For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

কাতার বিশ্বকাপেই কি 'হেক্সা' অর্জন করতে যাচ্ছে ব্রাজিল?

  • By Bbc Bengali

নেইমার বাছাইপর্বে ১৬টি গোল করেছেন
Getty Images
নেইমার বাছাইপর্বে ১৬টি গোল করেছেন

'নেইমার পারেন চেষ্টা করলেই’, গেল দুই বিশ্বকাপ ধরে হৃদয় ভাঙ্গার পর নেইমারকে নিয়ে ব্রাজিলের সমর্থকদের মুখে এই একটা বাক্য অনেকবার শোনা গেছে।

কিন্তু নেইমার পারছেন না আসলে, ২০১৫-১৬ মৌসুমের পরে নেইমারকে ক্লাব ফুটবলেও সেরাদের কাতারে পারফর্ম করতে দেখা যায়নি তেমন।

তিনি ছিলেন 'ব্যালন ডি অর' প্রত্যাশীদের একজন। কিন্তু বারবারই হতাশ হয়েছেন।

ব্রাজিলের মতো ঐতিহ্যবাহী দলের ১০ নম্বর জার্সি যার গায়ে থাকে তার প্রতি প্রত্যাশার ভারটাও একটু বেশি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু গত দুই বিশ্বকাপে নেইমার এই প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিলন ঘটাতে পারেননি।

নানা ধরনের বিতর্কে জড়ানো নেইমারের ক্যারিয়ারের নিয়মিত ঘটনা। তার সাথে যুক্ত হয়েছে মাঠে বড় মঞ্চে পারফর্ম না করতে পারা।

বাছাইপর্বে ১৬টি গোল করেছেন বটে কিন্তু দলটার নাম যখন ব্রাজিল তখন বাছাইপর্বের পারফরম্যান্স খুব কম সমর্থকই মনে রাখবেন, যদি বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারেন।

মেসি-রোনালদোর সাথে নেইমারের নাম উচ্চারিত হয়, কিন্তু প্রতিদান তিনি দিয়েছেন কমই।

কোচ তিতের অধীনে ব্রাজিল গত ২৯ ম্যাচে হারেনি, শেষ ১৭ ম্যাচের ১৩টিতে কোন গোলও হজম করেনি।

একই সাথে এই ২৯ ম্যাচে ব্রাজিল গড়ে আড়াইটি করে গোল দিয়েছে প্রতিপক্ষের জালে।

তবুও বিশ্বকাপের আগে দল নিয়ে এবং যথাযথ পজিশনে যথাযথ ফুটবলার খেলানো নিয়ে কিছু দুশ্চিন্তার জায়গা আছে ব্রাজিলের।

নাম্বার নাইন কে হবেন?

পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ফুটবলে জনপ্রিয় হওয়ার আগে ফুটবল সমর্থকরা রোনালদো বলতে একজনকেই চিনতো, তিনি ব্রাজিলের নয় নম্বর জার্সি পড়তেন।

বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ফুটবলারদের একজন রোনালদো নাজারিও, যিনি অলস ভঙ্গিমায় গোল করতে পটু ছিলেন, তারই প্রত্যক্ষ অবদানে ব্রাজিল নিজেদের পঞ্চম বিশ্বকাপ শিরোপা নিশ্চিত করেছিল ২০ বছর আগে।

রোনালদো অবসরে গেছেন ১১ বছর হয়ে গেছে।

২০১৮ বিশ্বকাপে গ্যাব্রিয়েল হেসুস পাঁচ ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন
Getty Images
২০১৮ বিশ্বকাপে গ্যাব্রিয়েল হেসুস পাঁচ ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন

এরপর আর ব্রাজিল নিখুঁত নাম্বার নাইন আবিষ্কার করতে পারেনি। ২০১৮ বিশ্বকাপে গ্যাব্রিয়েল হেসুস পাঁচ ম্যাচেই মাঠে নেমেছিলেন কিন্তু কোনও গোল করতে পারেননি।

তিনি আর্সেনালের হয়ে এবারে ভালো ফর্মে আছেন।

অন্যদিকে টটেন্যাম হটস্পারের স্ট্রাইকার রিশার্লিসনের দিকেও নজর থাকবে।

২৪ ম্যাচ খেলে ব্রাজিলের হয়ে ১৭ গোল করেছেন তিনি।

তাই তিতেকে ভাবতে হবে, ক্যাসেমিরো, পাকোয়েতা, নেইমারদের বানানো বল কে সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসের সাথে জালে ফেলতে পারবেন?

ব্রাজিলের লক্ষ্য ছয় নম্বর বিশ্বকাপ জয়

ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিল এখনও পর্যন্ত সবার ওপরে আছে পাঁচটি বিশ্বকাপ নিয়ে, ২০ বছর আগে শেষ বিশ্বকাপ জিতলেও এখনও প্রতি বিশ্বকাপের আগেই ব্রাজিলকে ধরা হয় ফেভারিট দল।

এটা দলটার ঐতিহ্য ও পরিচিতির কারণে।

বিশ্বব্যাপী যেসব আন্তর্জাতিক ফুটবল দলের প্রচুর সমর্থক আছে, তাদের মধ্যে ব্রাজিল একটি।

ফুটবলের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট দ্য অ্যাথলেটিক তাদের বিশ্লেষণে লিখেছে, ব্রাজিলের ছয় নম্বর শিরোপা, যাকে 'হেক্সা’ বলা হচ্ছে সেটা অর্জনের সামর্থ্য এই স্কোয়াডের আছে।

দ্য অ্যাথলেটিকে বলা হচ্ছে ব্রাজিলের স্কোয়াডের গভীরতা যে কোনও দলের জন্য ঈর্ষণীয়।

ফুটবল লেখক জেমস হর্নক্যাসলের মতে, “ব্রাজিলের এই দলটিতে নেইমারের সামর্থ্যের সবটুকু ব্যবহার করা গেলে এবার ব্রাজিল ছয় নম্বর বিশ্বকাপ জিততেও পারে।”

প্রায় ছয় বছর ধরে ব্রাজিল দলের দায়িত্বে আছেন তিতে
Getty Images
প্রায় ছয় বছর ধরে ব্রাজিল দলের দায়িত্বে আছেন তিতে

কোচ তিতের শেষ চ্যালেঞ্জ

প্রায় ছয় বছর ধরে ব্রাজিল দলের দায়িত্বে আছেন তিতে। তিনি এই বিশ্বকাপের পর আর দায়িত্বে থাকছেন না।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে হারের পর তিনি দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন

কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত থেকে গেছেন এবং ব্রাজিলকে টানা দুই কোপা আমেরিকা ফাইনাল খেলিয়েছেন, যার মধ্যে একবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার রানার আপ হয়েছে দলটি।

তিতে খুব কঠিন একটা সময়ে দলটির দায়িত্ব নিয়েছিলেন, একে তো ২০১৪ সালের সেই সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে সাত গোল হজম, এরপরে কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া একটি দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

এই বিশ্বকাপে তিতে ২০১৮ এর চেয়ে ভালো করবেন বলেই আশা করেন।
Getty Images
এই বিশ্বকাপে তিতে ২০১৮ এর চেয়ে ভালো করবেন বলেই আশা করেন।

২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিলের উত্তীর্ণ হওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তিতে বলেন, “আমার গোটা ক্যারিয়ার এই একটা সাফল্যের ওপর নির্ভর করছিল।”

শেষ পর্যন্ত টানা সাত ম্যাচ জিতে ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছিল।

এই বিশ্বকাপে তিতে ২০১৮ এর চেয়ে ভালো করবেন বলেই আশা করেন।

তিতে বলেছেন, “একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি যা আমাদের দলে আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধ নিয়ে এসেছে। কিন্তু এতে আমরা কাপ জিততে পারবো কি না সেটা এখনই বলা মুশকিল”।

ব্রাজিলের স্কোয়াড কতোটা শক্তিশালী?

ব্রাজিল দলে গোলকিপাররা সাধারণত খুব একটা জনপ্রিয় হন না।

কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ দলে বড় তারকাদের একজন অ্যালিসন বেকার, যিনি ১ নম্বর জার্সি পরে পোস্টের সামনে দাঁড়াবেন।

তারপর আছেন এডারসন।

দুজনই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলের এক নম্বর গোলকিপার।

গোটা মাঠেই ব্রাজিলের এমন সব অপশন আছে।

কোনও কারণে যদি ব্রাজিলের ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা কিংবা মারকুইনহোস খেলতে না পারেন, সেক্ষেত্রে আছেন এডার মিলিটাও, যিনি রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন গত মৌসুমেই।

মিলিটাও শুধু ডিফেন্স করেন না, তিনি রক্ষণ থেকে বল বাড়িয়ে আক্রমণে নিতে পছন্দ করেন।

আরও আছেন গ্লেজন ব্রেমার, তিনি ইতালিয়ান লিগের বর্ষসেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার পেয়েছেন।

মাঠের দুই পাশেও তিতের হাতে বেশ কয়েকজন বিকল্প আছেন- ভিনিশিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো, রাফিনিয়া, অ্যান্টনি।

একজন অ্যালিজন বেকার ব্রাজিলের ১ নম্বর জার্সি পরে পোস্টের সামনে দাঁড়াবেন।
Getty Images
একজন অ্যালিজন বেকার ব্রাজিলের ১ নম্বর জার্সি পরে পোস্টের সামনে দাঁড়াবেন।

ব্রাজিল দলের দুর্বলতা কোথায়

ব্রাজিল দলটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা গত ৩ বছরে কোনও ইউরোপিয়ান দলের বিপক্ষে খেলেনি তারা। শেষ চারটি বিশ্বকাপেই ব্রাজিল ইউরোপিয়ান দলের সাথে হেরে নকআউট রাউন্ডে বাদ পড়েছে।

২০০৬ সালে ফ্রান্স, ২০১০ সালে নেদারল্যান্ডস, ২০১৪ সালে জার্মানি এবং ২০১৮ সালে বেলজিয়ামের সাথে হেরে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়েছিল।

গত তিন বছরে করোনাভাইরাস এবং নতুন টুর্নামেন্ট ইউয়েফা ন্যাশন্স লিগের কারণে ব্রাজিল ইউরোপের বড় দলগুলোর বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচেও খেলার সুযোগ পায়নি।

ব্রাজিলের আরও কিছু ভাবনার বিষয় রয়েছে।

যেমন রেনান লোদির একটি ডিফেন্সিভ ভুলের কারণে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরেছিল দলটি, অ্যালেক্স স্যান্দ্রোর আগের মতো ধার নেই।

নেইমারের শারীরিক সক্ষমতাও একটা ভাবনার বিষয়
Getty Images
নেইমারের শারীরিক সক্ষমতাও একটা ভাবনার বিষয়

নেইমারের শারীরিক সক্ষমতাও একটা ভাবনার বিষয়, ২০১৪ সালে সাত গোল হজম করা ম্যাচের আগে নেইমার ইনজুরিতে পড়েছিলেন।

২০১৯ সালের কোপা আমেরিকাতেও নেইমার খেলতে পারেননি, যদিও সেবার ব্রাজিল শিরোপা জিতেছিল।

তবে নেইমারের এখনই সময়, ব্রাজিলের ফুটবলে যুগে যুগে যেসব নাম প্রতিধ্বনিত হয় তাদের অনেকেই বিশ্বকাপ জিতেছেন এবং জিতিয়েছেন, নেইমার তার ক্যারিয়ার শেষে বিশ্বকাপ না জিতলে তার ১০ নম্বর জার্সি, ট্রান্সফার ফি কিংবা বিপুল তারকাখ্যাতি এসবের কোনও মূল্য থাকবে না ব্রাজিল সমর্থকদের কাছে- এটুকু নিশ্চিত।

English summary
Will Brazil be the first team to win 6th Fifa World Cup
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X