চোখে পেরেক নিয়ে হাসপাতালের দোরে দোরে ঘুরল ৮ বছরের বালক, কী হল তারপর
চোখে পেরেক নিয়ে কলকাতার সরকারি হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরল আট বছরের বালক। শেষে এনআরএস হাসপাতালে অস্ত্রোপচার। উদ্বেগপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর ।
চোখে পেরেক ঢোকা অবস্থাতেই একের পর এক সরকারি হাসপাতালর দরজায় ঘুরতে হল ছোট্ট করিম মোল্লাকে। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর অবশেষে তাকে ভর্তি করিয়ে অস্ত্রোপচার হল এনআরএস হাসপাতালে। আপাতত বিপন্মুক্ত হলেও মস্তিষ্কের ক্ষতি নিয়ে চিন্তায় চিকিৎসকেরা। এই ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করে রবিবার বারবার করিমের খোঁজ নিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুমিরমারির বাসিন্দা করিম মোল্লা বাঁশের মাচা থেকে পড়ে যায়। বাঁশের মাচায় থাকা একটি বড় পেরেক তার চোখে গেঁথে যায়। তড়িঘড়ি তাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে তাকে কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু কলকাতায় তার জন্য কী হয়রানি অপেক্ষা করছিল তা হয়ত স্বপ্নেও ভাবেনি করিম। ন্যাশনাল মেডিক্যাল তাকে ফেরানোর পর এসএসকেএম হাসপাতালও তাকে বাঙুল হাসপাতালে রেফার করে। সেখানেও গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে করিমের পরিবারকে। বাঙুর থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর পর সেখানে ভর্তি নেওয়া হয়নি করিমকে। অবশেষে এনআরএস হাসপাতালে ঠাঁই হয় তার। কিন্তু ততক্ষণে সাত ঘন্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এরপর সংবাদমাধ্যমের উদ্যোগে করিমের চোখের অস্ত্রোপচারের তোড়জোর শুরু হয়। রাতেই অস্ত্রোপচার করে চোখ থেকে পেরেকটি বের করেন চিকিৎসকেরা।
অপরদিকে রবিবার করিমের অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। তবে তার দৃষ্টিশক্তি থাকবে কিনা সেবিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা। আপাতত পেরেক ঢুকে তার মস্তিষ্কে যে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে, তা নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা।
এদিকে এই ঘটনা কানে যেতেই উদ্বেগপ্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বেশ কয়েকবার ফোন করে করিমের খোঁজ নেন তিনি। ছুটির দিনেও এনআরএস-এর ডেপুটি সুপারকে হাসপাতালে থাকার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে কেন শনিবার সারাদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল করিমকে ফিরিয়ে দিল তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।