রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সরব গেরুয়া ছাত্র সংগঠন, বিকাশ ভবনে উত্তেজনা
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছে রাজ্য। আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে হাজিরা দিতে বলেছে সিবিআই। না হলে তা হেফাজতে নেওয়া হবে। বিচারকরা জানাচ্ছেন তিনি একমাত্র অব্যাহতি পেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের হাত ধরে। এসব কিছু নিয়েই মূলত এই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি তার বিরুদ্ধেই পথে নামল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা গেরুয়া ছাত্র সংগঠন।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ দক্ষিণবঙ্গ প্রান্তর পক্ষ থেকে আজ বিকাশ ভবন চলো কর্মসূচি নেওয়া হয়। তাঁদের প্রথম দাবী দুর্নীতি মুক্ত শিক্ষ। দ্বিতীয় দাবি ছিল রাজ্যের নারী সুরক্ষা। এই দুই বিষয় নিয়ে মূলত শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়ে বিকাশ ভবন অভিযান করে এবিভিপি'র দক্ষিনবঙ্গ শাখা। সল্টলেক সিটি সেন্টার ওয়ান থেকে দুপুর ১টায় শুরু হয় মিছিল। ধীরে ধীরে তা পৌঁছে যায় বিকাশ ভবনের সামনে। সেখানে গিয়ে তাঁরা স্লোগান দিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সঙ্গে ছিল তাঁদের গেরুয়া পতাকা। বিকাশ ভবনের ভিতরে ঢুকতে না পারলেও বাইরে দাঁড়িয়েই শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সরব হয় এবিভিপি।
সম্প্রতি এবিভিপি সরব হয়েছিল কলকাতা , যাদবপুর - সহ ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম ভেঙে যেভাবে উপাচার্য নিয়োগের অভিযোগ তুলে। তাঁরা বলেছিল বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা সার্কাসে পরিণত হয়েছে। এবিভিপি দক্ষিণবঙ্গ প্রান্ত রাজ্য সম্পাদক সঙ্গীত ভট্টাচার্য বলেছিলেন , পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির আখড়ায় পরিণত করার অনেক উদাহরণ বর্তমান রাজ্য সরকার আমাদের কাছে তুলে ধরেছে। তারমধ্যে অন্য আর একটি জঘন্যতম হলো উপাচার্যের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে দূর্নীতি। কলকাতা , যাদবপুর , প্রেসিডেন্সি , রবীন্দ্রভারতী - সহ রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে যেভাবে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে তা শিক্ষাব্যবস্থাকে রাজনীতিকরণ করার চূড়ান্ত তম উদাহরণ। গত ডিসেম্বর মাসে মহামহিম রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মহাশয়ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন । রাজ্যপালের দেওয়া তালিকায় গৌড়বঙ্গ , আলিপুরদুয়ার এবং বর্ধমানের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ছিল ।"
আরও বলেছিলেন , "ইউ.জি.সি ( বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ) নির্ধারিত নিয়ম তোয়াক্কা না করে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের বিরুদ্ধে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ তীব্র বিরোধিতা ও ধিক্কার জানাই। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে যে জনস্বার্থ মামলা চলছে তাতে মহামান্য আদালত সঠিক তদন্ত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনবেন এবং ইউ.জি.সি নিয়ম মাফিক নিয়োগের পক্ষে রায় দেবেন বলে আমরা আশা করি। এবং সেইসাথে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া কে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতি বারবার সামনে আসছে তার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে একত্রিতভাবে সোচ্চার হতে অনুরোধ করা হচ্ছে।"
এদিন রাজ্যে নারী সুরক্ষা প্রসঙ্গে এবিভিপি বলে , এক মাসে ১৩ জন নারীর উপর কোথাও ধর্ষণ, কোথাও খুন এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূল সরকার যে সংস্কৃতির লুণ্ঠন চালাচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কলেজ পড়ুয়া যুবসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে,এই জন্য দায়ী বর্তমান অযোগ্য অপদার্থ সরকার ও প্রশাসনিক বিভাগ। তারা সবাই "ঠুটো জগন্নাথ"।
দিন দিন এমন বেড়ে চলা ঘটনার দাবি জানিয়ে সোচ্চার হয় তাঁরা । এবিভিপি বলে, "মুখ্যমন্ত্রীর অপশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। নারী হয়ে নারী সুরক্ষা দিতে যিনি অক্ষম , তার অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার। পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে এবিভিপি। বাংলার এই চিত্রের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যার্থী পরিষদ রাস্তায় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে |"