প্রীতিভাজনেষু: আপনাদের প্রশ্ন, সম্পাদকের জবাব
আপনাদের প্রশ্ন, সম্পাদকের জবাব
আর মাত্র সপ্তাহ তিনেক পরেই রাশিয়াতে শুরু হতে যাচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল। আমাদের অনলাইন, সোশাল মিডিয়া, রেডিও এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠানে কীভাবে ফুটবলের এই বিশাল উৎসবের বিভিন্ন দিক আপনাদের কাছে নিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।
পরিবেশনা যেন ভাল হয়, সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে লিখেছেন গোপালগঞ্জের সুলতানশাহী থেকে ফয়সাল আহমেদ সিপন:
''চলতি সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতে প্রিয় খেলা ক্রিকেট হলেও ফুটবল বিশ্ব কাপ নিয়ে উৎসাহ, উত্তেজনার কমতি নাই। তাই আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপের খবর নিয়মিত ও বিস্তারিত ভাবে প্রচারের অনুরোধ করছি।''
খেলা তো সবাই সরাসরি টেলিভিশনে দেখবে মিঃ আহমেদ, তাই খেলায় কী হলো, কে কত গোল করলো, সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা ঠিক হবে না। খেলার ফলাফল তো অবশ্যই দেয়া হবে, কিন্তু আমরা আরো বেশি মনোযোগ দেবো খেলাকে ঘিরে অন্যান্য ঘটনার দিকে। যেমন, খেলার গুরুত্বপূর্ণ বা মজার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা, খেলার মাঠের বাইরের ঘটনা, বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা কেমন আছেন, স্বাগতিক দেশ রাশিয়ার আয়োজন ইত্যাদি ভাল-মন্দ অনেক কিছু নিয়ে প্রতিবেদন, ছোট ভিডিও, অনেক কিছুই করার আছে।
গত সপ্তাহের প্রীতিভাজনেষুতে নিয়মিত পত্রলেখক বিলকিস আক্তারের দুটি ঠিকানা, রংপুর এবং কুড়িগ্রাম নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করে আমিই প্রশ্ন করেছিলাম। মিস আক্তার আমার প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন:
''গত ১১ই মে'র বিবিসি বাংলা'র প্রীতিভাজনেষুতে লিখেছিলাম যে, অনুষ্ঠানটি এখন আর আগের মত অতটা জনপ্রিয় নয়। আমার এই সামান্য কথাটি বিবিসি বাংলা'র সম্পাদক এত সুন্দরভাবে মনে রাখায় ওনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ই মে প্রীতিভাজনেষুতে উনি জানতে চান, আমি বিলকিছ আক্তার কাউনিয়া, রংপুর থেকে কুড়িগ্রামের ঠিকানা হলাম কি করে?
''তার জবাবে আমি বলছি জনাব, আমার গ্রামের বাড়ী কাউনিয়া এবং আমার বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজ। সেখানে আমি রসায়নে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করছি। এত ছোট্ট একটা বিষয় আপনি বুঝতে পারবেন না, তা হয় কি করে? এখন আপনার কাছেই জানবো কোন ঠিকানায় লিখলে বিবিসি আমাকে মূল্যায়ন করবে?''
এত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে আমার বিভ্রান্তি দূর করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ মিস আক্তার। পত্র লেখকের মূল্যায়ন কখনো তার ঠিকানার ভিত্তিতে করা হয়না। আপনি যেখান থেকে লিখছেন, তার ঠিকানা থাকলেই হবে।
বিলকিস আক্তার আমার বিভ্রান্তি দূর করলেও, অন্য একটি চিঠি আমাকে আবার বিভ্রান্তিতে ফেলেছে, তবে ভিন্ন বিষয়ে। এই বিভ্রান্তিমূলক চিঠি পাঠিয়েছেন জুনায়েদ আল-হাবিব:
''আমি নিয়মিত বিবিসি বাংলার রেডিও শুনে আসছি। যার সৃজনশীলতা আমাকেও নতুন কিছু ভাবতে শিখিয়েছে। সম্প্রতি বিবিসি বাংলা চ্যানেল আইতে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে আসছে। টিভিতে দেখতে না পেলে ইউটিউবে তা দেখি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, রেডিও অনুষ্ঠানে এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলা হয়, চোখ রাখুন জানালাতে। আচ্ছা তাহলে, জানালা কোথায়? এটাতো কোন স্পষ্ট অর্থ প্রকাশ করে না। যদি বলা হতো, চ্যানেল আইয়ের জানালাতে তবে তা শ্রোতাদের কাছে স্পষ্ট হতো বলে আমি মনে করি।''
বলতে পারেন আমি রীতিমত হতবাক! জানালাতে চোখ রাখতে বলার কোন অর্থ আসলেই নেই, তাহলে সেটা আমাদের রেডিও অনুষ্ঠানে বলা হবেই বা কেন? আপনি যদি আরেকটু মনোযোগ দিয়ে শোনেন তাহলে শুনতে পাবেন বলা হচ্ছে, ''চোখ রাখুন প্রতি শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায়, চ্যানেল আইতে।'' এখানে জানালার কোন নাম-গন্ধ নেই। 'ক্লিক' নিয়ে ঘোষণা শুনতে চাইলে নিচে ক্লিক করুন।
এবারে রেডিওতে অনুষ্ঠান শোনা নিয়ে একটি চিঠি, লিখেছেন হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ থেকে তরিকুল ইসলাম শান্ত:
''আমি বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠান গুলো শর্টওয়েভে শুনে থাকি।কিন্তু সবসময় ট্রানজিস্টার সাথে রাখতে পারিনা বলে মাঝে মাঝে অনুষ্ঠান শুনা মিস হয়ে যায়। আমি জানতে চাই, আমি যে এলাকায় আছি সে এলাকা থেকে কি এফ এম ব্যান্ডে বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠান শুনতে পারবো? যদি পারি কত মেগাহার্টজে পারবো?''
আপনার এলাকা থেকে সব চেয়ে কাছের এফ এম প্রচার কেন্দ্র বেশ দূরে মিঃ ইসলাম। নিঝুম দ্বীপের পূর্বে চট্টগ্রাম এবং উত্তরে বরিশাল থেকে আমাদের অনুষ্ঠান এফ এম এ সম্প্রচার করা হয়। কিন্তু সেই স্টেশনগুলোর সিগন্যাল নিঝুম দ্বীপে পৌঁছায় বলে আমার মরে হয়না। তারপরও আপনি ৮৮.৮ মেগাহার্টজে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
অনুষ্ঠান নিয়ে আরেকটি মেইল, আরেকটি প্রস্তাব। এবারে লিখেছেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে মেনহাজুল ইসলাম তারেক:
''সময়ের পরিক্রমায় বিবিসি বদলেছে ঠিকই কিন্তু তার সাথে সাথে ফোন ইন অনুষ্ঠানের ধাঁচটাও পরিবর্তনের সময় এসেছে বোধহয়। কারণ অনুষ্ঠানটি দীর্ঘদিন থেকে একইভাবে প্রচারিত হওয়াতে একঘেঁয়েমি ভাব চলে এসেছে। আশা করছি, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভাববেন।''
ফোন-ইন এমনি একটি অনুষ্ঠান যেটা নিয়ে বেশি নাড়া-চড়া সম্ভব না মিঃ ইসলাম। ফোন-ইন মানেই শ্রোতারা ফোন করে আলোচিত বিষয় নিয়ে তাদের মন্তব্য দিবেন। যাতে একঘেঁয়েমি না হয় সেজন্য আমরা প্রতি সপ্তাহে আলোচনার জন্য ভিন্ন কিন্তু প্রাসঙ্গিক বিষয় বাছাই করি। আমরা চেষ্টা করি যাতে নতুন কলাররা সুযোগ পান এবং অনুষ্ঠানে ভিন্ন মতের সমারোহ ঘটে।
ফোন-ইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের অংশ গ্রহণ এবং মতামত দেবার সুযোগ সৃষ্টি করা। সেই লক্ষ্য বজায় রেখে ফোন-ইনে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা আমরা অবশ্যই করবো।
ফোন-ইনের কয়েকটি দিক নিয়ে মন্তব্য এবং প্রশ্ন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে লিখেছেন ওবায়েদুল ইসলাম উজ্জ্বল:
''আপনারা বলে থাকেন, ফোন-ইনে যোগ দিতে চাইলে ফোন করে নাম দিন, অনুষ্ঠানের আগেই আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করবো। আমি তাই করলাম আর আপনাদের একজন অনুষ্ঠানের আগে আমাকে ফোন করে বললেন, আর ১০ মিনিট আছে অনুষ্ঠান শুরু হতে, আপনি রেডি হন বা প্রস্তুত হন। আমি আমার মন্তব্য যা যা বলার গুছিয়ে কাগজে লিখে হাতে নিয়ে বসে রইলাম। কিন্তু আপনাদের কোন ফোন আসে না।
''এভাবে কাজ-কর্ম ছেড়ে অপেক্ষায় ঘণ্টা পার হয়। আপনি কি মনে করেন এখানে আপনাদের কোন কথা ভুল আছে, বা শ্রোতাদের কোথাও ভুল হচ্ছে? আর শেষ কথা, আমরা ফোন-ইনে যোগ দিয়ে কী বলবো বা না বলবো, তা আপনাদের কেন আগে জানাতে হবে?''
সত্যি কথা বলতে, ফোন-ইনের এই ধরণটা এখন বলতে পারেন অর্থহীন হয়ে গেছে। আগে যখন ফোন-ইন লন্ডন স্টুডিও থেকে পরিচালনা করা হতো, তখন আমরা শ্রোতাদের কল করতাম, যাতে অংশগ্রহণকারীকে আন্তর্জাতিক কল করে মোটা অংকের বিল না দিতে হয়।
কিন্তু এখন ফোন-ইন ঢাকা থেকেই করা হয়, কাজেই শ্রোতাদের সরাসরি ফোন করে অংশগ্রহণ করতে কোন অসুবিধা থাকার কথা নয়। তবে আমাদের নতুন অফিসে না যাওয়া পর্যন্ত সেরকম কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। এখন আমরা ঢাকায় যে সাময়িক অফিসে আছি, সেখানে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
আর আপনারা কী বলবেন সেটা জানতে চাওয়া হয় কয়েকটি কারণে। প্রথমত, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে সবাই নির্ধারিত বিষয় নিয়েই কথা বলবেন। দ্বিতীয়ত, আমরা এটাও নিশ্চিত করতে চাই, যে কেউ এমন কিছু বলবে না যেটাতে মানহানি বা আদালত অবমাননা হবার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া, একটি বিষয় নিয়ে যাতে শুধু একই মত না প্রচার হয়, সেদিকটার দিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হয়।
ঢাকার এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন সেখানে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। সংকট কতটা প্রকট তা আমার জানা নেই, তবে ধানমন্ডির বাসিন্দা কামাল হোসাইনের মতে পরিস্থিতি বেশ খারাপ:
''আমি বর্তমানে ঢাকার পশ্চিম ধানমন্ডির শঙ্কর এলাকাতে থাকি। এই এলাকায় সকাল ৯টা হতে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সারা বছরই গ্যাস থাকে না। আর এই রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে গ্যাস সকাল ১০টা হতে সন্ধ্যা ৬.৩০ পর্যন্ত থাকে না। ইফতারি তৈরি করা এবং সেহরির রান্না করার জন্য গ্যাস পাওয়া যায়না। আর গ্যাস ঠিক ৬.৩০টা থেকে রাত ৮.টা পর্যন্ত ভাল ভাবে থাকে তারপর আবার নিভু নিভু করে জ্বলে। যা রান্না করার জন্য কষ্টদায়ক। পুরা ঢাকার শহরেই গ্যাসের সমস্যা বিরাজ করছে। গ্যাসের এই সমস্যা থেকে কি আদৌ পরিত্রাণ পাবে না নগরবাসী?''
ভাল প্রসঙ্গ টেনেছেন মিঃ হোসাইন। ঢাকা শহরে যদিও গ্যাস সরবরাহ বেশ কিছুদিন ধরেই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে, রমজান মাসে রান্না ঘরে গ্যাস না থাকলে সেটা মানুষকে অবশ্যই হতাশ করবে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত ঢাকাবাসীকেও হয়তো ভবিষ্যতে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের পরিবর্তে সিলিন্ডারের গ্যাস দিয়ে রান্না-বান্না করতে হবে।
বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা নিয়ে রেডিওতে প্রচার হওয়া ধারাবাহিক প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করে লিখেছেন ভোলার লালমোহন থেকে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান:
''কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কে চলতি সপ্তাহের প্রবাহ অনুষ্ঠানে আকবর হোসেনের প্রতিবেদনগুলি যেমন শুনেছি, তেমনি বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটেও মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। তার প্রতিবেদনে কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। তবে আমার মনে হয় প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় তুলে ধরা হয়নি।
''তাহলো, মধ্যযুগে মুসলমানরা জ্ঞানবিজ্ঞানে বেশ অগ্রগামী ছিল। বিজ্ঞানের ভিত্তিভূমি রচিত হয়েছিল মুসলিম বিজ্ঞানী ও মনীষীদের হাত ধরে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, কওমি মাদ্রাসা বিজ্ঞান চর্চাকে বাদ দিয়ে এখনও শুধু হাদিস ও ফিকাহ শাস্ত্রকে আঁকড়ে আছে।
''তারা যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে কুরআন গবেষণার পাশাপাশি ইংরেজি ও অঙ্কশাস্ত্রকে এখনও আয়ত্ত করতে পারেনি বা পারছে না। এ কারণে তারা চাকুরী বাকুরিতে পিছিয়ে পড়ছে এবং কাঙ্ক্ষিত কোন কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারছে না।
''সর্বোচ্চ দাওরাহ ডিগ্রি অর্জন করে ইংরেজিতে নাম ঠিকানা পর্যন্ত লিখতে পারে না। এ কারণে সরকারি স্বীকৃতির পরও তারা তুলনামূলক চাকুরীর প্রতিযোগিতায় কতটুকু টিকতে পারবে, সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ও গবেষণার বিষয়। তাদেরকে যুগের সাথে তাল মিলাতে হলে বর্তমান সিলেবাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। হতে হবে কুরআন গবেষণার পাশাপাশি প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার।''
আপনি ঠিকই বলেছেন মিঃ রহমান, আমার জানা মতে কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার মূল দুর্বলতাই হচ্ছে আধুনিক যুগের চাহিদা থেকে তাদের পাঠ্য সূচীর দূরত্ব। শুধু ধর্মীয় শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তারা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি ন্যায় বিচার করছেন না।
অন্যদিকে, কওমি মাদ্রাসার পক্ষ থেকে বলা হতে পারে যে, বাংলাদেশে আধুনিক বিজ্ঞান-ভিত্তিক শিক্ষার অভাব নেই, এবং ধর্মীয় শিক্ষার যে চাহিদা আছে সেটা মেটানোর জন্যই কওমি মাদ্রাসা টিকে আছে।। অনেক কওমি ছাত্র-ছাত্রীও মনে করেন তারা বেকার থাকবে না, কারণ ধর্মের কাজেই তারা নিয়োজিত থাকতে চান।
কিন্তু তারপরও বলতে হয়, এত বড় একটি শিক্ষা ব্যবস্থা আর কতদিন আধুনিক বিজ্ঞান-ভিত্তিক পাঠ্যক্রম থেকে দূরে থাকবে, সেটা ভেবে দেখার বিষয়।
কওমি মাদ্রাসা নিয়ে ধারাবাহিক শুনে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
''মাদ্রাসা শিক্ষার নানা দিক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন শুনছি। গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য উঠে এসেছে এসব প্রতিবেদন থেকে। আমি বিবিসি বাংলাকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করবো, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু প্রতিবেদন প্রচার করবার জন্য। নিয়োগ থেকে অবসর পর্যন্ত একজন শিক্ষককে নানা দুর্নীতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সত্যি কথা বলতে কি, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাই যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয় তবে আদর্শ মানুষ তৈরি হবে কিভাবে?''
সঠিক কথাই বলেছেন মিঃ সরদার। সেজন্যই বলা হয়, একটি জাতীকে ধ্বংস করতে হলে প্রথমে তার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে হবে। শিক্ষা খাতে যদি দুর্নীতি বা অব্যবস্থা মহামারী আকার ধারণ করে, তাহলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ বা নৈতিকতা বলে আদৌ কিছু থাকবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে।
অনেক দিন বিবিসি বাংলা শুনছেন শাহাদাত হোসেন সেলিম। বর্তমানে ভিয়েতনামে আছেন কিন্তু অনুষ্ঠান শুনতে পারছেন না।
''আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে বিবিসি শুনে আসছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আপনাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখন কর্মব্যস্ততার কারণে অনুষ্ঠান শোনা হলেও, যোগাযোগ রাখা যায় না। ভিয়েতনামে এসে ভেবেছিলাম লাইভ স্ট্রিমিং শুনতে পাবো। হ্যানয়ে আছি, কিন্তু শোনা যায় না।''
এখন তো ইন্টারনেটে আমাদের অনুষ্ঠান শোনা আরো সহজ হয়ে গেছে মিঃ হোসেন। আমাদের ওয়েবসাইটে তো লাইভ স্ট্রিমিং আছেই, একই সাথে আমাদের সান্ধ্য অধিবেশন প্রবাহ এখন ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে দেখতেও পারবেন। ট্রাই করুন, কেমন লাগলো তা পরে মেইল করে জানাবেন।
আমাদের শ্রোতা জরীপ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কুড়িগ্রামের ফরিদুল হক:
''বিবিসির শ্রোতা জরিপ কবে হবে এবং শ্রোতা জরিপে অংশগ্রহন করার উপায় কি? কত বছর পর পর শ্রোতা জরিপ করা হয় এবং কেন শ্রোতা জরিপ করা হয়?''
আপনার শেষের প্রশ্নগুলো প্রথমে উত্তর দেই মিঃ হক। অনলাইনে ক'জন আসছে, কয়টা পাতা পড়ছে, কতক্ষণ থাকছে ইত্যাদি তাৎক্ষণিক জানা যায়। কিন্তু রেডিও শ্রোতা এবং টেলিভিশনের দর্শক সংখ্যা নির্ণয় করতে জরীপের প্রয়োজন হয়।
জরীপে কেউ নিজে থেকে অংশ গ্রহণ করতে পারে না। জরিপকারী সংস্থা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ থেকে দশ হাজার লোক বাছাই করে। সেখানে লিঙ্গ, বয়স, আর্থিক অবস্থান, শহর নাকি গ্রামের বাসিন্দা, এসব বিষয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের জনগোষ্ঠীর আনুপাতিক হাড়ে বাছাই করা হয়। যাতে, জরীপের ফল দেশের সার্বিক চিত্রের কাছা-কাছি থাকে।
সাধারণত কোন দেশে তিন বছর অন্তর জরীপ করা হয় তবে বাংলাদেশে সম্ভবত আগামী বছর জরীপ করা হবে। জরীপের কাজ বিবিসি নিজে করেনা। একটি মার্কেটিং কোম্পানিকে এই জরীপ পরিচালনা করার দায়িত্ব দেয়া হয়, তবে জরীপে কী প্রশ্ন করা হবে, সেগুলো বিবিসি ঠিক করে দেয়, এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করে বিবিসির নিজস্ব বিশেষজ্ঞরা।
আরো অনেকে লিখেছেন কিন্তু অনেকের চিঠি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করা যাচ্ছে না। কয়েকজনের নাম এখানে উল্লেখ করে আজকের মত শেষ করছি:
শাকির সুমন, মুন্সিবাজার, শেরপুর।
ধীরেন বসাক, ফুলিয়া চটকাতলা, নদীয়া, ভারত ।
আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার, ভূরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম ।
লিমন ইসলাম, ঠাকুরগাঁ
মনির হোসেন, জলঢাকা, নীলফামারী।
রিপন পাল, খুলনা।
মোহাম্মদ তারিফ হাসান, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী।
খালেদ সাইফুল্লাহ আল-হোসেইনি, ঢাকা।
সুজন আহমেদ, টাংগাইল।
রানা বড়ুয়া, চট্টগ্রাম
মোহাম্মদ শিমুল বিল্লাহ, পাইকগাছা, খুলনা।
কামাল হোসাইন, ধানমন্ডি, ঢাকা।
আমাদের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা:
ইমেইল: [email protected]
ফেসবুক: www.facebook.com/BBCBengaliService/
টুইটার: https://twitter.com/bbcbangla