যা-ই ঘটুক তৃণমূল বিরোধিতায় তাঁর অবস্থান বদলাবে না, মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে কী বললেন অধীর
মুখ্যমন্ত্রী যতই হাইকমান্ডের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলুন, যতই কংগ্রেস প্রার্থীর দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিন, তিনি যে তৃণমূল বিরোধিতায় একই অবস্থানে থাকবেন, বুঝিয়ে দিলেন অধীর চৌধুরী
ফের কোমর বেঁধেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মুখ্যমন্ত্রী যতই হাইকমান্ডের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলুন, যতই কংগ্রেস প্রার্থীর দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিন, তিনি যে একই অবস্থানে থাকবেন, তা বুঝিয়ে দিলেন অধীরবাবু। রাজ্যসভার ভোট থেকে পাহাড় পরিস্থিতি, বন্যা পরিস্থিতি থেকে ভাঙনের রাজনীতি- একযোগে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধলেন তিনি।
শনিবার রাখঢাক না করেই সাংবাদিক সম্মেলন করে অধীর চৌধুরী বলেন, নিজেদের স্বার্থেই রাজ্যসভায় কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছে তৃণমূল। এখানে তৃণমূল নেত্রীর মহানুভবতার কিছু নেই। এমন তো নয়, কংগ্রেসকে ভালোবেসে তিনি একটি আসন ছেড়ে দিয়েছেন। রাজ্যসভার ওই আসনে কংগ্রেসেরই, কংগ্রেসই জিতবে। তৃণমূল হারের ভয়েই ওই পদে কংগ্রেসের দিকে সমর্থনের হাত বাড়িয়েছে বলে দাবি তাঁর।
কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট সম্ভাবনা প্রসঙ্গেও অধীরবাবুর নিশানা মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, এখনও কংগ্রেসকে ভাঙার চেষ্টা করে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। যে কোনও মূল্যে রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে উঠেছে তৃণমূলের। সমতলে সেই কাজ প্রায় সেরে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে গিয়েছিলেন একই উদ্দেশ্যে। পাহাড়ে নেপালি ও বাঙালিদের মধ্যে বিরোধ তৈরি করেছেন তিনিই। কিন্তু পাহাড়ে যে জাতিসত্ত্বা সাংঘাতিক রূপ নিতে পারে তা কল্পনা করেননি। এখন সেই আগুনেই পুড়ছে পাহাড়। মুখ্যমন্ত্রী এর দায় এড়াতে পারে না।
এদিন পাহাড় পরিস্থিতি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা শোনা গেল অধীরের মুখে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কোনও সদিচ্ছা নেই পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না পাহাড়ে অশান্তির সমাধান হোক। পুরোটাই রাজনীতি চলছে। রাজনৈতিক ফায়দার লক্ষ্যেই তৃণমূল আর মোর্চা লড়াই চালাচ্ছে। পাহাড়ের মানুষের কথা ভাবছে না সরকার। ভাবছে না ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা। প্রায় দু'মাস ধরে অচল হয়ে রয়েছে রাজ্যের একটা অংশ। সরকারের সদিচ্ছাই নেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ম্যান মেড তত্ত্বের সমালোচনায় এদিন ফের সরব হন তিনি। বলেন, বন্যা ম্যান মেড হোক বা গড মেড হোক ত্রাণ বণ্টন নিয়ে এত গড়মসি কেন। কেন মানুষ ত্রাণ পাচ্ছেন না। দক্ষিণবঙ্গজুড়ে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে, সর্বত্র ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে না। মানুষ খেতে পাচ্ছে না। ত্রাণ শিবিরে হাহাকার পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র ঘাড়ে বন্যার দায় চাপাতেই ব্যস্ত। এটা সরকারের সঠিক ভূমিকা নয়। বন্যা রোধে ব্যর্থ হয়েছে তৃমমূল সরকার। এখন ত্রাণ-বণ্টনেও ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট। সেখানেও রাজনীতি হচ্ছে।