হাসতে মানা, নিষিদ্ধ মদ্যপান-কেনাকাটাও! কেন এই আজব নিদান, চর্চা বিশ্বজুড়ে
হাসতে মানা, নিষিদ্ধ মদ্যপান-কেনাকাটাও! কেন এই আজব নিদান, চর্চা বিশ্বজুড়ে
হাসা, মদ্যপান, কেনাকাটা সব নিষিদ্ধ। এমনই নিদান উত্তর কোরিয়ায়। এক-আধদিন নয় টানা ১১ দিন ধরে এমনই আজব-কাণ্ডকারখানা চলছে উত্তর কোরিয়ায়। কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত নিদান? কেনই বা হাসি বন্ধ, বন্ধ মদ্যপান আবার কেনাকাটাও? বিশ্বজুড়ে উত্তর কোরিয়ার এই আজব কাণ্ড দেখে চর্চা শুরু হয়েছে।
১৯৯৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া শাসন করেছিলেন কিম জং-ইল। তাঁর দশম মৃত্যুবার্ষিকীর সময় এসে গিয়েছে। সেই উপলক্ষে শুক্রবার থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছে শোকের সময়। শোক প্রদর্শনের জন্য উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ হয়েছে হাসি, মদ্যপান, কেনাকাটা! এমনকী মুদি বাজারও কেনাকাটার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার বর্তমান নেতা কিম জং উন। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী শহর সিনুইজুর বাসিন্দার বরাত দিয়ে 'রেডিও ফ্রি এশিয়া' নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঘোষণা করা হয়েছে, এই সময়ের জন্য সমস্ত আনন্দদায়ক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাসিন্দারা মুদি কেনাকাটাও করতে পারবে না বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এবং এই নির্দেশের অন্যথা করলে প্রতিবছরের মতো তাদের গ্রেফতার করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে- "অতীতে, অনেক লোক যারা শোকের সময় মদ্যপান বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ধরা পড়েছিল, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং তাদের অপরাধী হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নাগরিক জানান, "অপরাধী সাব্যস্ত করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং আর কখনও তাদের দেখা যায়নি।"
এ বছর উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন প্রশাসক কিম জং-ইলের দশম মৃত্যুবার্ষিকী হওয়ায় শোক পালন চলবে ১১ দিন। সাধারণত, প্রতি বছর ১০ দিনের শোক পালন করা হয়। যদি আপনার পরিবারের সদস্য শোকের সময় মারা যান, তবে আপনাকে কাঁদার অনুমতিও দেওয়া হয় না। শোকের সময়ের মধ্যে লোকেরা তাদের নিজের জন্মদিনও উদযাপন করতে পারেন না।
এই বছরের ক্র্যাকডাউন ডিসেম্বরের শুরু থেকে চলছে। কারণ উত্তর কোরিয়ার পুলিশ শোকের সময়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিম জং ইল ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ৬৯ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর থেকে প্রতি বছর কিম জং উন তাঁর বাবার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এভাবেই।
তবে এ বছর রাষ্ট্রীয় মিডিয়া শুক্রবার কিমের কোন ভাষণ সম্প্রচার করেনি। তিনি শুধু জানান, "মহান নেতা এবং কমরেড কিম জং ইল সর্বদা আমাদের সঙ্গে আছেন। এবং তিনি আমাদের পার্টি এবং বিপ্লবের চিরন্তন 'সুরিয়ং' এবং 'সান অফ জুচে' অর্থাৎ আত্মনির্ভরতার সূর্য। উত্তরের প্রধান সংবাদপত্র 'রোডং সিনমুন' তাদের সম্পাদকীয়তে উত্তর কোরিয়ার নেতাদের জন্য সংরক্ষিত একটি সম্মানজনক শিরোনাম দিয়ে এই বার্তা দিয়েছে।