অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নিরাপদ নয় ৫৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য, জানুন কারণ
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নিরাপদ নয় ৫৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য, জানুন কারণ
টিকাকরণের পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় ইউরোপের বেশ কিছু দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার বাতিল করে দিয়েছিল সেই দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ। এবার কানাডাতেই অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার বন্ধ করা হল। কানাডার ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কমিটি অন ইমিউনিজেশন (ন্যাসি) ৫৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য এই অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ব্যবহার স্থগিত করা হয়েছে।
৫৫ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা নয়
কমিটি জানিয়েছে যে ভ্যাকসিন সম্পর্কিত কোনও ধরণের প্রতিকূল ঘটনার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত ৫৫ বছর বয়সের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। তবে ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ব্যবহারের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই কানাডায়। কমিটি জানিয়েছে যে ৫৫ বছরের নীচে কম বয়সীদের মধ্যে প্রতিকূল ঘটনা বেশি ঘটতে দেখা যায়। বিগত কয়েক সপ্তাহে বেশ কিছু ইউরোপের দেশ সাময়িক কালের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার স্থগিত রেখেছিল, কারণ টিকাকরণের পর রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা সামনে এসেছিল। যদিও হু জানিয়েছিল যে ভ্যাকসিনের ব্যবহার যেন বন্ধ না করা হয়।
থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া বা ভিআইপিআইটি
এক বিবৃতিতে কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ বলে, 'কানাডা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার স্থগিত করেছে কিছু প্রতিকূল ঘটনাকে সামনে রেখে যা ভ্যাকসিন-ইনডিউসেড প্রথরোমবোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া বা ভিআইপিআইটি নামে পরিচিত। থ্রম্বোসিস এবং থ্রম্বোসাইটোপেনিয়ার সংমিশ্রণ, রক্তক্ষরণ সহ কিছু প্রতিকূলতা যা আস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকাকরণের পর খুব বিরল দেখা যায়।' এই প্রতিকূল পরিস্থিতি খুবই বিরল এবং এতে গুরুতরভাবে রক্ত জমাট বাঁধে। এটা হওয়ার কারণ হল ভিআইপিআইটি অ্যান্টিবডির সঙ্গে যুক্ত যা সক্রিয় প্লেটলেটস তৈরি করতে পারে, যা এর পরে রক্ত জমাট গঠনে উদ্দীপিত হয় এবং ফলস্বরূপ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া হয়।
থ্রম্বোসাইটোপেনিয়ার উপসর্গ
এই পরিস্থিতির উপসর্গ হল শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট, বুকে ব্যাথা, পা ফুলে যাওয়া, পেটে ব্যাথা, মাথা ব্যাথা বা চোখের দৃষ্টি কমে যাওযার মতো স্নায়বিক লক্ষণ, ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি বা ত্বকের নির্দিষ্ট জায়গা লাল হয়ে গোল ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ভিআইপিআইটি প্রাথমিকভাবে ৫৫ বছরের বয়সের অন্তর্গত মহিলাদের মধ্যে দেখা গিয়েছে এবং ন্যাসি এটি পর্যবেক্ষণ করছে। যদিও পুরুষদের মধ্যেই এই প্পতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর এসেছে। এই ঘটনা ভ্যাকসিন নেওয়ার ৪ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন দায়ি প্রমাণিত নয়
এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে ভিআইপিআইটির জন্য ভ্যাকসিন দায়ি এবং ন্যাসি জানিয়েছে যে প্রতিকূল ঘটনাগুলি কখনই এমআরএনএ ভ্যাকসিনের সঙ্গে কখনই যুক্ত নয়। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন এমআরএনএ ভ্যাকসিন নয়। এই ভ্যাকসিন শরীরের কোষকে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন সম্পর্কে কোষগুলিকে অবহিত করে। এরপর দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য, যাতে ভাইরাসের সঙ্গে তা লড়তে পারে।