১০ শিশুকে মেরে পুতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, বিস্ফোরক তথ্য পেল সিআইডি
তদন্ত শুরু হতেই ১০ শিশুকে মেরে পুতে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঠাকুরপুকুরের ‘পূর্বাশা’ হোমের অন্যকর্মীদের জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে দাবি সিআইডি-র।
কলকাতা, ২৬ নভেম্বর : শিশু পাচার চক্রে বিস্ফোরক তথ্য উঠে এল সিআইডি-র হাতে। তদন্ত শুরু হতেই ১০ শিশুকে মেরে পুতে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ঠাকুরপুকুরের 'পূর্বাশা' হোমের অন্যকর্মীদের জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে দাবি সিআইডি-র।
শিশু পাচার চক্রের তদন্ত শুরু হতেই ফেরার হয়ে যায় শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নিযুক্ত দুই কর্মী। এদিকে গতকাল রাতেই এই শিশুপাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে গ্রিন পার্কের বৃদ্ধাশ্রম মালিক বিমল অধিকারীকে। তাঁকে জেরা করে এই তথ্য সত্যাসত্য খতিয়ে দেখা হবে।
অভিযোগ, এই বিমল অধিকারীই সহযোগী বাসন্তীকে নিয়ে গত ১০ নভেম্বর পূর্বাশা হোমে রেখে যায় ১০ শিশুকে। ওই ১০ কন্যা সন্তান বিক্রি না হওয়ায় ঠাকুরপুকুরের মানসিক প্রতিবন্ধীদের হোমের তিনতলায় 'মজুত' করে রাখা হয়েছিল। এ থেকেই সিআইডি-র কাছে স্পষ্ট হয় গ্রিনপার্ক বৃদ্ধাশ্রমের মালিক বিমল অধিকারীর সঙ্গে পূর্বাশার মালকিন রিনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগাযাগ ছিল। দুই হোম মালিকই এই শিশু পাচার চক্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।
বাদুড়িয়ার সোহান নার্সিংহোমে শিশু পাচার চক্রের তদন্ত নেমে কলেজ স্ট্রিট ও বেহালার নার্সিংহোমের 'কীর্তি' সামনে আসতেই পূর্বাশায় রাখা ১০ শিশুকে মেরে পুতে দিতে বলা হয়। যে দু'জন কর্মী শিশুদের দেখভালের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল তাঁদেরই এই নির্দেশ দেওয়া বলে জানা গিয়েছে। পূর্বাশার অন্য কর্মীদের জেরা করে এই তথা পেয়েছে সিআইডি। কিন্তু ঠাকুরপুকুরে পূর্বাশা হোমে হানা দেওয়ার আগেই তারা পালিয়ে যায়।
ফেরার দুই কর্মীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিআইডি। সিআইডি-র দাবি, ওই দুই কর্মীকে পেলে অনেকাই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কে বা কারা তাঁদের ওই নির্দেশ দিয়েছিল। সিআইডি আরও মনে করছে উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার নার্সিংহোম ও মছলন্দপুরের ট্রাস্টের সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন হোমের যোগাযোগ ছিল। এই হোমগুলিতে তারা সদ্যোজাতদের এনে রাখত। যতদিন না বিক্রি হয় শিশু, ততদিন ওই হোমগুলিই হত শিশুদের অস্থায়ী ঠিকানা। সিআইডি এই ঘটনায় আরও অনেক নার্সিংহোম ও হোমকে আতস কাচের তলায় রেখেছে।