কেন সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল?
সিরিয়ার ভেতরে একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল - বলছে সিরিয়া ও রাশিয়া। মার্কিন অভিযানের রাস্তা তৈরি করতেই কি এ হামলা, প্রশ্ন করছেন এক বিশ্লেষক।
সিরিয়া এবং তার মিত্র রাশিয়া বলছে, সিরিয়ার ভেতরে একটি সামরিক বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, দু'টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান - সিরিয়ান আকাশসীমার ভেতর না ঢুকেই টি-ফোর নামে ওই বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।
সিরিয়ার হোমস শহরের কাছে টাইয়াস বিমান ঘাঁটিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই সিরিয়ানরা প্রথম সন্দেহ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রকে।
শনিবার পূর্ব ঘুটা অঞ্চলের দুমায় সিরিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ ওঠার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখানোর পর তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য আমেরিকানদের দোষারোপ করা হয়।
কিন্তু এখন সিরিয়ার সরকার এবং তাদের মিত্র রাশিয়া ইসরায়েলকে দায়ী করছে। আমেরিকাও এ ধরণের হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।
রাশিয়া বলছে, বিমান থেকে মোট আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়, যার পাঁচটি গুলি করে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। বাকি তিনটি বিমান ঘাঁটির পশ্চিম দিকে আঘাত করে। সিরিয়ার সংবাদ মাধ্যম বলছে, এফ-১৫ ইসরায়েলী বিমানগুলো লেবাননের আকাশসীমার মধ্যে ছিল।
জানা যাচ্ছে টি-ফোর নামে এই বিমানঘাঁটিতে হামলায় অন্তত ১৪ জন মারা গেছে।
ইসরায়েল এখনও এ নিয়ে কিছুই বলে নি। অবশ্য প্রতিবারই সিরিয়ায় এ ধরণের হামলার পর ইসরায়েল নিরবতা পালন করে থাকে।
মার্কিণ পররাষ্ট্রনীতির গবেষক জিম হ্যানসন বিবিসিকে বলেছেন, হয়তো সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্থল হামলার আগে ইসরায়েলী যুদ্ধবিমানগুলো তার রাস্তা প্রস্তুত করার চেষ্টা করছে।
মি. হ্যানসন বলছেন, এটা খুবই সম্ভব যে হেযবোল্লাহ এবং প্রেসিডেন্ট আসাদের অস্ত্র সম্ভারকে টার্গেট করেছে ইসরায়েল।
"আমেরিকার টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু অস্ত্র যাতে সিরিয়া লুকিয়ে ফেলতে না পারে তাই হয়তো তার আগেই অতর্কিত এই হামলা চালানো হয়েছে।"
বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:
ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সরকার, দেশজুড়ে বিক্ষোভ
সরকারি চাকরিতে কোটা: কাদের জন্য, কী উদ্দেশ্যে
চলন্ত বাসে আবার ধর্ষণ ঢাকার ধামরাইয়ে
'ওদের ফেরত পেতে ৯০ হাজার ডলার দিয়েছি'
ইসরায়েল ২০১২ সাল থেকেই বিভিন্ন সময় সিরিয়ায় ইরান এবং লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হেযবোল্লাহর বিভিন্ন ঘাঁটিতে এ ধরণের অতর্কিত হামলা চালিয়েছে ।
ফেব্রুয়ারি মাসেই এই টি-ফোর ঘাঁটিতেই ইসরায়েল আরো একটি আক্রমণ চালিয়েছিল।
ইসরায়েল সবসময় বলে থাকে যে তারা কোনাভাবেই সিরিয়ায় ইরানকে ঘাঁটি গাড়তে দেবেনা।
বিবিসির প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদাতাতা জোনাথন মার্কাস বলছেন, সিরিয়ায় ইরানের সামরিক তৎপরতা ঠেকাতে এবং ইরান যাতে হেযবোল্লাহকে আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র জোগান না দিতে পারে - সেজন্য ইসরায়েল জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে হোমসের বিমান ঘাঁটিতে এই হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলছেন, সিরিয়ায় রাশিয়া তাদের অত্যাধুনিক বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে।
এখনো পর্যন্ত রাশিয়া ইসরায়েলের এ ধরণের হামলা নিয়ে কিছু বলে নি, তবে পরিস্থিতি তিক্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে, বলেন জোনাখন মার্কাস।