২০২১ সালে ঘটেছে যে যে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা, দেখে নিন এক নজরে
২০২১ সালে ঘটেছে যে যে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা, দেখে নিন এক নজরে
হাতে আর মাত্র কটা দিন। তারপরেই ২০২১ সালকে চিরতরে বিদায় জানাবে পৃথিবী। কিন্তু আমাদের চারপাশে থাকা বিস্ময়কর মহাজগতে এই গোটা বছর ধরে ঘটেছে কত রকম ঘটনা। এই মহা বিশ্বে অবিরাম ঘটতে থাকা সব কর্মকাণ্ড পৃথিবী থেকে দেখা অসম্ভব হলেও সৌরমণ্ডলে ঘটে যাওয়া কিছু কিছু ঘটনা দেখেছে পৃথিবী-বাসী। শুক্র ও বৃহস্পতির গ্রহ সংযোগ থেকে নীল-লোহিত চন্দ্র দর্শন, এই বছর সাক্ষী থাকা এমনই বেশ কিছু মহাজাগতিক ঘটনা দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
চতুষ্কোণ উল্কা
জানুয়ারি ৩ তারিখ পৃথিবীর আকাশে বিরল এক চতুষ্কোণ উল্কা বর্ষণ দেখা গিয়েছে। তবে তা খুবই অল্প সময়ের জন্য দেখা গিয়েছে। উত্তর গোলার্ধের আকাশে দেখা গিয়েছিল এই উল্কাপাত।
তিন গ্রহের সম্মেলন
বুধ, বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ তিনটি একদম কাছাকাছি চলে এসেছিল এবছর জানুয়ারির ৮ তারিখ। শেষবার এমন তিন গ্রহের ত্রয়ী রূপ দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালের অক্টোবরে। সূর্য ডোবার ৪৫ মিনিট পর উত্তর আমেরিকার আকাশে দেখা গেছে এই তিন গ্রহের সম্মিলিত রূপ।
শুক্র ও বৃহস্পতির গ্রহ সংযোগ
ফেব্রুয়ারি মাসের ১1১ তারিখ ভোরের আকাশে খালি চোখেই দেখা গিয়েছে আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল দুটি গ্রহ শুক্র ও বৃহস্পতিকে। এই গ্রহসংযোগের ঠিক ডানদিকে উপরেই দেখা গিয়েছে শনি গ্রহ। এই বিরল মহাজাগতিক ঘটনা ঘটল বেশ কয়েক বছর পর।
গ্রহের চতুষ্কোণ গঠন
মার্চ মাসের ৯-১০ তারিখ দক্ষিণ-পূর্ব দিগন্তে এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে পৃথিবী। বুধ, বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ তিনটি সর্বোচ্চ কাছাকাছি অবস্থানে অবস্থা করে এবং অর্ধচন্দ্রাকৃতির চাঁদ এই ত্রয়ীর পাশেই ছিল।
লিরিডস উল্কা বর্ষণ
২০২১
সালের
এপ্রিলের
১৬
থেক
৩০
তারিখ
অবধি
লিরিডস
উল্কা
বর্ষণ
হয়েছে
অবিরাম।
২৩
এপ্রিল
৬৮
শতাংশ
চাঁদের
আলোয়
এই
উল্কা
বর্ষণ
আরো
বেশি
স্পষ্ট
দেখা
গিয়েছে।
ব্লাডমুন বা পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ
মে মাসের ২৬ তারিখ উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমাংশ, অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব এলাকা থেকে রক্তিম চাঁদ বা ব্লাডমুন দেখা গিয়েছে। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণকেই ব্লাডমুন বলা হয়ে থাকে। পৃথিবী এবং সূর্য চাঁদের গতিপথের মাঝে চলে আসে তখনই এই ঘটনা ঘটে।
রিং অফ ফায়ার
জুনের ১০ তারিখ, সূর্য ওঠার সাথে সাথেই রাশিয়া, কানাডা এবং গ্রীনল্যান্ডের কিছু অংশ সরাসরিই আকাশে রিং অফ ফায়ার বা আগুনের আংটা কিংবা বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছে। যখন চাঁদের ছায়া সূর্যকে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করতে পারে না, তখন সূর্যের আলো চাঁদের ছায়াকে ঘিরে আলোর আংটির মতো রিং তৈরি করে।
পারসেইড উল্কাবর্ষণ
পারসেইড উল্কাবর্ষণ হয় এই বছরের আগস্ট মাসে। পারসেইড হচ্ছে আলো আর রঙের বিস্ফোরণ যা মূলত ধূমকেতুর ধ্বংসাবশেষ থেকে সৃষ্টি হয়। প্রতি বছর সূর্যের চারপাশে ঘুরপাক খাবার সময় ধুমকেতুর ধ্বংসাবশেষগুলো পেছনে ছেড়ে যায় যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এসে মেশে। এগুলো যখন পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষ করে তখন রাতের আকাশে জ্বলন্ত রেখা দৃশ্যমান হয়।
ড্রাকোনিড উল্কাবর্ষণ
ড্রাকো - দ্য ড্রাগন নক্ষত্রমণ্ডলী থেকেই মূলত ড্রাকোনিড নামকরণ হয়েছে। ড্রাকোনিড সাধারণত সন্ধ্যা নামার পর থেকে মধ্যরাতের সময়কালেই বেশি দেখা যায়। অক্টোবরের ৮ তারিখ উত্তর গোলার্ধে ড্রাকোনিড উল্কাবর্ষণ দেখা গিয়েছে আকাশজুড়ে।
আংশিক চন্দ্রগ্রহণ
বছরের দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণে পৃথিবী চাঁদের পৃষ্ঠকে পুরোপুরি ঢেকে দেয়নি। নভেম্বরের ১৯ তারিখ এই চন্দ্রগ্রহণ হয়। পৃথিবীর ছায়ায় চাঁদের পৃষ্ঠের প্রায় ৯৫ ভাগ ঢেকে যায় এই চন্দ্রগ্রহণে।
পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ
বছরের শেষে মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে পৃথিবী। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যায় ডিসেম্বরের ৪ তারিখ। মূলত এটি দেখা গিয়েছে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ থেকে। তবে এই সূর্যগ্রহণেরই আংশিক রূপ দেখা গিয়েছে চিলি, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে।