বিরোধিতা করছেন মমতা সহ একাধিক রাজ্য! এরপরেও কেন ক্যাডার আইনে বদল আনছে কেন্দ্র?
সংশোধনী আনতে চায় মোদী সরকার। আইএএস এবং আইপিএসদের বদলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ক্ষমতা নিজেদের হাতেই নিতে চায় কেন্দ্র। বিশেষ করে কোনও আমলাকে রাজ্য থেকে তুলে কেন্দ্রে ডেপুটেশনের ক্ষেত্রে সমস্ত ক্ষমতা নিজেদের কাছেই রাখতে চান মোদী
Indian Administrative Service (Cadre) Rules 1954 সংশোধনী আনতে চায় মোদী সরকার। আইএএস এবং আইপিএসদের বদলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ক্ষমতা নিজেদের হাতেই নিতে চায় কেন্দ্র। বিশেষ করে কোনও আমলাকে রাজ্য থেকে তুলে কেন্দ্রে ডেপুটেশনের ক্ষেত্রে সমস্ত ক্ষমতা নিজেদের কাছেই রাখতে চান মোদী সরকার।
এই মর্মে গত কয়েকদিন আগে ডিওপিটি (DoPT) অর্থাৎ Department of Personnel and Training-এর তরফে সমস্ত রাজ্যকে এই মর্মে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করা হয়। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে ১৯৫৪ আইএএস(ক্যাডার) নিয়মে এই সংশোধনী আনা হচ্ছে।
তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক রাজ্য
আর এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক রাজ্য। বিশেষ করে বিজেপি বিরোধী যে সমস্ত রাজ্যগুলি রয়েছে তাঁরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অন্তত এমন ছয়টি রাজ্য ডিওপিটিকে এই বিষয়ে চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এমনকি বিজেপির সঙ্গে জোটে আছে এমন রাজ্যও এই বিষয়ে ডিওপিটিকে চিঠি লিখে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
অফিসারের অভাব রয়েছে
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের অল ইন্ডিয়া সার্ভিস র্যাংকের অফিসারের অভাব রয়েছে। মুলত সেই কারনে ডিওপিটি (DoPT)-এর তরফে রাজ্যগুলিকে এই চিঠি দেওয়া হয়। ডিওপিটির তরফে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রের প্রয়োজন মতো আধিকারিকের জোগান দিচ্ছে না রাজ্যগুলি। ফলে কেন্দ্রে সরকার চালানোর জন্যে যে পরিমান অফিসারের প্রয়োজন তা পুরণ হচ্ছে না।
তিনটি চিঠি ডিওপিটির
ডিওপিটি এর আগে পরপর তিনরাব রাজ্যগুলিকে চিঠি পাঠায়। গত বছরের শেষে ২০ এবং ২৭ ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের শুরুতে অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি এই চিঠিগুলি রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়। এরপর ছয় রাজ্যের তরফে বিরোধিতা করা হয়। বাকি রাজ্যগুলি কোনও জবাব দেয়নি।
২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যগুলির জবাব দেওয়ার জন্যে সময় দেওয়া হয়েছে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যদি রাজ্যগুলি কোনও উত্তর না দেয় তাহলে কেন্দ্র প্রথমে রিমাইন্ডার দেবে। এরপর গ্যাজেট অফ ইন্ডিয়াতে নতুন নিয়ম নিয়ে আসবে।
কি বলছে রাজ্যগুলি?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি চিঠি দিয়েছে। সেখানে তিনি লিখেছেন, সংশোধনীর পরিবর্তিত খসড়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর চরম পরিপন্থী। শুধু তাই নয়, এই খসড়া অনেক বেশি আমলাদের ক্ষতি করবে বলেও মনে করছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
এমনকি এই পদক্ষেপ আমলাদের কাজের ক্ষতি করবে বলেও মনে করছেন তিনি। ফলে সবদিক থেকেই বিষয়টি আরও একবার প্রধানমন্ত্রীকে ভেবে দেখার কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেরলের আইনমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ক্যাডার আইনের বিরোধিতা করছে সে রাজ্যের সরকার। তাঁর দাবি, সংবিধান রাজ্যগুলিকে যে অধিকার দেয় তা সরানোর জন্যেই এই নতুন সংশোধনীর প্রস্তাব। কেন্দ্রের হাতে সমস্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়ার এই প্রস্তাবে বিরোধীতা করছে কেরল সরকার। দ্রুত এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়ছেন আইনমন্ত্রী।
অন্যদিকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এন কে স্তালিনও এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছেন। এবং তাঁকে সমর্থন করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
আইনে চারটি সংশোধনী আনা হয়েছে?
আইনে চারটি সংশোধনী আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি স্টেট ক্যাডার অফিসারকে কেন্দ্রের নির্দেশের মতো পোস্টিং না দেওয়া হয় তাহলে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া দিনের মধ্যে দিন থেকে। এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের কাছ থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হত অফিসারকে। এবার আর এর প্রয়োজন পড়বে না। যদি কোনও ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মতের অমিল হয় তাহলে অফিসারকে পোস্টিং দেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রই।