করোনার চিনা ও ইউরোপীয় প্রজাতিই সর্বাধিক সংক্রমণ ছড়িয়েছে ভারতে, বলছে গবেষণা
করোনার চিনা ও ইউরোপীয় প্রজাতিই সর্বাধিক সংক্রমণ ছড়িয়েছে ভারতে, বলছে গবেষণা
ভারতে কার্যকর করোনার প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১৯৮, যার মধ্যে সর্বাধিক সংক্রমণ ছড়িয়েছে ইউরোপ ও চিন থেকে আগত প্রজাতি গুলিই। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। জিওল্যজিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়া বা জেডএসআই-র সমীক্ষার হাত ধরে এই তথ্য উঠে আসে বলে জানা যাচ্ছে।
কি বলছেন গবেষকেরা ?
সূত্রের খবর, সব থেকে বেশি করোনার প্রজাতির খোঁজ গুজরাট, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও দিল্লিতে পাওয়া গেছে। জেডএসআইয়ের কলকাতা শাখার অধিকর্তা কৈলাস চন্দ্রের মতে, "প্রায় ৪০০ জিনোম পরীক্ষা করে করোনার ১৯৮টি রকমফের পাওয়া গেছে, যার অর্থ দেশে প্রবেশের পূর্বে বা পরে ভাইরাসটি প্রায় কমপক্ষে ১৯৮ বার অভিযোজিত হয়েছে।" গবেষণার দায়িত্বে ছিলেন জেডএসআইয়ের ৭ বিজ্ঞানী। গবেষক দলের তরফে ভীম জোশি জানিয়েছেন, "জিআইএসএআইডি-এর মার্চের শুরু থেকে মের শেষ পর্যন্ত যে তথ্যভাণ্ডার, তা থেকে প্রায় ৩৭০০০ জিনোম পাওয়া যায়, যার মধ্যে ৫৫০টিই ভারতীয়। দিল্লি, কর্ণাটকের মত জায়গার জিনোমে করোনার রকমফের দেখা গেলেও উত্তর-পূর্ব ভারতে জীবাণুর চরিত্রে বিশেষ বদল হয়নি।"
করোনার চিনা ও ইউরোপীয় প্রজাতিই সর্বাধিক সংক্রমণ ছড়িয়েছে ভারতে
গবেষক দলের প্রধান মুকেশ ঠাকুর জানান, "আমরা দুইরকমের করোনা জীবাণুকে অতিসক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করেছি, একটি চিনের উহানের ও অন্যটি ইউরোপের।" এরই মধ্যে দিল্লিতে ৩৯ রকমের, আহমেদাবাদে ৬০ রকমের এবং তেলেঙ্গানায় ৫৫ রকমের করোনার প্রজাতি দেখা গেছে। ভীম জোশি আরও জানান, "পরবর্তীকালে ইতালি থেকে আসা করোনার বেশ খানিকটা বেশি প্রভাব দেখা গেলেও আমরা ওটিকেও ইউরোপীয় প্রজাতির আওতাতেই ফেলেছি। ইরান ও দুবাইয়ের করোনা জীবাণুর প্রভাব তুলনামূলক ভাবে যথেষ্ট কম।"
ভারতে করোনার প্রবেশ চিন থেকে
সূত্রের খবর, ভারতের প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি পড়াশোনার সূত্রে চিনের উহানে থাকতেন বলে জানা গেছে। ৩০শে জানুয়ারি চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওই ছাত্রের শরীরে প্রথম প্রাণঘাতী করোনা উপস্থিতির কথা জানা যায়। পাশাপাশি ২রা মার্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সূত্রে জানা যায়, দুবাই ও ইতালি ফেরত দুই ভারতীয় করোনা আক্রান্তের কথা। এদিকে গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অভিষেক সিং জানিয়েছেন, "২০০ রকমের প্রজাতির মধ্যে সর্বাধিক অভিযোজিত জীবাণুটির নাম দেওয়া হয়েছে ডি৬১৪জি। ভারতে এর মারাত্মক প্রভাব দেখা না গেলেও ইউরোপ ও আমেরিকায় এটি বারংবার নিজের রূপ পরিবর্তন করেছে।"
প্রতিষেধক আবিষ্কারের পথ দেখাতে পারে অভিযোজন
অভিষেক সিং আরও জানান, "অভিযোজন কিভাবে ভাইরাসকে সাহায্য করছে এবং কিভাবে ভাইরাসকে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে যাতায়াতেও সহায়তা করছে, তা গবেষণাধীন।" আরেক গবেষক জোশি জানিয়েছেন, "প্রত্যেক ভাইরাসই সময় ও পরিবেশের সাথে সাথে অল্পসময়ের মধ্যে অভিযোজিত হয়। কিন্তু এই অভিযোজনের পথ বুঝতে পারলে প্রতিষেধক আবিষ্কারের ক্ষেত্রে তা সহায়ক হতে পারে।" ভাইরাসের চরিত্র বুঝতেও এটা থেকে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে মনে করছেন ভাইরোলজিস্টরা।
জানুয়ারিতেই হয় দিল্লি হিংসার পরিকল্পনা, দিল্লি পুলিশকে বিস্ফোরক তথ্য দিল তাহির হুসেন