For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ক্যাপিটল হিল অবরোধ: ইতিহাস কীভাবে মনে রাখবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিদায়কে?

ক্যাপিটল হিল অবরোধ: ইতিহাস কীভাবে মনে রাখবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিদায়কে?

  • By Bbc Bengali

ডোনাল্ড ট্রাম্প
EPA
ডোনাল্ড ট্রাম্প

এভাবেই শেষ হল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ। কোনরকম আবেগঘন মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে নয়, বরং এ ছিল একটা উত্তাল ও সহিংস বিদায়।

কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প বলে আসছিলেন ৬ই জানুয়ারি হতে যাচ্ছে 'বোঝাপড়ার দিন'। এর সূত্রপাত তিনি যখন তার সমর্থকদের ডাক দেন যে, নভেম্বরের নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা তার হাতে ন্যস্ত রাখতে তারা যেন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জমায়েত হয় এবং কংগ্রেস ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

বুধবার সকালেই প্রেসিডেন্ট নিজে এবং তার সমর্থক বক্তারা মাঠ গরম করতে শুরু করেন।

প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আইনজীবী, রুডি জুলিয়ানি, বলেন নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে বিতর্কের মামলা জিততে হবে "সম্মুখ সমরের মধ্যে দিয়ে"।

দলের যেসব সদস্য প্রেসিডেন্টের হয়ে "লড়বে" না, তাদের লক্ষ্য করেও বার্তা দেন প্রেসিডেন্টের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়ার।

ক্যাপিটল-এর বাইরে বিক্ষোভকারীরা
Getty Images
ক্যাপিটল-এর বাইরে বিক্ষোভকারীরা

"এটা এখন আর তাদের রিপাবলিকান পার্টি নয়," বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়ার। "এটা এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি।"

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা জনতাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন- হোয়াইট হাউস থেকে ক্যাপিটল হিল- এই দুই মাইল পথ মিছিল করে যেতে হবে। প্রেসিডেন্টের উৎসাহে উজ্জীবিত বিক্ষোভকারীদের মুখে তখন স্লোগান "চুরি বন্ধ করো" এবং "বুলশিট"।

প্রেসিডেন্ট বলেন, "আমরা ছাড়ব না। আমরা পরাজয় মেনে নেব না। আমাদের দেশ অনেক সহ্য করেছে। আর সহ্য করতে আমরা রাজি নই।"

প্রেসিডেন্ট যখন তার মন্তব্য শেষ করছেন, তখন ক্যাপিটল হিল ভবনের ভেতরে অন্য এক নাটকীয় ঘটনার জন্য মঞ্চ প্রস্তুত হচ্ছিল। তেসরা নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিটি রাজ্যের ফলাফল সার্টিফিকেশন বা প্রত্যয়নের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের জন্য।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বিতর্কিত রাজ্যগুলোর নির্বাচনী ফলাফল অগ্রাহ্য করার জন্য যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা উপেক্ষা করে প্রথমে মি. পেন্স একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন সেটা করার কোন ক্ষমতা তার নেই এবং এই অধিবেশনে তার ভূমিকা "মূলত আনুষ্ঠানিক"।

এরপর রিপাবলিকানরা তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জটি ছুঁড়ে দেন অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ভোট নিয়ে। এই পর্যায়ে হাউস এবং সেনেট সদস্যরা ওই রাজ্যে মি. বাইডেনের বিজয় গ্রহণযোগ্য কিনা তা নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে তাদের মতামত উপস্থাপন শুরু করেন।

প্রতিনিধি সভার অধিবেশন ছিল খুবই উত্তপ্ত। দু পক্ষের তরফেই তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সময় দলীয় সদস্যরা তাদের দলের বক্তার যুক্তি সমর্থন করে চিৎকার করছিলেন, ধ্বনি দিচ্ছিলেন। এক কথায় খুবই উত্তেজিত পরিবেশে বাকযুদ্ধ চলছিল।

এরই মধ্যে কংগ্রেসে নবনির্বাচিত এক নারী সদস্য লরেন বোওবার্ট বলেন, "গত রোববার সংবিধান সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করে আমি যে শপথ গ্রহণ করেছি, তার আলোকে ভুয়া এবং বানোয়াট পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানোটা আমার দায়িত্ব। জনগণকে উপেক্ষা করতে দেয়া যাবে না।" সম্প্রতি মিজ বোওবার্ট শিরোনামে আসেন, যখন তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, কংগ্রেসে যোগ দেবার সময় তিনি তার হ্যান্ডগান সাথে রাখবেন।

Getty Images

ওদিকে সেনেটে বিতর্কের মেজাজ তখন আলাদা রূপ নিয়েছে। সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা রিপাবলিকান মিচ ম্যাককনেল তখন কারো শেষকৃত্যে যেমন কালো পোশাক পরার রেওয়াজ, সেরকম কালচে রংএর স্যুট, টাই পরে তার বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন- প্রেসিডেন্টের প্রশংসার বদলে যেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কবর দিতে হাজির হয়েছেন তিনি।

"পরাজিত দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে এই নির্বাচনের ফলকে যদি এখন উল্টে দেয়া হয়, তাহলে সেটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য কবর খোঁড়া হবে," বলেন মি. ম্যাককনেল।

"এরপর আমাদের গোটা জাতি আর কখনও কোন নির্বাচনের ফল মেনে নেবে না। প্রতি চার বছর অন্তর ক্ষমতায় যাবার জন্য লড়াই যে কোন মূল্যের বিনিময়ে একটা মরীয়া উদ্যোগে পরিণত হবে।"

জর্জিয়াতে দুটি আসনে পরাজয়ের পর রিপাবলিকান পার্টি সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় সেনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা এখন হতে যাচ্ছেন কেনটাকি রাজ্যের রিপাবলিকান সেনেটর। তিনি বলেন, "নির্বাচন-পরবর্তী মুহূর্তের আবেগ যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না যায়, এই ক্রোধের আগুনে আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তি যেন ধসে না পড়ে।"

তিনি যখন এই কথাগুলো বলছেন, তখন ক্যাপিটল ভবনের বাইরে ক্ষোভের আগুন টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে। এবং রিপাবলিকান নেতাদের সম্ভবত আগে দেয়া বক্তৃতায় উজ্জীবিত হয়ে ট্রাম্পের সমর্থকরা ততক্ষণে ক্যাপিটল ভবনে চড়াও হয়েছেন।

সেখানে মোতায়েন অল্প সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মীদের বাধা সহজেই ডিঙিয়ে তারা ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সভার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আইন প্রণেতারা, সেখানকার কর্মচারী ও মিডিয়া কর্মীরা দাঙ্গাবাজদের থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন।

আরও পড়তে পারেন:

আমেরিকান সেনেট চেম্বারের দেয়াল ধরে ঝুলছেন একজন বিক্ষোভকারী
Getty Images
আমেরিকান সেনেট চেম্বারের দেয়াল ধরে ঝুলছেন একজন বিক্ষোভকারী

ঘটনা নাটকীয় মোড় নিতে থাকে ধাপে ধাপে। সেখানে যে টেলিভিশন সম্প্রচার চলছিল, সেই ক্যামেরায় দেখা যায়, ক্যাপিটল ভবনের সিঁড়িতে উঠে বিক্ষোভকারীরা পতাকা দোলাচ্ছে এবং নাচানাচি করছে।

দাঙ্গাকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েছে, তারা লেজিসলেটিভ চেম্বারের ভেতর দরোজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করছে, তাদের কেউ কেউ নির্বাচিত আইন প্রণেতাদের দপ্তরের কর্মী বা নিরাপত্তা কর্মীর পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। প্রতিবন্ধক দিয়ে আটকানো দরোজার ওপারে প্রতিনিধি সভার ভেতরে বন্দুক নিয়ে তারা ঢুকে পড়ে।

ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে নির্বাচিত নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর অর্থনীতি বিষয়ে একটি ভাষণ দেবার পরিকল্পনা ছিল। তিনি সেটা বাতিল করে দেন এবং এটাকে ওয়াশিংটনে একটা "বিদ্রোহ" আখ্যা দিয়ে এই তাণ্ডবের নিন্দা করেন।

"এই সময় আমাদের গণতন্ত্র নজিরবিহীন হামলার মুখে পড়েছে। বর্তমান সময়ে এধরনের আক্রমণ আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আসেনি," তিনি বলেন, "এটা স্বাধীনতার মূল স্তম্ভ, খোদ ক্যাপিটল হিলের ওপর আক্রমণ।"

তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন মি. ট্রাম্পের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে: আপনি জাতীয় টেলিভিশনে গিয়ে এই সহিংসতার নিন্দা করুন এবং "এই অবরোধ অবসানের দাবি জানান"।

জো বাইডেন
Reuters
জো বাইডেন

এর কয়েক মিনিট পরে মি. ট্রাম্প জাতির উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দেন- কিন্তু জো বাইডেন যা চেয়েছিলেন তা তিনি বলেননি।

তিনি তার বহু পরিচিত অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন - নির্বাচন "চুরি" করা হয়েছে। এরপর তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন "আপনারা ঘরে ফিরে যান, আমরা আপনাদের ভালবাসি, আপনারা সবাই খুবই বিশেষ মানুষ"।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন সমর্থক ওয়াশিংটন ডিসিতে
Getty Images
ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন সমর্থক ওয়াশিংটন ডিসিতে

মি. ট্রাম্প সবসময়ই তার সমর্থকদের আইন-বর্হিভূত কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করেছেন।

শার্লটভিলে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের সমাবেশে যখন সহিংসতা হয়েছে, মি. ট্রাম্প সংঘর্ষের পর বলেছেন "দুপক্ষেই আপনারা সবাই খুবই ভাল মানুষ"। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় মি. বাইডেনের সাথে তার প্রথম বিতর্কিত টিভি বিতর্কের পর উগ্র দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী 'প্রাউড বয়েস'এর প্রতি তার বার্তা ছিল "আপাতত হামলা করা থেকে বিরত থাকুন এবং অপেক্ষা করুন" ।

ওয়াশিংটনের তাণ্ডবের পর মি. ট্রাম্পের টুইট, এবং তার সমর্থকদের প্রশংসা করে এরপর আরও দুটি টুইট বার্তা টু্ইটার সরিয়ে ফেলে এবং নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়ে ১২ ঘন্টার জন্য প্রেসিডেন্টের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়। এর পরপরই ফেসবুকও মি. ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুরো একদিনের জন্য বন্ধ করে দেয়।

মি. ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট মেয়াদে প্রথমবারের মত এবং সামাজিক মাধ্যমের সাথে তার দীর্ঘদিনের নিবিড় যোগাযোগে এই প্রথমবারের মত তার মুখ বন্ধ করে দেয়া হল।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য "আপনার কি কোন কাণ্ডজ্ঞান বা ভদ্রতা বোধ নেই?" এই সত্যটা শেষ পর্যন্ত নজিরবিহীনভাবে উঠে এল তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া ক্যাপিটল হিল থেকে ভাঙা কাঁচ আর রক্ত পরিষ্কার করার মধ্যে দিয়ে, গণতন্ত্রের ওপর এতবড় একটা আঘাতের দায় তার ঘাড়ে বর্তানোর মূল্য হিসাবে।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পর পুলিশ শেষ পর্যন্ত ক্যাপিটল ভবনে তাদের নিয়ন্ত্রণ বহাল করে। বাম শিবির, ডান শিবির সব দিক থেকে সমস্বরে এই সহিংসতার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করে।

সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে ডেমোক্রাটদের সেনেটের নেতার পদ গ্রহণ করতে যাওয়া চাক শুমার এই দাঙ্গা ও তাণ্ডবের দায় চাপান প্রেসিডেন্টের ওপর।

"আমেরিকার ইতিহাসে ৬ই জানুয়ারি অন্যতম একটা কালো দিবস হিসাবে লেখা থাকবে," তিনি বলেন। "একজন প্রেসিডেন্ট যখন আবেগকে উস্কে দিয়ে দেশ শাসন করেন তখন তার পরিণতি কী হতে পারে এটা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। যারা তাকে এই পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করেন, যেসব সংবাদমাধ্যম তার মিথ্যা বক্তব্য তোতা পাখির মত সম্প্রচার করে, আর আমেরিকাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবার জন্য তার প্রয়াসে যারা মদত জোগায়- এই ঘটনা তাদের জন্য চরম সতর্কবাণী," বলেন মি. শুমার।

অনেক রিপাবলিকানও এই ঘটনার পর একইধরনের মন্তব্য করেছেন।

"আমরা যারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছিলাম, আমাদের বাধা দেবার চেষ্টায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা ক্যাপিটল ভবনের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে," টুইট করে বলেছেন কংগ্রেসে রিপাবলিকান সদস্য লিন চেইনি, যিনি এর আগেও অনেকবার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেছেন। "এই উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সংঘবদ্ধ করেছেন প্রেসিডেন্ট - এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, তিনিই এই জনতাকে উস্কে দিয়েছেন। তিনিই এই জনতার উদ্দেশ্যে কথা বলেছেন।"

তবে দলের ভেতর ডোনাল্ড ট্রাম্পের যারা সমালোচক তারাই যে শুধু প্রেসিডেন্টের নিন্দা করছেন তাই নয়, বেশিরভাগ সময় প্রেসিডেন্টের পক্ষ নেয়া আরকানস'র সেনেটার টম কটনও সুর বদলেছেন।

"নির্বাচনের ফল প্রেসিডেন্টের মেনে নেবার সময় পার হয়ে গেছে- আর কতদিন? আমেরিকার মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছেড়ে দিন, জনতাকে খেপিয়ে তোলা বন্ধ করুন," তিনি বলেন।

ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের স্টাফ প্রধান স্টেফানি গ্রিশাম এবং হোয়াইট হাউসের উপ তথ্য সচিব সারা ম্যাথিউস দুজনেই প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের আরও কর্মকর্তা আগামী ২৪ ঘন্টায় প্রতিবাদ স্বরূপ পদত্যাগ করবেন।

সিবিএস টিভি চ্যানেল খবর দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের ক্যাবিনেট কর্মকর্তারা আমেরিকান সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ ব্যবহার করার বিষয়ে আলোচনা করছেন। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ক্যাবিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের প্রেসিডেন্টকে অযোগ্য ঘোষণা করে সাময়িকভাবে তার পদ থেকে সরিয়ে দেবার ক্ষমতা রয়েছে।

মি. পেন্স এবং ক্যাবিনেট এই ধারা কার্যকর করবেন কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। তবে আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

তখন রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে কংগ্রেস এবং হোয়াইট হাউসের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর তাদের ভবিষ্যত কোন্ দিকে মোড় নেবে।

তাদের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট যার সম্মান ও মর্যাদা বুধবারের ঘটনায় কালিমালিপ্ত হয়েছে, কিন্তু তারপরেও দলের তৃণমূল পর্যায়ের একটা বড় অংশ এখনও যার কট্টর সমর্থক।

দল কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ক্যাপিটল-এর বাইরে বিক্ষোভকারীরা
Getty Images
ক্যাপিটল-এর বাইরে বিক্ষোভকারীরা

দলের ভেতর রক্ষণশীলরা চেষ্টা করবেন মি. ট্রাম্প ও তার অনুগতদের হাত থেকে নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নিতে।

মি. ম্যাককনেল যেসব মন্তব্য করেছেন তা এধরনের ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে, উটার সেনেটার এবং রিপাবলিকান দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিট রমনির মত আরও অনেকে একটা নেতৃত্বের ভূমিকায় হয়ত নিজেদের তুলে ধরতে চাইবেন।

কিন্তু দলের ভেতর আবার অনেকে আছেন যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনগণেকে সাথে নিয়ে চলার নীতিতে বিশ্বাস করেন, তারা হয়ত রক্ষণশীলদের মতাদর্শকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন। এবং মি. ট্রাম্পের পথ অনুসরণ করে দলকে পরিচালিত করতে আগ্রহী হবেন।

মিসৌরির রিপাবলিকান সেনেটার জশ হলি, যিনি প্রথম বলেছিলেন সেনেট অধিবেশনে নির্বাচনের ফলাফলকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানাবেন, ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডবের পর অধিবেশন যখন আবার শুরু হয় তখন তিনি তার আপত্তি বজায় রাখেন। তার বিশ্বাসে তিনি অটল ছিলেন।

রাজনৈতিক সংকট অনেক সময় রাজনীতিতে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে দ্বিধা করবেন না অনেক রাজনীতিক।

তবে এত সব কিছুর পরও ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বহাল আছেন। হয়ত তার টুইটার, ফেসবুক যতক্ষণ বন্ধ থাকবে তিনি হোয়াইট হাউসে টিভির সামনে বসে সময় কাটাবেন, কিন্তু বেশিদিন তিনি চুপ করে থাকবেন না।

হোয়াইট হাউসের পাট গুটিয়ে যখন তিনি ফ্লোরিডায় তার নতুন বাসভবনে গুছিয়ে বসবেন, তখন তিনি কার সাথে কীভাবে বোঝাপড়া করবেন সেই পরিকল্পনার ছক কাটবেন। এবং কে বলতে পারে, আবার তখন ফিরে আসবেন ক্ষমতায়।

এই মেয়াদে তার লেগাসি বা তার রেখে যাওয়া ভাবমূর্তি শেষ দিনগুলোয় যেভাবে কালিমালিপ্ত হয়েছে, হয়ত তখন তাকে নতুন রূপ দেবার চেষ্টা করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

English summary
Will history remember the end of Donald Trump after Capitol Hill clash
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X