মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে আসায় চিন কেন ক্ষুব্ধ, জল্পনা
মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে আসায় চিন কেন ক্ষুব্ধ, জল্পনা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি মঙ্গলবার তাইওয়ানে অবতরণ করার পর থেকে তাঁর সফর নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এই সফর মার্কিন-চিন সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। চিন যখন প্রতিশোধের জন্য সামরিক কৌশল প্রয়োগের চেষ্টা করছে, তখন মার্কিন হাউস স্পিকারের এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ।
২৫ বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষসারির এত বড় নেতা স্বশাসিত ওই দ্বীপে আসেননি বা তাইওয়ান তাঁদের এভাবে স্বাগত জানায়নি। পেলোসির এই সফরকে চিন মনে করছে পরিকল্পিত। কেননা, তাঁরা তাইওয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কৌশল নিয়েছেন। চিন মনে করছে, পেলোসির এই সফর প্রমাণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
পেলোসি ব্যাখ্যা করেছেন কেন তিনি মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে তাইওয়ান সফরে এসেছেন। মঙ্গলবার ইউএস হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি নিজে সফরের ব্যাখ্যায় বলছেন, চিনা কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ান ও গণতন্ত্রকে হুমকি দিয়েছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি এ দেশে সফর করতে পারে না? সেইসঙ্গে এটাও অপরিহার্য যে, আমরা কখনই স্বৈরাচারীদের কাছে নতি স্বীকার করতে পারি না।
পেলোসি বলেন, কয়েক দশক ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সমর্থনে একটি মিশন তৈরি করেছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯১ সালে তিয়ানানমেন স্কোয়ারে ভ্রমণ করে গণতন্ত্রের সমর্থনে ছোট ব্যানার এনেছেন। চিনা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কারণ চিনা বাহিনী দু-বছর আগে ওই একইস্থানে একটি স্বদেশি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে চুরমার করেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে পেলোসির অবস্থান কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আলাদা? পেলোসি যখন স্বশাসিত তাইওয়ান দ্বীপটি পরিদর্শনে এসেছেন, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জে বাইডেন জোর দিয়েছেন আমেরিকার দীর্ঘস্থায়ী 'এক চিন নীতি'তে। সেখানে কোনও পরিবর্তন নেই। তাঁর এই নীতি চিনকে স্বীকৃতি দেয় তাইপের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে। তার মানে কি পেলোসির অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে ভিন্ন?
প্রকৃতপক্ষে পেলোসি বাইডেনের সঙ্গে 'এক চিন নীতি' সমর্থন করেছেন। কিন্তু বেজিং তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকান সরকারি যোগাযোগকে ব্যাখ্যা করেছে ওই দেশের প্রকৃত স্বাধীনতাকে উৎসাহ দিতেই মার্কিন প্রতিনিধিরা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। ন্যান্সি পেলোসির সফর চিন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে। তিন তাইওয়ানকে তার ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দাবি করেষ বিদেশি সরকারি কর্মকর্তাদের সফরকে তারা দ্বীপের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি হিসেবে দেখে।
পেলোসি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে স্বৈরাচারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে গণতন্ত্র আদায়ের জন্য লড়ছেন। সেই আঙ্গিকে তিনি তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে এলেন বলে মনে করছে চিন। তিনি লিখেছেন, এটা অপরিহার্য যে আমেরিকা বা আমেরিকার মিত্ররা কখনই স্বৈরাচারীদের কাছে নতি স্বীকার করে না। পেলোসির আগমনের পরই চিন একাধিক সামরিক অভিযান ও সেনা মহড়ার ঘোষণা করে।
তাইওয়ানের পথে চিনা ট্যাঙ্কার, মার্কিন স্পিকার পালোসির সফরে উস্কানি দেখছে বেজিং, হুঙ্কার জিনপিংয়ের