই কমিশন নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে। তাই ১৪ মে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্টকে আদালত প্রস্তাবিত দিন বলে মনে করছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
শুক্রবার রাজ্য ও কমিশন ভোট-নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করার পর সিদ্ধান্ত জানাবেন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। কিন্তু এদিন সেই মামলার শুনতে চাননি প্রধান বিচারপতি। তিিন বলেন, অন্য বেঞ্চের মামলার রায় না দেখে এই মামলার শুনানি সম্ভব নয়। মঙ্গলবার ফের মামলার শুনানি হবে।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোট-ভাগ্য নির্ধারণ করবেন প্রধান বিচারপতি, রাজ্য-কমিশন কি আদৌ তৈরি ]