'শেষ লড়াইটা হেরেই গেলেন, সহযোদ্ধাকে হারালাম', ভাঙা গলায় বললেন সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী
'শেষ লড়াইটা হেরেই গেলেন বাবা', ভাঙা গলায় বললেন সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী
একের পর এক ধাক্কা। জীবনে একাধিকবার এসেছিল অতি কঠিন সময়। চোয়াল শক্ত করে সব যুদ্ধই হাসিমুখে জয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। হেঁটে এসেছিলেন সুদীর্ঘ পথ। পরিশেষে ক্লান্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন 'অপরাজিত'। শেষ লড়াইয়ে হার মানলেন অভিনেতা। ভেঙে পড়লেন তাঁর কন্যা পৌলমী বসু। তবু তিনি সাহস করে মাইক ধরলেন। স্মৃতিমেদুর হয়ে বললেন অনেকগুলি কথা।
আজ দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বেলভিউ ক্লিনিকের ডাক্তারদের কাছ থেকে সেই দুঃসংবাদ পেয়ে প্রাথমিকভাবে ভেঙে পড়েন অভিনেতার কন্যা পৌলমী বসু। মাইক হাতে ভাঙা গলায় জানালেন, 'ভেবেছিলাম বাবা শেষ লড়াইটা জিতে যাবেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারলেন না'। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চলে গেলেও তাঁর কাজ জীবন্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন পৌলমী দেবী। বললেন, 'বাবার মৃত্যু হবে না, উনি মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন'। প্রয়াত অভিনেতার সকল গুনমুগ্ধ এবং অনুরাগীকে সান্ত্বনাও জানিয়েছেন পৌলমী বসু।
অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনা আক্রান্ত হয়ে বেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার পর, তাঁর অধিকাংশ চিকিৎসা খরচ হাতে তুলে নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সৌমিত্র-কন্যা। বেলভিউ-এর যে সকল ডাক্তার কিংবদন্তি অভিনেতাকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পৌলমী বসু। বলেছেন, অভিনেতা কেবল তাঁর কাছে কেবল অভিভাবক নয়, বন্ধু, সহযোদ্ধা এবং সহকর্মী ছিলেন। এই দুর্দিনে বাবার প্রয়াণে তিনি অসহায় হয়ে পড়লেন বলেও জানিয়েছেন পৌলমী বসু।
পৌলমী দেবী এবং মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো, বেলভিউ ক্লিনিক থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শবদেববাহী শকট তাঁর গল্ফগ্রীনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিংবদন্তি অভিনেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকে টেকনিশিয়ান স্টুডিও হয়ে ফেলুদার মরদেহ রবীন্দ্রসদনে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বিকেল পাঁচটায় কেওড়াতলা মহাশ্মাশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন কন্যা পৌলমী বসু।